সুশান্ত দত্তগুপ্তের অপসারণের পর প্রায় দু’বছর কেটে গেলেও, এখনও বিশ্বভারতীতে কোনও স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারলেন না আচার্য তথা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর পরে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়াটি নিয়েই নানা প্রশ্ন উঠেছে।
গত দু’বছর ধরে এই নিয়োগ নিয়ে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর নানা সময়ে নানা কথা বলেছেন। কখনও বলেছেন, সাত-দশ দিনেই নতুন উপাচার্য ঠিক করে ফেলা হবে। আবার কখনও বলছেন, এক সপ্তাহ পরে আপনাদের ভাল খবর শোনাব। কিন্তু এখনও উপাচার্য ঠিক করে উঠতে পারেনি কেন্দ্র। এ দিকে বর্তমান অস্থায়ী উপাচার্য স্বপনকুমার দত্ত ২৭ জানুয়ারি অবসর নিচ্ছেন।
রাজ্য বিজেপি নেতাদের একাংশ স্বপনবাবুর অবসরের সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে স্থায়ী উপাচার্য ঘোষণা করার পক্ষে। তার কারণ, স্বপনবাবু গত দু’বছরে বিজেপি-আরএসএসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, রবীন্দ্র গবেষেণার চেয়ে গোশালা নির্মাণে গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি। আবার পাল্টা যুক্তি হল তিনি জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক। তাই শুধু রবীন্দ্র-চর্চা নয়, প্রাণীবিদ্যার চর্চাও আবশ্যিক বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু এখন স্বপনবাবুর পক্ষে ও বিপক্ষে থাকা অধ্যাপকেরা উভয়েই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তহীনতার বিরুদ্ধে। যারা স্বপনবাবুকে রাখার পক্ষে তাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন এখনই ওই ঘোষণা করা হচ্ছে না। তা হলে অন্তত অস্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠত না। উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়াটি এ ভাবে প্রহসনে পরিণত হতো না।
সুশান্ত দত্তগুপ্তই প্রথম উপাচার্য, যাকে দুর্নীতির দায়ে অপসারণ করে নজির গড়েছিল স্মৃতি ইরানির মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। কিন্তু স্বপনকুমার দত্তের নিয়োগের পর ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টে তাঁর যে সব অনিয়মের ভূরি ভূরি অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেগুলির কেন সুষ্ঠু তদন্ত হচ্ছে না— সে প্রশ্ন উঠেছে। তবে স্বপনকুমার দত্তের বিরুদ্ধেও আর্থিক ও অন্য নানা অনিয়মের অভিযোগ জমা পড়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। এমনকী যৌন কেলেঙ্কারি, নিয়োগ বহির্ভূত ভাবে লাগাতর নিয়োগের অভিযোগও উঠেছে। কিন্তু এ সব কানেই তুলছে না মানবসম্পদ মন্ত্রক।
অস্থায়ী উপাচার্যের নিয়োগের ক্ষমতা নেই— নির্দেশিকায় এ কথা স্পষ্ট বলা থাকলেও, স্বপনবাবু বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কর্মসমিতিতে নতুন নিয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ। উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সার্চ কমিটি বহু দিন আগেই তালিকা-সহ রিপোর্ট জমা দিয়েছে। সেই তালিকা থেকে কেন নতুন উপাচার্যের নাম বাছা হল না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy