Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঝলমলে প্রেসিডেন্সি, হিন্দু হস্টেল আঁধারেই

দু’শো বছরের প্রেসিডেন্সি উৎসবে মেতেছে, পাশেই ১৩১-এর হিন্দু হস্টেল যেন এক রাশ মন খারাপ। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে সংস্কারের জন্য হিন্দু হস্টেল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজারহাটে আবাসিকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। কথা ছিল, ১১ মাসের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ করে চালু হয়ে যাবে হিন্দু হস্টেল। আজও তা হয়নি। সেজে ওঠা প্রেসিডেন্সির পাশে অন্ধকারে ডুবে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই হস্টেল।

এ ভাবেই পড়ে রয়েছে হিন্দু হস্টেল। —নিজস্ব চিত্র

এ ভাবেই পড়ে রয়েছে হিন্দু হস্টেল। —নিজস্ব চিত্র

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:১৯
Share: Save:

দু’শো বছরের প্রেসিডেন্সি উৎসবে মেতেছে, পাশেই ১৩১-এর হিন্দু হস্টেল যেন এক রাশ মন খারাপ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে সংস্কারের জন্য হিন্দু হস্টেল বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজারহাটে আবাসিকদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। কথা ছিল, ১১ মাসের মধ্যে সংস্কারের কাজ শেষ করে চালু হয়ে যাবে হিন্দু হস্টেল। আজও তা হয়নি। সেজে ওঠা প্রেসিডেন্সির পাশে অন্ধকারে ডুবে রয়েছে ঐতিহ্যবাহী এই হস্টেল।

এই মুহূর্তে দু’শো বছরের অনুষ্ঠান চলছে প্রেসিডেন্সিতে। সারা বছর ধরে এই অনুষ্ঠান চলবে। প্রথম পর্বে হাজির থেকেছেন রাষ্ট্রপতি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী থেকে বহু প্রাক্তনী। প্রেসিডেন্সির জন্য হেঁটেছে এই শহর। দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে আলোয় সেজে উঠেছে বহু ইতিহাসের সাক্ষী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

প্রাক্তনীদের মতে, প্রেসিডেন্সির কথা বললেই উঠে আসে হিন্দু হস্টেলের নাম। পড়ুয়াদের কত স্মৃতি জড়িয়ে এই হস্টেলের সঙ্গে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রেসিডেন্সিতে পা দিয়ে অনেকেই তাই উঁকি মেরেছিলেন হস্টেলের দিকে। এবং তাঁদের হতাশ হতে হয়েছে। যেমন রীতম প্রধান। প্রেসিডেন্সির ভূতত্ত্ব বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র রীতম পড়ুয়া জীবনে থাকতেন হিন্দু হস্টেলে। বহু বছর বাদে সেই পরিচিত বাড়িটা দেখে তিনি বললেন, ‘‘হিন্দু হস্টেল ছিল আমাদের দ্বিতীয় বাড়ি। অনেক দিন পর গিয়ে দেখলাম দরজা বন্ধ। খুব খারাপ লাগল।’’ ১৯৭২ ব্যাচের এক ছাত্রের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দেখে কান্না পেল। দুশো বছরে এ দিকেও নজর দিতে পারতেন কর্তৃপক্ষ।’’

প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষের দাবি, নজর তাঁরা দিতেই চেয়েছিলেন। কিন্তু বিধি বাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার বলেন, ‘‘সারাইয়ের কাজে হাত দিয়ে দেখা যায় যা ভাবা হয়েছিল, তার চেয়েও বেশি সংস্কারের প্রয়োজন। অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক করতেই হিমশিম অবস্থা। এখনও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের শংসাপত্র মেলেনি।’’

এ বারের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রচারেও হিন্দু হস্টেলকে অবিলম্বে বাসযোগ্য করে তোলার দাবি তুলেছে ছাত্র সংগঠনগুলি। ইন্ডিপেন্ডেন্টস কনসোলিডেশনের পক্ষে অর্কপাল দত্ত জানালেন, ‘‘আমাদের নির্বাচনী ইস্তাহারে হিন্দু হস্টেলকে অবিলম্বে ছাত্রদের থাকার জন্য খুলে দেওয়ার দাবি করা হচ্ছে।’’ এসএফআইয়ের অর্কপ্রভ মুখোপাধ্যায় জানান, হিন্দু হস্টেল ছাত্রদের ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি তাঁরাও করছেন।

কর্তৃপক্ষ অবশ্য অন্ধকারেই। ‘‘কবে ছাত্রদের জন্য হিন্দু হস্টেল খুলে দেওয়া যাবে, এখনও তা বলা যাচ্ছে না,’’ বলেন রেজিষ্ট্রার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hindu Hostel Presidency
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE