Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সিগন্যাল বিকল, ফের ভোগান্তি

রেল সূত্রের খবর, এদিন বিকেল চারটে নাগাদ কাঁকুড়গাছির কাছে সব লাইনের সিগন্যাল খারাপ হয়ে পয়েন্ট ক্রসিং আটকে যায়। এর জেরেই ট্রেন চলাচলে বিপত্তির শুরু। অবস্থা এতটাই খারাপ হয় যে কারশেড থেকে খালি রেকগুলিকে প্ল্যাটফর্মে আনা যায়নি।

দুর্ভোগ: শিয়ালদহ স্টেশনে আটকে পড়েছেন যাত্রীরা। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

দুর্ভোগ: শিয়ালদহ স্টেশনে আটকে পড়েছেন যাত্রীরা। বুধবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০৪:৫৪
Share: Save:

এই সপ্তাহেই খাতায়-কলমে কাজকর্মের মান ভাল বলে জেনারেল ম্যানেজারের বাহবা কুড়িয়েছেন শিয়ালদহ ডিভিশনের কর্তারা। সেটি রেলের প্রচারেও এসেছে। কিন্তু বাস্তবে ওই ‘ভাল’ কাজ কতটা হয়েছে সোমবারের পরে বুধবার ট্রেন বন্ধ হওয়ার ঘটনায় সেই নিয়েই প্রশ্ন উঠল।

সোমবার সন্ধ্যায় ঘণ্টা খানেকের বৃষ্টিতে বেলঘরিয়া থেকে কাঁকিনাড়া পর্যন্ত সিগন্যাল বিকল হয়ে যাওয়ায় ২৫ মিনিটের দূরত্ব যেতে সময় লেগেছিল সাড়ে তিন ঘণ্টা। বুধবার সন্ধ্যায় ফের সিগন্যালে গোলমাল হওয়ায় ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটল।

রেল সূত্রের খবর, এদিন বিকেল চারটে নাগাদ কাঁকুড়গাছির কাছে সব লাইনের সিগন্যাল খারাপ হয়ে পয়েন্ট ক্রসিং আটকে যায়। এর জেরেই ট্রেন চলাচলে বিপত্তির শুরু। অবস্থা এতটাই খারাপ হয় যে কারশেড থেকে খালি রেকগুলিকে প্ল্যাটফর্মে আনা যায়নি।

তিন ঘণ্টাতেও মেরামতি শেষ করতে পারেননি রেলকর্মীরা। আংশিক মেরামতি করে একটি লাইন দিয়ে কোনও রকমে ট্রেন চালানো শুরু হয়। কিন্তু সিগন্যাল না থাকায় হাতে হাতে ‘পেপার ক্লিয়ারেন্স’ দিয়ে ট্রেন চালাতে গিয়ে প্রতিটি ট্রেনই অতিরিক্ত ২৫-৩০ মিনিট করে সময় নেয়। তাতেই‌ তৈরি হয় ট্রেনের জট।

শিয়ালদহের ব্যস্ত সময় শুরু বিকেল চারটে থেকে। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকায় ওই ভিড় ক্রমেই বাড়তে শুরু করে। একই অবস্থা হয় শহরতলির অন্যান্য স্টেশনেও। সোমবার ট্রেন আটকে ছিল শুধু মেন লাইনে। এই দিন মেন লাইনের পাশাপাশি বনগাঁ, ডানকুনির ট্রেনও আটকে যায়। সব লাইন আটকে যাওয়ায় দাঁড়িয়ে পড়ে শিয়ালদহ-নয়াদিল্লি রাজধানীও। রাত পর্যন্ত এই গন্ডগোলে চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হন অসংখ্য যাত্রী।

রাত পর্যন্ত শিয়ালদহ প্ল্যাটফর্মে থিক থিকে ভিড় ছিল। অনেকেই এ দিন সড়ক পথে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ট্যাক্সি, অ্যাপ-ক্যাবও সুযোগ বুঝে চার গুণ দাম হাঁকে। শিয়ালদহ থেকে সোদপুরের ভাড়া হাজার টাকাও দিতে হয়েছে এ দিন।

সোমবার ও বুধবারের এই চূড়ান্ত দুর্ভোগের পরে যাত্রীরা প্রশ্ন তুলেছেন, এর পরেও কি জেনারেল ম্যানেজার শিয়ালদহ ডিভিশনের কাজে সন্তুষ্ট থাকবেন?

কিন্তু রেল কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, এই দু’দিনই রেলের রক্ষণাবেক্ষণে গোলমালের জেরেই সিগন্যালের ওই যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছে। এক কর্তার দাবি, ‘‘শিয়ালদহ ডিভিশনে দেখভালের অভাবে রক্ষণাবেক্ষণ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ডিভিশনের উচ্চপদস্থ কর্তাদের অনেকেরই গা-ছাড়া ভাব। সারা দিন ট্রেন চললেও কর্তাদের অনেকে দশটা-পাঁচটা ডিউটি করেন। সকাল বা রাতের ব্যস্ত সময়ে কন্ট্রোলে বসে ট্রেন চলাচল কেমন হচ্ছে, সেটাও কেউ দেখতে চান না। ফলে ট্রেন চলছে আপন খেয়ালে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE