—ফাইল চিত্র।
জমি আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশকে তিন ঘণ্টা সময় দিয়েছিলেন অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডল। পুলিশ না পারলে নিজেই ‘তাণ্ডবলীলা খেলে’ দেবেন বলেও হুমকি দিয়েছিলেন। সেই হুমকির পর তিরিশ ঘণ্টা কেটে গেলেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি, ‘তাণ্ডবলীলা খেলতে’ শিবপুরমুখো হননি কেষ্টও।
তবে বুধবারের ওই ঘটনা সামনে আসার পর ঢি ঢি পড়েছে রাজ্য জুড়ে। অনুব্রত প্রকাশ্যে ডিএসপি-কে শাসানোয় নিচুতলার পুলিশের বড় অংশ ক্ষুব্ধ। বীরভূম পুলিশের একাংশ জানিয়েছেন, উপরতলা থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলে সমস্ত তাণ্ডব থামিয়ে দিতে বেশিক্ষণ লাগবে না। পরিস্থিতি বুঝে এ দিন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দল অনুব্রতর বক্তব্য অনুমোদন করে না। বীরভূমের পর্যবেক্ষক ফিরহাদ হাকিমকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। দুঃখের সঙ্গে বলছি, ওঁর শব্দচয়ন মার্জিত হয়নি।’’
আর বীরভূমের এসপি নীলকান্তম সুধীরকুমার বলেন, ‘‘কে, কী বলেছেন, কী প্রসঙ্গে বলেছেন— সব খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’ তবে কী পদক্ষেপ, ভাঙেননি তিনি। কেষ্টর রোষানলে পড়া ডিএসপি কাশীনাথ মিস্ত্রি কি মামলা করবেন? তিনিও চুপ। এসপি জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, গ্রেফতার করার মতো কিছুই হয়নি। কেষ্টও সুর নামিয়ে বলেছেন, ‘‘পুলিশকে অপমান করব কেন! অপরাধীদের ধরতে বলেছিলাম।’’
বুধবার জমি আন্দোলনকারীদের সভা ঘিরে তেতে উঠেছিল বোলপুরের সাবিরগঞ্জ। তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে মারপিট হয় তাদের। সভায় যেতে দেওয়া হয়নি কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান, বাম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে। তার পর এলাকায় গিয়ে অনুব্রত ডিএসপি-কে হুমকি দেন।
জেলা পুলিশের বিভিন্ন স্তরের কর্মীরা জানিয়েছেন, কেষ্টর আচরণে তাঁরা অপমানিত হয়েছেন। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কেষ্টই পুলিশকে বোমা মারতে বলেছিলেন। তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা যুব সভাপতি সুদীপ্ত ঘোষের বিরুদ্ধে বোলপুর থানায় ঢুকে কর্তব্যরত পুলিশকে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল।
এই ঘটনাগুলিতে অনুব্রত ও সুদীপ্তের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। অনুব্রত রেহাই পেলেও, সুদীপ্তের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। পুলিশ সূত্রের দাবি, বুধবার কেষ্ট যা বলেছেন, তাতে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মীকে কর্তব্য পালনে বাধা দেওয়া, হুমকি দেওয়ার মামলা করা যেতে পারে। শুধু নবান্নের সঙ্কেতের অপেক্ষা।
সেই সঙ্কেত কি আসবে? আব্দুল মান্নানের মতে, ‘‘কিছুই হওয়ার নয়।’’ শুনে পার্থবাবু বলেন, ‘‘যাঁরা ঘটা করে গিয়েছিলেন, তাঁদের তো বাম আমলে কৃষক আন্দোলনে দেখা যায়নি। এখন অভিনয় করতে যাচ্ছেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy