Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পদ্ম কাটতে পার্থ চান ধারালো কাস্তে হাতুড়ি

কোনও রাখঢাক না রেখেই এ দিন তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের একটু চাঙ্গা হওয়া দরকার, আরও ভাল ভাবে কাজ করতে বলছি সিপিএমের ক্যাডারদের।’’

কৃষ্ণনগরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র

কৃষ্ণনগরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:০৫
Share: Save:

আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি ঠেকানোই যে তাদের পাখির চোখ, রবিবার কৃষ্ণনগরে দলীয় কর্মীসভা সেরে সে কথাই কবুল করলেন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর, সেই যুদ্ধে, পদ্ম-বিজয় ঠেকাতে সিপিএমকেও পরোক্ষে পাশে চাইছেন তিনি।

কোনও রাখঢাক না রেখেই এ দিন তিনি বলেন, ‘‘সিপিএমের একটু চাঙ্গা হওয়া দরকার, আরও ভাল ভাবে কাজ করতে বলছি সিপিএমের ক্যাডারদের।’’ সঙ্গে জুড়ে দিচ্ছেন কিঞ্চিৎ শ্লেষ, ‘‘সাহস হচ্ছে না বলে সিপিএমের বন্ধুরা যে লোটা কম্বল নিয়ে বিজেপির পিছনে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন, সেটা বন্ধ করলে দেখবেন, বিজেপি আর নেই। পদ্ম তো দূরের কথা এ বাংলায় কুঁড়িও ফোটাতে পারবে না।”

তবে, বিজেপি ঠেকানোর পাশাপাশি, দলীয় কর্মীদের ‘ঔদ্ধত্য’ এবং ‘স্বচ্ছ’ ভাবমূর্তিও যে দরকার, সতর্ক করেছেন সে ব্যাপারেও। সচেতন থাকতে বলেছেন, নির্বাচনে বাহুবলির ব্যবহারে মানুষ যেন অতিষ্ট না হয়ে, সে দিকে খেয়াল রাখতে। তিনি জানান, গায়ের জোরে নয়, ভোট করে জিতে আসতে হবে। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক জায়গায় ভোট হবে না। করতে দেবে না কেউ কেউ। কিন্তু সেটা দলের পক্ষে ভালো হবে না। মনে রাখবেন দলের পক্ষে তা ক্ষতিকর।”

গত পুরসভা কিংবা পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের ‘বিরোধী শূন্য’ নির্বাচন করার চেষ্টা যে মানুষ ভাল মনে নেয়নি, দলনেত্রী তা আগেই জানিয়েছিলেন। এ বার সে বার্তাই জেলায় দেলায় বয়ে বেড়াচ্ছেন দলের শীর্ষ নেতারা।

দলীয় সূত্রে খবর, শুধু পঞ্চায়েত নয়, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে তৃণমূল। আর সে জন্যই পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোনও কুপ্রভাব যাতে পরের লোকসভা ভোটে না পড়ে, সে জন্যই এই সতর্কতা।

এদিন পার্থবাবু মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষায় তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রশ্নপত্র বিক্রি করা নিয়ে শিক্ষক সংগঠের নেতাদেরও ধমক দিয়েছেন এক চোট। স্পষ্ট জানিয়েছেন, এর পরে এই ধরণের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলে তাদের দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ছাত্র নেতাদেরও পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, বহিরাগত কেউ যেন কলেজে না ঢোকে। সেই সঙ্গে তিনি যে কলেজে কলেজে অধ্যক্ষ নিগ্রহের ঘটনায় যথেষ্ট বিব্রত মনে করিয়ে দিয়েছেন তা-ও।

তবে, বৈঠকে সদ্য দলত্যাগী মুকুল রায়কেও বিঁধতে ছাড়েননি তিনি। পার্থ বলেন, “স্বয়ং নেতাজি কংগ্রেস ছেড়ে বেড়িয়ে গিয়েও কিছু করতে পারেননি। আর উনি কোন পেঁয়াজি।” তবে, সতর্ক করে দিয়েছেন, দলের কেউ মুকুলের সঙ্গে যোগযোগ রাখলে তাঁকেও দল থেকে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE