অনুমোদন বাতিলের নির্দেশে বিপাকে পড়ে গিয়েছিল পুলিশের বিভিন্ন সংগঠন। অবশেষে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের তিনটি সংগঠনের কাজকর্মের উপরে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চ। হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছে পুলিশের সংগঠন।
ডিভিশন বেঞ্চ সোমবার জানিয়ে দিয়েছে, আদালত পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে। এর ফলে রাজ্যের পুলিশ সংগঠনগুলির স্বাভাবিক কাজকর্ম চালু রাখতে আপাতত আর কোনও অসুবিধা হবে না বলে মনে করছেন হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশ।
পুলিশের একটি সংগঠনের পক্ষে আইনজীবী গোরাচাঁদ রায়চৌধুরী জানান, রাজ্য পুলিশের দু’টি এবং কলকাতা পুলিশের একটি সংগঠনের অনুমতি বাতিল করার জন্য রাজ্যের বর্তমান শাসক পক্ষ ২০১২ সালের ১০ জানুয়ারি একটি প্রস্তাব নেয়। তার পরেই পুলিশ সংগঠনগুলির অনুমোদন বাতিলের নির্দেশ জারি করেন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব জি ডি গৌতম। সেই প্রস্তাব ও নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে তিনটি সংগঠন।
ওই বছরই মামলার শুনানি শুরু হয় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের আদালতে। বিচারপতি দত্ত পুলিশ সংগঠনগুলির অনুমোদন বাতিলের প্রস্তাব খারিজের নির্দেশ দেন। তিনি তাঁর রায়ে জানান, মন্ত্রিসভার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছাড়াই একতরফা ভাবে ওই প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে। এবং অনুমোদন বাতিলের ব্যাপারে সংগঠনগুলিকে কারণ দর্শানোর কোনও নোটিসও দেওয়া হয়নি।
বিচারপতি দত্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অরুণ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। ওই ডিভিশন বেঞ্চ সংগঠনগুলির কাজকর্মের উপরে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়।
আইনজীবী গোরাচাঁদবাবু জানান, তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ স্থিতাবস্থা রাখার নির্দেশ দিলেও কত দিন তা বজায় থাকবে, সেই ব্যাপারে নির্দিষ্ট কিছু জানায়নি। সংগঠনের নেতারা এ দিন অভিযোগ করেন, কোর্টের নির্দেশে সময়সীমা নির্দিষ্ট করা ছিল না এবং তারই সুযোগ নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সংগঠনের অফিস, বাড়ির হুকুমদখল নিতে শুরু করেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা। সংগঠনের বিভিন্ন অফিস ভাঙচুর করা হয়। ফেলে দেওয়া হয় অফিসের জিনিসপত্র।
এই অবস্থায় পুনরায় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন পুলিশ সংগঠনের নেতারা। এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল। অন্য একটি সংগঠনের আইনজীবী ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, সংগঠনের দফতর হুকুমদখল বন্ধ হয়নি। রবিবার ব্যারাকপুর পুলিশ ট্রেনিং কলেজের মধ্যে রাজ্য পুলিশের একটি সংগঠনের কার্যালয়ের দখল নিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙচুরও হয়েছে। মামলার নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত এই ব্যাপারে আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করেন ভাস্করপ্রসাদবাবু।
প্রধান বিচারপতি সব শুনে সরকারি আইনজীবীর উদ্দেশে বলেন, ‘‘মামলাটি এখনও বিচারাধীন। কী করে এই সব হচ্ছে?’’ তার পরেই ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, আদালত পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত পুলিশ সংগঠনগুলির কাজকর্মে স্থিতাবস্থা বজায় থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy