Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
যাদবপুরে প্রবেশিকা চান না পার্থ

প্রেসিডেন্সির আসন পূরণে বিধিই বাধা

ইংরেজি-সহ তিনটি বিষয়ে পরীক্ষার বদলে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি চালু করতে বলা হবে যাদবপুর-কর্তৃপক্ষকে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৩৬
Share: Save:

ফাঁকা আসন নিয়ে প্রেসিডেন্সি ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা মিটল না। অন্তত এ বছর যে আর আসন পূরণ সম্ভব নয়, তা কার্যত মেনে নিচ্ছে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, ইংরেজি-সহ তিনটি বিষয়ে পরীক্ষার বদলে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি চালু করতে বলা হবে যাদবপুর-কর্তৃপক্ষকে।

মঙ্গলবার বিধানসভায় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সির উপাচার্য জানিয়েছেন, ওখানে ভর্তি নিয়ে আগে থেকেই এমন সব বিধি রয়েছে, যার ফলে ফাঁকা আসন পূরণে সমস্যা হচ্ছে।’’ উচ্চশিক্ষা দফতরের ধারণা, এই বিধি বদল করা প্রয়োজন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘সংরক্ষিত আসন পূরণের বিষয়ে যে সতর্ক থাকা উচিত ছিল, উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া তা স্বীকার করেছেন।’’ আসন ফাঁকা সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে না-পারায় সরকার যে উদ্বিগ্ন, সে-কথা উপাচার্যকে জানান মন্ত্রী।

আসন পূরণে নিয়মবিধি বাধা হচ্ছে কী ভাবে? ২০১৩ সালের রাজ্যের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধি বলছে, সংরক্ষিত সব আসন পূরণ না-হলে ফাঁকা আসনে সাধারণ পড়ুয়া ভর্তি নিতে হবে। কিন্তু প্রেসিডেন্সি তা করেনি। উচ্চশিক্ষা দফতরের খবর, বিধি অনুযায়ী কোনও পড়ুয়া প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হলে নিয়মিত ক্লাস না-করলেও ছ’বছর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারেন।

রাজ্যে অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশ্য পড়ুয়াদের ছ’বছর থাকার নিয়ম নেই। এই নিয়ম যে বদলানো প্রয়োজন, শিক্ষামন্ত্রী সেটা উপাচার্যকে জানিয়েছেন। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আলোচনা করে মন্ত্রীকে জানাবেন।

প্রেসিডেন্সিতে সংশ্লিষ্ট নিয়মবিধি তৈরি সময়ে উপাচার্য ছিলেন মালবিকা সরকার। তিনি এ দিন জানান, পড়ুয়াদের ছ’বছর থাকার বিষয়টি রাখা হয়েছিল পরীক্ষা বিধিতে। ভর্তি বিধিতে নয়। পরীক্ষায় অকৃতকার্য হলে সর্বাধিক ছ’বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে কৃতকার্য হওয়ার সুযোগ মিলবে, এটাই ছিল বিধিতে। ‘‘কোনও নতুন পড়ুয়া কিছু দিন ক্লাস করে চলে যাবে এবং ছ’বছর আসন আটকে রাখতে পারবে— এমন কথা মোটেই বলা হয়নি,’’ দাবি প্রাক্তন উপাচার্যের। তিনি জানান, কেউ যদি কিছু দিন ক্লাস করে আর না-আসেন, তাঁকে পরের বছর ফের পরীক্ষা দিয়ে ভর্তি হবে। বিধিতে সেটাই রয়েছে।

যাদবপুরে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৭০টি আসনে ভর্তির ক্ষেত্রে এআইসিটিই-র বিধিনিয়মে বাধা থাকলেও কলা ও বিজ্ঞানের আসন পূরণ করতেই হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুরে অন্য সব বিষয়ে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি হলেও ইংরেজি-সহ তিনটি বিষয়ে প্রবেশিকা পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই তিন বিভাগেও শুধু মেধার ভিত্তিতে ভর্তি নিতে বলব।’’ যাদবপুরে স্নাতক স্তরে ইংরেজি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক এবং তুলনামূলক সাহিত্যে ভর্তি-পরীক্ষা চালু আছে।

উপাচার্য সুরঞ্জন দাস বলেন, ‘‘প্রবেশিকা বাতিলের সরকারি নির্দেশ এলে নিশ্চয়ই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করব।’’ জুটার সহ-সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য এই বিষয়টির প্রতিবাদ করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE