ফাইল চিত্র।
অনুমোদিত আসনের বাইরে অতিরিক্ত ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা যাবে না বলে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বারবার হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও জেলা এবং খাস কলকাতারও বহু কলেজে দেদার বাড়তি পড়ুয়া নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
এমনকী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও মন্ত্রীর ওই নীতি-নির্দেশের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে। সেখানে স্নাতকোত্তর পদার্থবিদ্যায় পড়ুয়ার সংখ্যা এ বার এত বেশি যে, যথাযথ ভাবে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস নেওয়াই যাচ্ছে না। ল্যাবরেটরি মাত্র একটি। সেখানকার ক্লাসে সব পড়ুয়াকে জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না।
এমন অবস্থা হল কেন?
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সূত্রের খবর, স্নাতকোত্তর পদার্থবিদ্যার ক্লাসে আদতে ৩৫ থেকে ৪০ জনের বেশি পড়ুয়া থাকার কথা নয়। অথচ এ বছর অন্তত ৫৫ জন ছাত্রছাত্রী ওই ক্লাসে ভর্তি হয়েছেন। অর্থাৎ অনুমোদিত আসনের প্রায় দেড় গুণ পড়ুয়াকে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু পরিকাঠামো নেই বলেই সকলকে প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসে ঠাঁই দেওয়া যাচ্ছে না।
শিক্ষা শিবিরের বক্তব্য, কোনও বিষয়েই নির্দিষ্ট আসনের বাইরে ছাত্র বা ছাত্রী ভর্তি করা ঠিক নয়। এই নিয়ম ভাঙলে পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে বাড়তি পড়ুয়াদের সমস্যা তো হয়ই, মেধা-তালিকা অনুযায়ী অগ্রবর্তী ছাত্রছাত্রীরাও অসুবিধায় পড়েন। পদার্থবিদ্যার মতে যে-সব বিষয়ে প্র্যাক্টিক্যাল আবশ্যিক, সেগুলোতে সমস্যা হয় অনেক বেশি। কেননা সাধারণ শ্রেণিকক্ষে ওই সব বিষয়ের তত্ত্বগত ক্লাস কোনও ভাবে সেরে নেওয়া গেলেও ল্যাবরেটরির সীমিত পরিকাঠামোয় সব পড়ুয়ার স্থান সঙ্কুলান হয় না। যেমনটা হচ্ছে যাদবপুরে পদার্থবিদ্যার প্র্যাক্টিক্যালে।
যাদবপুরের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ভাবে নিয়ম উপেক্ষিত হওয়ায় শিক্ষাজগতের একটি বড় অংশ অত্যন্ত বিস্মিত। তাঁদের প্রশ্ন, এমনটা হল কেন? যাদবপুরের খবর, উচ্চশিক্ষা দফতরের নিয়ম অনুযায়ী এখন যে-কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে নিজেদের পড়ুয়াদের মধ্য থেকে ৬০% আসনে ভর্তি নেওয়ার কথা। বাকি ৪০% আসনে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী নিতে হয়। কিন্তু যাদবপুর-কর্তৃপক্ষ এ বার বিজ্ঞান ও কলা বিভাগে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ যত পড়ুয়া স্নাতকোত্তরে ভর্তি হতে ইচ্ছুক ছিলেন, সকলকেই নিয়েছেন। ফলে পড়ুয়া সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ভর্তি-জট কাটিয়ে উঠলেও শ্রেণিকক্ষ-নির্ভর পঠনপাঠনে, বিশেষত প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাসে সমস্যায় পড়ছেন পড়ুয়ারাই। পদার্থবিদ্যা বিভাগের মাত্র একটি ল্যাবরেটরিতে সব ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে ক্লাস করা যাচ্ছে না। সুরাহার আশায় পড়ুয়ারা ইতিমধ্যে উপাচার্য সুরঞ্জন দাসের দ্বারস্থ হয়েছেন।
পদার্থবিদ্যার বিভাগীয় প্রধান অর্ঘ্য দেব বৃহস্পতিবার জানান, উপাচার্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। পুজোর আগে সেখানে আরও একটি ল্যাবরেটরি চালু করার চেষ্টা চলছে।
সমস্যা দেখা দিয়েছে ‘চয়েস বেসড ক্রেডিট সিস্টেম’ বা পছন্দসই মিশ্র পাঠের ক্ষেত্রেও। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র নির্দেশ অনুযায়ী এ বছর যাদবপুরে এই পদ্ধতি চালু হয়েছে কাগজে-কলমে। কিন্তু জুলাইয়ের শেষ দিকে ক্লাস চালু হয়ে গেলেও বিজ্ঞান বিভাগের ‘জেনেরিক ইলেকটিভ’ বিষয়ের সব ক্লাস এখনও শুরু করা যায়নি বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy