শীর্ষে: সবুজকলি সেন।
এক সপ্তাহের টানাপড়েন অবশেষে কাটল বিশ্বভারতীতে।
শুক্রবার রাতে বিশ্বভারতীতে পৌঁছেছিল মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের চিঠি। চিঠিতে মন্ত্রক জানায়— ‘স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে বিশ্বভারতীর প্রবীণতম ডিরেক্টরকে দায়িত্ব দেওয়া হোক।’
সেই নির্দেশ অনুযায়ী শনিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন সবুজকলি সেন। তিনি এত দিন ছিলেন বিশ্বভারতীর উদ্ভাবনী শিক্ষা অধিকর্তা এবং প্রবীণতম ডিরেক্টর।
এর মধ্যে শনিবারই অসুস্থতার কারণে ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবের পদ থেকে ইস্তফা দেন অমিত হাজরা। যুগ্ম কর্মসচিব সৌগত চট্টোপাধ্যায়কে তিনি ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিবের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেন। পরে অস্থায়ী উপাচার্যকে কাজ বুঝিয়ে দেন সৌগতবাবুই।
সত্তরের দশকে বিশ্বভারতীর দর্শন বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পাস করেন সবুজকলি সেন। ১৯৮৫ সালে দর্শন বিভাগেরই অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ করা হয় তাঁকে। পরে তিনি বিভাগীয় প্রধানও হন। ২০১৩ সালে বিশ্বভারতীর উদ্ভাবনী শিক্ষা ও গ্রামীণ পুনর্গঠন দফতরের ডিরেক্টর পদে যোগ দেন। নিয়ম অনুযায়ী, তখন থেকেই তিনি বিশ্বভারতী বিনয়ভবনের অধ্যক্ষা। এই মুহূর্তে তিনিই ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণতম ডিরেক্টর। মন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী তা-ই তিনিই অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব সামলাবেন।
অস্থায়ী উপাচার্যের চেয়ারে বসার পর সবুজকলি সেন বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বপ্নের ক্ষেত্র শান্তিনিকেতন। যে দায়িত্ব পেয়েছি, তা পালন করার চেষ্টা করব। বিশ্বভারতীর অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, শিক্ষাকর্মীবৃন্দ, সাধারণ ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে সকলেই স্থায়ী উপাচার্য আসার পথ সুগম করারও প্রচেষ্টা করব।’’ একই কথা বলেন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব সৌগতবাবুও। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আর্জি, খুব তাড়াতাড়ি যেন আমরা স্থায়ী উপাচার্য পাই।’’
সবুজকলিদেবী অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হওয়ায় খুশি বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা। বিশেষ করে দর্শন বিভাগ। তাঁদের কথায়, ‘‘ওঁকেই আমরা স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দেখতে চাই।’’
গত শনিবার অস্থায়ী উপাচার্য় হিসেবে মেয়াদ শেষ হয় স্বপনকুমার দত্তের। বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের একাংশ জানিয়েছিলেন, সে দিন রাতেই জরুরি পরিস্থিতিতে তিনি নয়াদিল্লি চলে যান। তবে কাউকে কার্যভার বুঝিয়ে যাননি। তাই উপাচার্যহীন হয়ে পড়ে বিশ্বভারতী।
তার জেরে গত এক সপ্তাহ ধরে অচলাবস্থা ছিল বিশ্বভারতীতে। জমা পড়ে স্মারকলিপি। হয় ধিক্কার মিছিলও। বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই আমরা বলে এসেছি, এই রকম পরিস্থিতিতে বিশ্বভারতীর নিয়ম অনুযায়ী প্রবীণতম ডিরেক্টরকেই দায়িত্বভার দেওয়া হয়। এত দিনে সেটাই হল। এটা আমাদের নৈতিক জয়।’’ অধ্যাপকসভার সম্পাদক গৌতম সাহার কথায়, ‘‘এটা সমস্যার সমাধান নয়। সাময়িক অস্থিরতা কাটানো হল মাত্র। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার যদি সিদ্ধান্ত নিতে না পারে, তা হলে বিশ্বভারতীকেই উপাচার্য নির্বাচনের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হোক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy