Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভাঁড়ার বাড়ন্ত, টান পড়ছে পাতে

কোথায় একটু আনাজ পাওয়া যায়, তার জন্য এখনই পাহাড়ের গ্রাম গঞ্জে ঘুরছেন বিমল ডারনাল, কুমার প্রধানেরা। সকালে চার কিলোমিটার হেঁটে কিছু লাল শাক জোগাড় করেছেন। বিকেলে পেয়েছেন কিছু টোম্যাটো।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৭ ০৩:৪৭
Share: Save:

সব মিলিয়ে বড় জোর আর দিন দশেক। তারপরে পাহাড়ে সঞ্চিত খাদ্য ফুরিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। অথচ, তার মধ্যেই অনির্দিষ্ট কালের বন্‌ধ জারি থাকায় চিন্তায় পড়েছেন পাহাড়ের সাধারণ মানুষ। খাদ্যশস্য বোঝাই ট্রাক উঠতে দিচ্ছেন না বন্‌ধ সমর্থকরা। তাই পাহাড়ে বেশিরভাগ পরিবারেই পাতে পদের সংখ্যা কমছে। খাবারের পরিমাণও কমছে। ভবিষ্যতের জন্য যতটা সম্ভব সঞ্চয় করছেন তাঁরা।

কোথায় একটু আনাজ পাওয়া যায়, তার জন্য এখনই পাহাড়ের গ্রাম গঞ্জে ঘুরছেন বিমল ডারনাল, কুমার প্রধানেরা। সকালে চার কিলোমিটার হেঁটে কিছু লাল শাক জোগাড় করেছেন। বিকেলে পেয়েছেন কিছু টোম্যাটো। প্রায় ন’দিন ধরে পাহাড়ে রেশনের চাল-আটা বিলি বন্ধ। এখন অন্ত্যোদয় অন্নপূর্ণা যোজনায় পাহাড়ের পরিবার পিছু মাসে ২ টাকা দরে ৫৫ কেজি করে চাল-আটা দেওয়া হয়। সমতলের চেয়ে ২০ কেজি করে বেশি। প্রতি মাসে সাড়ে ৯ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য পাহাড়ে রেশন দিতে প্রয়োজন হয়। তা বন্ধ থাকায় এমনিতেই খাবারে টান পড়েছে।

আরও পড়ুন: বিদেশেও মমতার মন পড়ে পাহাড়ে

খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে এক এক বারে যে রেশন সামগ্রী পাঠানো হয়, তাতে ১৫ দিন বিলি বণ্টন হয়। শেষবারের রেশন পৌঁছনোর সাত দিনের মাথায় বন্‌ধ ডাকা হয়েছে। খাদ্য দফতরের হিসেবে পাহাড়ে এখন প্রায় ৪ হাজার মেট্রিক টনের কাছাকাছি খাদ্যশস্য মজুত থাকার কথা। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, পাহাড়ের সরকারি গুদামে যত চাল, আটা মজুত রয়েছে তা দিয়ে আর ৮ দিন চলতে পারে। বেসরকারি গুদাম এবং বাড়িতে সঞ্চিত আটা থেকে আনাজে চলবে আরও কয়েকটা দিন। তারপরে কী হবে? সেই সঙ্গে, সর্বজিৎ সিংহ, জয়রামজি সিংহের মতো পাহাড়বাসীর কথায় শুধু আটা বা চাল পেলে তো হবে না। ডিম, মাংস এ সব তাঁরা পাবেন কোথায়?

পাহাড়ের গ্রাম শহরে প্রতি রাতেই পাড়ার কয়েকটি মুদি দোকান অবশ্য খুলছে। সন্ধের পরে বেশ কিছু বেসরকারি গুদাম এমনকী রেশন ডিলারদের ঘর থেকেও চাল আটা বের হচ্ছে বলে দাবি। এ ছাড়াও মোর্চা নেতাদের অনেকেই আগেভাগেই চাল-ডাল-ডিম এবং স্থানীয় ভাবে তৈরি চাউমিনের প্যাকেট মজুত করে রেখেছেন বলে সূত্রের খবর। তা দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কিছুটা চলছে। কিন্তু স্থানীয় ভাবে যাঁরা মুরগি পোষেন বা আনাজ ফলান, তাঁদের ভাণ্ডারও শেষের পথে। তাই খাবারের সমস্যা বড় আকারই নিতে চলেছে বলে আশঙ্কা।

পরিস্থিতি সামলাতে পরের সপ্তাহের মাঝামাঝি বন্‌ধ শিথিল করা হতে পারে বলে মোর্চা সূত্রে খবর। তবে রাজ্য জানিয়ে দিয়েছে, পাহাড়বাসীর এই সমস্যায় নবান্ন হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE