Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ভিড় সামলানো কোন পথে, প্রস্তুতি প্রশাসনে

আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায়। দুর্গাপুর বা আসানসোলকে বাদ দিয়ে কাঁকসাকে সভাস্থল হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে এলাকার রাজনৈতিক মহলের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়ে গ্রামের মন জয় করতেই এই সিদ্ধান্ত।

জোরকদমে: কাঁকসার রঘুনাথপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল। রবিবার চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র

জোরকদমে: কাঁকসার রঘুনাথপুরে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থল। রবিবার চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত সীট
কাঁকসা শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৪
Share: Save:

আজ, সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসায়। দুর্গাপুর বা আসানসোলকে বাদ দিয়ে কাঁকসাকে সভাস্থল হিসেবে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে এলাকার রাজনৈতিক মহলের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের দিকে তাকিয়ে গ্রামের মন জয় করতেই এই সিদ্ধান্ত। রবিবার সভাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, প্রস্তুতিতে ব্যস্ত দুই বর্ধমানের তামাম হেভিওয়েট নেতা থেকে জেলার প্রশাসনিক কর্তারা, সকলেই।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন, শিলান্যাস ও পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠান হবে কাঁকসায়। কাঁকসার রঘুনাথপুরে সরকারি কাজ শেষে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এই সভার জন্য রঘুনাথপুরের একলব্য আবাসিক স্কুল লাগোয়া মাঠে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে। বৃষ্টিতে যাতে সমস্যা না হয়, সে কথা মাথায় রেখে নেওয়া হয়েছে বাড়তি সতর্কতা। নিরাপত্তার দিকে তাকিয়ে মঞ্চ-সহ গোটা এলাকা সিসি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলেছে পুলিশ। অস্থায়ী হেলিপ্যাড তৈরির কাজও প্রায় শেষ। জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) শশাঙ্ক শেঠি, মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরা, বিডিও (কাঁকসা) অরবিন্দ বিশ্বাসেরা সভাস্থল ঘুরে প্রস্তুতিও দেখে গিয়েছেন একাধিকবার। সভাস্থলে দেখা গিয়েছে পুলিশের নানা স্তরের কর্তারা।

পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা ছাড়া বিধায়ক, সাংসদ ও মন্ত্রী, তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও সভাস্থলে এসে প্রস্তুতি-পর্ব খুঁটিয়ে দেখেছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, সাংসদ সুনীল মণ্ডল, বিধায়ক অলোক মাঝি, আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি, দলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন, কার্যকরি সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

সভার শুরুতে ছৌ, বাউল, আদিবাসী নৃত্য-সহ নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাগত জানানো হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। মুখ্যসচিব মলয় দে, মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রনাথ সিংহ, মলয় ঘটক, জেলা সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউড়ি, সাংসদ মমতাজ সঙ্ঘমিতা, রাজ্য গ্রামোন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান অনুব্রত মণ্ডল, জেলার সব বিধায়ক সভায় যোগ দেবেন। তবে আমন্ত্রিতদের তালিকায় নাম নেই আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের।

কিন্তু শহর ছেড়ে গ্রামে কেন সভা? এই প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী স্বপনবাবু বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের জন্য বহু প্রকল্প চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সব প্রকল্পের কথা গ্রামের মানুষের কাছে আরও বেশি করে পৌঁছে দিতে অনুষ্ঠানের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে কাঁকসাকে।’’ তবে তৃণমূলের একাংশের মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনেই। কাঁকসার জঙ্গলমহলের আদিবাসীদের মধ্যে বাম তো বটেই, বিজেপি-রও প্রভাব রয়েছে। তা ছাড়া রয়েছে শাসক দলের গোষ্ঠী কোন্দল। এলাকায় বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে বাসিন্দাদের একাংশের। তা ছাড়া ভৌগলিক ভাবে কাঁকসার অবস্থান পূর্ব ও পশ্চিম, দুই বর্ধমানের মাঝামাঝি। ফলে দু’জেলা থেকেই সভাস্থলে আসবেন মানুষ। — তৃণমূল কর্মীদের একাংশের অনুমান, এই সব দিক মাথায় রেখেই সভাস্থল হিসেবে কাঁকসাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বিপুল জনসমাগম নিশ্চিত করতে কয়েক দিন আগে থেকেই নেতারা সক্রিয়। সূত্রের খবর, এক মন্ত্রী গলসিতে সভা করে নির্দেশ দিয়েছেন লোক আনতে। সব কিছু যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করা যায়, সেটাই এখন চ্যালেঞ্চ জেলা প্রশাসনের। এক কর্তার দাবি, ভিড় সামলানোটাই আসল চ্যালেঞ্চ। তবে এ জন্য তাঁরা প্রস্তুতও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE