Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

‘বাণ’ কাটাতে ৫০ হাজার, জ্যোতিষীর পুত্র ধৃত

বিজ্ঞাপনের ফাঁদেই পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের এক জন জ্যোতিষীকে দু’দফায় ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের এক মহিলা ও তাঁর আত্মীয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৪
Share: Save:

রাস্তার মোড়ে হোর্ডিং থেকে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন — ‘যে কোনও অসুখ থেকে পারিবারিক বিবাদ, তন্ত্র মতে গ্যারান্টি দিয়ে সব সমস্যার সমাধান করা হয়।’

এমন বিজ্ঞাপনের ফাঁদেই পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের এক জন জ্যোতিষীকে দু’দফায় ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন নন্দীগ্রামের এক মহিলা ও তাঁর আত্মীয়। কথামতো কাজ না হওয়ায় টাকা ফেরত চান ওই মহিলা। কিন্তু টাকা তো মেলেইনি, উল্টে বাবার হয়ে কোমর বেঁধে আসরে নামে ছেলে। সেই জ্যোতিষী-পুত্র প্রতারিত ওই মহিলাকে মারধর, শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় রবিবার নন্দকুমার থেকে অভিযুক্ত শেখ বরাজাহানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বাবা শেখ শাজাহান পলাতক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চণ্ডীপুরের বাটনানের বাসিন্দা শেখ শাজাহান এবং তাঁর ছেলে বরাজাহান জ্যোতিষী পরিচয় দিয়ে অনেক দিন ধরেই কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন। চণ্ডীপুর বাজার ছাড়াও মেচেদা ও হলদিয়ায় তাঁদের চেম্বার রয়েছে। হোটেলের ঘর ভাড়া নিয়েই চলছিল লোক ঠকানো। মাস পাঁচেক আগে চণ্ডীপুর বাজারের কাছে এমনই এক হোটেলের ঘরে শাজাহানের কাছে যান নন্দীগ্রামের ওই মহিলা। আত্মীয় বছর পঁয়তাল্লিশের এক ব্যক্তির দীর্ঘ অসুস্থতা সারাতে তাঁকে নিয়েই হাজির হয়েছিলেন তিনি।

মহিলা জানিয়েছেন, কলকাতার শ্যামবাজারের বাসিন্দা তাঁর আত্মীয়ের হস্তরেখা দেখে শাজাহান সে দিন নিদান হেঁকেছিলেন, ‘বাণ’ মারার জন্যই এই রোগভোগ। আর ‘বাণ’ কাটাতে ৪৪ হাজার টাকা লাগবে। তবে শেষ পর্যন্ত ৪০ হাজারে রফা হয়। রোগ সারাতে না পারলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে লিখিত চুক্তিও হয়।

মহিলা বলছিলেন, ‘‘জ্যোতিষীর কথা মেনে তুকতাকের পরেও আমার আত্মীয়ের অসুখ কমেনি। শাজাহান তখন বলেন, পশু বলি দিতে হবে। আর সে জন্য লাগবে ১০ হাজার টাকা।’’ তবে সেই টাকা দিয়েও রোগ সারেনি। টাকাও ফেরত মেলেনি। শেষে শনিবার ফোনে মহিলাকে জ্যোতিষী জানান, রবিবার সকালে নন্দকুমারের শ্রীধরপুরে এলে টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

সেই মতো এ দিন ওই জায়গায় পৌঁছলে মহিলাকে মারধর ও শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত বরাজাহানকে স্থানীয়রাই ধরে পুলিশে দেন। এত কিছুর পরে মহিলার স্বীকারোক্তি, ‘‘জ্যোতিষীর চক্করে পড়ে কত বড় ভুল করেছিলাম তা বুঝেছি।’’ এখন টাকা ফেরতের অপেক্ষায় তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE