ফাইল চিত্র।
স্বাস্থ্য ভবনের ৬৭ জন ইউডিসি বা আপার-ডিভিশন ক্লার্ককে ডিটেলমেন্ট (বিশেষ দায়িত্ব)-এ অন্যত্র পাঠানোর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সোমবারেও দলমত নির্বিশেষে সরকারি কর্মীদের একটা বড় অংশের প্রতিবাদ-ধর্না-মিছিল অব্যাহত ছিল। বিক্ষুব্ধ কর্মীদের অভিযোগ, এ ভাবে অন্যত্র পাঠানোয় তাঁদের মর্যাদাহানি হচ্ছে।
স্বাস্থ্য ভবনে বিক্ষোভ প্রদর্শন ও মৌনী মিছিল করার সঙ্গে সঙ্গে এ দিন প্রতিবাদ-অবস্থান করা হয় মৌলালির সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোর্সে। বিক্ষুব্ধ কর্মীরা কাজকর্ম বন্ধ রাখেন। সরকারের কাছে তাঁরা ডিটেলমেন্ট প্রত্যাহারের দাবি পেশ করেছেন। এবং তা না-মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলেও জানিয়ে দিয়েছেন।
তবে নবান্ন সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ডিটেলমেন্টের ব্যাপারে সরকার অনড়। পরবর্তী পর্যায়ে আরও ১৩০-১৩৪ জন ইউডিসি-কে কিছু দিনের মধ্যে ফের স্বাস্থ্য ভবন থেকে ডিটেলমেন্টে সরানো হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। বিক্ষোভরত কর্মীরা এই খবরে রীতিমতো উত্তেজিত। এ দিন তাঁরা স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগ চেয়েও স্লোগান দেন।
স্বাস্থ্যকর্তারা যে এই দাবির কাছে মাথা নোয়াবেন না, সেটাও এ দিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন একাধিক কর্তা। তাঁদের যুক্তি, সরকারি চাকরিতে ডিটেলমেন্ট হতেই পারে। সরকার যখন যেখানে কর্মীদের পাঠানো জরুরি বলে মনে করবে, সেখানেই পাঠাতে পারে। ডিটেলমেন্ট হতে পারে জেনেই ইউডিসি-রা চাকরিতে ঢোকেন।
তা ছাড়া যে ৬৭ জনের ডিটেলমেন্টের নির্দেশ হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৬৫ জনকেই সরানো হয়েছে কলকাতার মধ্যে। মাত্র দু’জনকে আলিপুরদুয়ারে পাঠানো হয়েছে। এতে কোনও সমস্যা হওয়ার কথাই নয় বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের অভিমত।
কর্মীরা ঠিক কোন সমস্যার জন্য ডিটেলমেন্টের বিরোধিতা করছেন?
সরকারি কর্মীদের তৃণমূলপন্থী সংগঠন রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের তরফে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না-করে এবং আমাদের সঙ্গে আলোচনা না-করে এই ডিটেলমেন্ট হয়েছে। স্বাস্থ্য ভবনে লোয়ার ডিভিশন ক্লার্কের ২৩৩টি পদ খালি। সেই কাজ করতে হতো ইউডিসি-দের। তা সত্ত্বেও প্রয়োজনের তুলনায় ইউডিসি বেশি বলে দাবি করে তাঁদের অন্য জায়গায় পাঠানো হচ্ছে।’’ রাজীববাবুর বক্তব্য, অ্যাকাউন্টসে ক্যাশ অ্যান্ড বিলিং থেকে প্রায় সব কর্মী তুলে নেওয়া হয়েছে। সমস্যা টের পাওয়া যাবে আগামী মাসে মাইনের সময়েই।
যদিও সিপিএম-প্রভাবিত কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতারা সমস্যার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘ডিরেক্টরেটে কাজ করার একটা ‘স্টেটাস’ আছে। স্বাস্থ্য ভবনে আমরা যে-কাজ করি, তার একটা সম্মান আছে। অন্য কোনও মেডিক্যাল কলেজে কাজ করলে আমাদের মর্যাদাহানি হবে বলে আমরা মনে করি।’’ স্বাস্থ্যকর্তারা অবশ্য এটাকে বলছেন ‘পাগলের প্রলাপ’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy