Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধ ঘরে মায়ের দেহ নিয়ে বসে ছোট ছেলে

শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের রবীন্দ্রনগরে সুনন্দা নন্দীর (৬২) দেহ উদ্ধারের পরে নিউটাউনশিপ থানার পুলিশের অনুমান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে দিন তিনেক আগে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সময় ও কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। বৃদ্ধার ছোট ছেলে, বছর তেত্রিশের ইন্দ্রদীপ পুলিশকে জানান, তাঁর মা দিন তিনেক তাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন না। অনেক ডাকাতেও সাড়া না পেয়ে, তিনি মা-কে আর ডাকেননি।

দুর্গাপুরে এই বাড়িতেই মিলেছে মৃতদেহ। নিজস্ব চিত্র

দুর্গাপুরে এই বাড়িতেই মিলেছে মৃতদেহ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:০৭
Share: Save:

সকাল থেকেই দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল এলাকায়। বিকেলে তা মাত্রা ছাড়ায়। খোঁজাখুঁজি করে বাসিন্দারা বোঝেন, দুর্গন্ধ আসছে একটি বাড়ির দোতলা থেকে। সেখানে গিয়ে তাঁরা দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছে ওই বাড়ির ভাড়াটে বৃদ্ধার মৃতদেহ। ঘর বন্ধ করে মৃতদেহের সঙ্গেই ছিলেন বৃদ্ধার ছোট ছেলে। তবে পুলিশের ধারণা, তাঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে।

শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের রবীন্দ্রনগরে সুনন্দা নন্দীর (৬২) দেহ উদ্ধারের পরে নিউটাউনশিপ থানার পুলিশের অনুমান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে দিন তিনেক আগে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সময় ও কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। বৃদ্ধার ছোট ছেলে, বছর তেত্রিশের ইন্দ্রদীপ পুলিশকে জানান, তাঁর মা দিন তিনেক তাঁর সঙ্গে কথা বলছিলেন না। অনেক ডাকাতেও সাড়া না পেয়ে, তিনি মা-কে আর ডাকেননি।

স্থানীয় সূত্রের খবর, বেসরকারি সংস্থার প্রাক্তন কর্মী স্বামীর মৃত্যুর পরে দুর্গাপুরে নিজেদের বাড়ি বিক্রি করে দেন সুনন্দাদেবী। ইন্দ্রদীপকে নিয়ে রবীন্দ্রনগরের নিউমার্কেট এলাকায় একটি বাড়ির দোতলায় ভাড়া থাকছিলেন বছর তিনেক। বড় ছেলে ইন্দ্রনীল পরিবার নিয়ে থাকেন এলাকারই অন্য একটি বাড়িতে। ইন্দ্রদীপ একটি জিমে কাজ করেন। প্রতিবেশীরা জানান, পাড়ায় বিশেষ মেলামেশা করত না পরিবারটি।

বাড়িটির মালিক প্রণব সরকার থাকেন একতলায়। তিনি বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে বাড়িতে ইঁদুর মারার বিষ দিয়েছিলাম। শুক্রবার সকালে দুর্গন্ধ পেয়ে মনে করি, ইঁদুর মরেছে। কিন্তু দোতলায় এমন ঘটেছে, ভাবতেই পারিনি!’’ তিনি জানান, সাধারণত খাবার জল নিতে প্রতিদিনই দোতলা থেকে নীচে নামেন ইন্দ্রদীপ। গত কয়েকদিনেও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু সুনন্দাদেবীর ব্যাপারে তিনি কাউকে কিছু বলেননি।

মায়ের মৃত্যুর খবর কেন জানাননি, পড়শিরা সে প্রশ্ন করলে চুপ করে ছিলেন ইন্দ্রদীপ। জবাব না দিয়ে তিনি রাতের রান্নার জন্য আনাজ কাটতে শুরু করেন। ইন্দ্রনীল জানান, তাঁর ভাইয়ের মানসিক সমস্যা রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘গত রবিবারই মা, ভাইকে দেখতে এসেছিলাম। মা তখন বলেছিলেন, শরীর সামান্য খারাপ। কিন্তু এমন হতে পারে, ভাবিনি!’’ শনিবার বিকেলে বীরভানপুর শ্মশানে সুনন্দাদেবীকে দাহ করা হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE