Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Child Abuse

দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীর যৌন হেনস্থা, অভিযুক্ত দারোয়ান, ধুন্ধুমার স্কুলে

পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, রাস্তা অবরোধ, স্কুল ঘিরে রেখে বিক্ষোভের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার পদত্যাগ এবং তাঁর গ্রেফতারের দাবি তুললেন অভিভাবকরা

পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি অভিভাবকদের।

পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি অভিভাবকদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলুড় শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ১৬:৫০
Share: Save:

দ্বিতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়াকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠল স্কুলেরই এক অশিক্ষক কর্মীর বিরুদ্ধে। আর এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই বুধবার দুপুর থেকে অশান্ত হয়ে উঠল হাওড়ার বেলুড়।

পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, রাস্তা অবরোধ, স্কুল ঘিরে রেখে বিক্ষোভের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার পদত্যাগ এবং তাঁর গ্রেফতারের দাবি তুললেন অভিভাবকরা। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে পকসো (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

লিলুয়ার বাসিন্দা ওই ছাত্রীর মা জানিয়েছেন, তার মেয়ে বেলুড় গার্লস প্রাইমারি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। বেশ কয়েক দিন ধরেই তার মেয়ে স্কুলে আসতে চাইত না। মঙ্গলবারও একই কথা বলায় তিনি মেয়েকে জিজ্ঞেস করেন, কেন সে স্কুলে যেতে চাইছে না? কিছু হয়েছে কি? কোনও বন্ধুর সঙ্গে গণ্ডগোল?

আরও পড়ুন: বিয়ে রুখে পালিয়েও পড়তে বাধা

এর পরেই মেয়ে জানায়, স্কুলের ‘দারোয়ানকাকু’ তাকে মাঝে মাঝেই জাপটে ধরে। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেয়। দিন দশেক আগে ওই শিশুটির সঙ্গে একই রকম ব্যবহারের পর সে সবাইকে বলে দেওয়ার কথা বলে। এর পরেই তাকে স্কুলেরই একটি ঘরে আটকে রাখেন অশিক্ষক কর্মী সুশান্ত দাস ওরফে বাপি। পরে স্কুলের এক শিক্ষিকা ছাত্রীর চিৎকার শুনে তাকে এসে উদ্ধার করে।

ঘটনাস্থল থেকে আনন্দবাজারের সাংবাদিক শান্তনু ঘোষ জানাচ্ছেন:

 

পুলিশ জানিয়েছে, মেয়ের কাছে গোটা ঘটনার কথা শুনে বুধবার স্কুলে প্রধান শিক্ষিকার কাছে অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন বাবা-মা। অভিভাবকদের অনেকেই বিষয়টি জানতে পারেন। তাঁরাও স্কুলে এসে হাজির হন। কিন্তু, প্রধান শিক্ষিকা তখন স্কুলে ছিলেন না। ওই দিন যে শিক্ষিকা বাচ্চাটিকে আটকে রাখা ঘর থেকে উদ্ধার করেছিলেন, তাঁর সঙ্গে দেখা করেন অভিভাবকেরা। তিনি ঘটনার কথা স্বীকার করেন। এর পরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকেরা।

জি টি রোডে চলছে অবরোধ।

ইতিমধ্যে স্কুলে এসে পৌঁছন প্রধান শিক্ষিকা। তিনি প্রথমে অভিভাবকদের কোনও অভিযোগ শুনতেই চাননি। বলে দেন, এর সঙ্গে স্কুলের কোনও যোগ নেই। এমন ঘটনার কথা তিনি জানেন না বলেও জানিয়ে দেন। এর পর ক্ষোভের পারদ চড়তে থাকে। স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে ডাকেন। তারা এসে অভিযুক্ত সুশান্তবাবুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। কিন্তু, অভিভাবকেরা তত ক্ষণে প্রধান শিক্ষিকার অপসারণ এবং তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে বেলুড় বাজারে জি টি রোডের উপর অবরোধ শুরু করেন। দিনের ব্যস্ত সময়ে বালি থেকে হাওড়া যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তায় অবরোধ শুরু হওয়ায় সমস্যায় পড়েন প্রচুর মানুষ।

আরও পড়ুন: নির্যাতিতার পাশে দাঁড়াতে হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী

সেই অবরোধ তুলতে বিশাল পুলিশ বাহিনী আসে। মহিলা পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে অভিভাবকদের একাংশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। শেষে অবরোধ তুলতে পুলিশ তাঁদের দিকে লাঠি উঁচিয়ে যায় বলে অভিযোগ। এর পর ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন অভিভাকেরা। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেই বিক্ষোভ ফের এসে পড়ে স্কুল চত্বরে। ঘিরে রাখা হয় শিক্ষিকাদের। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন বিকেল পর্যন্ত স্বাভাবিক হয়নি পরিস্থিতি।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE