Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আনাজে তো হাত পুড়ছেই, উত্তরবঙ্গ জুড়ে লঙ্কা-কাণ্ডও

তবে পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরো বাজারের দামের তারতম্য নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। ফড়েরা বন্যার সুযোগ নিয়ে বিপুল মুনাফা আদায় করছে বলে অভিযোগ। কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, ২২ অগস্ট নবান্নে বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৭ ০৯:৫০
Share: Save:

ভেসে গিয়েছে খেত। তাই মাঠের ফসল নষ্ট হয়েছে মাঠেই। অন্য দিকে জল জমে অবরুদ্ধ জাতীয় সড়কে সার সার দাঁড়িয়ে পণ্য বোঝাই ট্রাক। এক ঝটকায় আনাজের দাম দ্বিগুণ হওয়ার এমন অনেক কারণই হাতের কাছে মজুত। আর এতে অনেকটাই আড়ালে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরির অভিযোগ। তবে বাস্তব এটাই, দামের আগুন উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে বানভাসি উত্তরবঙ্গের মানুষের।

সপ্তাহ দুয়েক আগেও যে লঙ্কার গড়পড়তা দাম ছিল কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, তা এখন কোথাও ২০০, কোথাও ৩০০ টাকা। ১০০ টাকার নীচে কেজি দরে লঙ্কা মিলছে না উত্তরবঙ্গের গ্রাম-শহর কোথাও। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি,
জমিতে সামান্য জল দাঁড়ালেই লঙ্কা পচে যায়। উত্তরবঙ্গের কয়েক হাজার হেক্টর কৃষি জমি জলের তলায়। বিহার থেকে যে লঙ্কা উত্তরবঙ্গে আমদানি করা হয় ট্রাক না চলায় তাও আসছে না। খেত ভেসে যাওয়ায় জোগান মার খেয়েছে আলু, ঝিঙে, পটল, ঢ্যাঁড়স, বেগুন এমন কী কচুরও।

তবে পাইকারি বাজারের সঙ্গে খুচরো বাজারের দামের তারতম্য নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। ফড়েরা বন্যার সুযোগ নিয়ে বিপুল মুনাফা আদায় করছে বলে অভিযোগ। কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত জানিয়েছেন, পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, ২২ অগস্ট নবান্নে বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

উত্তর দিনাজপুরে আনাজের দাম বাড়তে শুরু করেছিল জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই। সে সময় জেলায় লঙ্কার দাম কেজি প্রতি ৩০ থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হয়। এ দিন রায়গঞ্জ সহ বিভিন্ন বাজারে ন্যূনতম ১০০ টাকা কেজি দরে লঙ্কা বিক্রি হয়েছে। তবে মোহনবাটি বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী কমলেশ্বর সাহার দাবি, দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বন্যা ও বৃষ্টির জন্য এ বছর প্রচুর আনাজ নষ্ট হয়েছে। সেখানকার চাহিদা মেটাতে উত্তরবঙ্গের বাজার থেকে আনাজ পৌঁছেছিল দক্ষিণবঙ্গে। তার জেরে জুলাইয়ের শেষ থেকেই বাজার চড়তে শুরু করে। এখন উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতিতে সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে।

মালদহের চাঁচলে বুধবার থেকে ১০ টাকার আলু বিকোচ্ছে ২০ টাকা দরে। পেঁয়াজের দাম ন্যূনতম দেড়শো টাকা। দ্বিগুণ হয়েছে ঝিঙে পটলের দামও। স্বাধীনতা দিবসের দিন কোচবিহারে ৩০০ টাকা কেজি দরে লঙ্কা বিক্রি হয়েছে। পটল, ঝিঙে, স্কোয়াশ, ঢ্যাঁড়স, বেগুন, কাঁকরোল, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এমনকী একটি কচু বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩০ টাকায়।

বছরের ছ’মাস রাজ্যে ও উত্তর ভারতে লঙ্কার যোগান যায় যে হলদিবাড়ি থেকে সেখানেও লঙ্কার দর ছুঁয়েছে কেজি প্রতি ১৫০ টাকায়। শুনে চমকে উঠেছেন হলদিবাড়ির বাসিন্দারা। শিলিগুড়ির চম্পাসারি পাইকারি বাজারে কাঁচা লঙ্কা বিক্রি হচ্ছে ৯৮ টাকা কেজি দরে। অথচ শহরের সুভাষপল্লি, বিধান মার্কেট, হায়দরপাড়া, ফুলেশ্বরী, এনজেপি বাজারে তা বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। বাসিন্দাদের দাবি প্রশাসনিক নজরদারি না থাকাতেই এই পরিস্থিতি। জেলায় জেলায় দাম নিয়ন্ত্রণে যে টাস্কফোর্স তৈরি হয়েছিল তারও দেখা নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE