জালে: গুলিতে জখম দুষ্কৃতী। —নিজস্ব চিত্র।
মালিককে খুরের ঘায়ে জখম করে বেশ কয়েক ভরি সোনার গয়না এবং রুপোর বাট নিয়ে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। বুধবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর ডাকাতির ওই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য দুষ্কৃতীদের নাগাল পেয়ে গেল পুলিশ। বুধবার রাতে অভিযানের সময় দুষ্কৃতীদের সঙ্গে পুলিশের গুলির লড়াইও চলে। জয়প্রকাশ রাও নামে এক দুষ্কৃতী গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনায় অল্পবিস্তর জখম হয়েছেন দুই ভিলেজ পুলিশও।
গত বছর একই কায়দায় জেলার গড়বেতায় এক সোনার দোকানের মালিককে খুন করে লুঠপাট চালিয়েছিল ডাকাত দল। তখন দুষ্কৃতীদের ধরতে বেগ পেতে হয়েছিল পুলিশকে। তাই কালীপুজোর আগের সন্ধ্যায় ডাকাতির খবর পেয়েই দাসপুরে আসেন পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ। তাঁর নজরদারিতেই অভিযান চলে। পুলিশ সুপার বলেন, “দলটিতে মোট ন’জন ছিল। আমরা পুরো দলটিকেই চিহ্নিত করে ফেলেছি। একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে লিঙ্কম্যানকেও। দু’-একদিনের মধ্যে সবাই ধরা পড়বে।” পুলিশ সুপার জানান, দুষ্কৃতীদের তিনজন স্থানীয় এবং বাকিরা বিহার, উত্তরপ্রদেশের বসিন্দা। দুষ্কৃতীরা খড়্গপুরের বড় চক্রের সঙ্গেও যুক্ত। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযানে একাধিক পিস্তল, দেশি বন্দুক এবং কয়েক রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে। পাওয়া গিয়েছে একাধিক মোবাইল ও সিমকার্ডও। তবে দাসপুরের সোনার দোকান থেকে খোওয়া যাওয়া জিনিসের হদিস মেলেনি।
দাসপুর থানার খুকুড়দহের লক্ষ্মীবাজারের সোনার দোকানটিতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে বুধবার ভরসন্ধ্যায়। দোকানে তখন ছিলেন মালিক দেবাশিস সামন্ত এবং তাঁর ভাগ্নে পবিত্র জানা। জানা গিয়েছে, তিনটি বাইকে এসেছিল ৯ জন দুষ্কৃতী। প্রথমে দু’জন দুষ্কৃতী দোকানের ভিতরে ঢোকে। তারপর দেবাশিসবাবুকে বন্দুক দেখিয়ে ভল্টের চাবি চায়। দেবাশিসবাবু চাবি না দেওয়ায় বন্দুকের বাঁট দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে দুষ্কৃতীরা। গুলিও চালায়। তবে কারও গায়ে লাগেনি। পরে আরও দু’জন ভেতরে ঢুকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ এবং হার্ড ডিস্ক নিয়ে নেয়। এরপরই খুর দিয়ে দেবাশিসবাবুর বাঁ কাঁধে কোপ মারা হয়। মারধর করা হয় পবিত্রকেও। আধঘন্টার ‘অপারেশনে’ ৬০০ গ্রাম সোনার গয়না এবং কয়েক কিলো রুপোর বাঁট খোওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ। দেবাশিসবাবু এখন সুস্থ। তিনি বলেন, “ধনতেরসের জন্য ভাল পরিমাণ সোনা মজুত ছিল। বড় লোকসান হয়ে গেল।”
খবর পেয়েই পৌঁছন ঘাটালের এসডিপিও বিবেক বর্মা ও ওসি প্রদীপ রথ। পুলিশ সূত্রের খবর, দুষ্কৃতীরা তখন খুকুড়দহের নদীবাঁধ হয়ে ধানখালের দিকে পালাচ্ছিল। দুই ভিলেজ পুলিশ আশিস বেরা এবং গৌতম সামন্ত দুষ্কৃতীদের পিছু নেন। ততক্ষণে তারা ডেবরার মলিহাটির দিকে পালিয়েছে। তবে জেলা পুলিশের দল তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। তারপর ধানখাল ও পাঁশকুড়ার পাটনা গ্রামের মাঝে ফাঁকা মাঠে দু’পক্ষের গুলির লড়াই চলে। সঙ্গীদের ছোড়া গুলিতেই বিহারের ছাতরার বাসিন্দা জয়প্রকাশ জখম হয়। আর বাকিরা বাইক, ব্যাগ, বন্দুক ফেলে চম্পট দেয়। জখম জয়প্রকাশ কলকাতায় চিকিৎসাধীন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy