ডানকুনির যুবক সঞ্জয় রায়ের মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছে প্রায় দু’মাস। দু’দু’টি কমিটি গড়ে অ্যাপোলো হাসপাতাল এবং চিকিৎসকদের গাফিলতির যে তদন্ত নবান্ন করিয়েছে, তা এক মাসে শেষ হলেও রিপোর্ট প্রকাশিত হয়নি। রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন কাজ শুরু করেছে। অ্যাপোলো হাপাতালের বিরুদ্ধে তোলাবাজির তদন্ত রিপোর্ট পাঠানো হয়নি সেখানেও।
২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে এসএসকেএম হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল সঞ্জয়ের। তার আগে অ্যাপোলো হাসপাতালে সাত দিন ভর্তি ছিলেন ওই যুবক। সঞ্জয়ের মৃত্যু নিয়ে হইচই হয়েছিল প্রচুর। খোদ মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনায় মুখর হয়েছিলেন। রাজ্যের তরফে নতুন স্বাস্থ্য বিল তৈরির পিছনেও ওই ঘটনা অনুঘটকের কাজ করেছিল। তেড়েফুঁড়ে শুরু করে এখন সব চুপচাপ কেন? সংশয় দানা বাঁধছে বিভিন্ন মহলে।
সঞ্জয়ের মৃত্যুতে হাসপাতাল এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের দায় কতটা, সেটা যেমন তদন্তের একটা দিক। অন্য দিকটা ছিল অ্যাপোলো হাসপাতালের বিরুদ্ধে জোর করে টাকা আদায় এবং তোলাবাজির অভিযোগ। দু’টি তদন্ত কমিটি এক মাস আগে তাদের রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরেও তা প্রকাশিত হয়নি। কেন? স্বাস্থ্য ভবনের এক কর্তা বলেন, চিকিৎসকদের গাফিলতির প্রসঙ্গটি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে। আর জোর করে টাকা আদায় এবং তোলাবাজির অভিযোগের তদন্ত রিপোর্ট স্বাস্থ্য ভবনেই পড়ে রয়েছে বলে খবর। রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশনে সেই রিপোর্ট জমা পড়ার কথা।
আরও পড়ুন...
অ্যাপোলো-কাণ্ডে ‘শেষ’ দেখতে চান গুঞ্জার মা-বাবা
কমিশনের সচিব আরশাদ হাসান ওয়ারসি জানান, ‘‘ফাইল এখনও আমাদের কাছে আসেনি।’’ কেন? স্বাস্থ্য কর্তারা মন্তব্য করতে চাননি। স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী ফোন ধরেননি।
শুধু স্বাস্থ্য দফতর নয়। সঞ্জয়ের মৃত্যুতে আলাদা তদন্ত করেছে ফুলবাগান থানা আর লালবাজারও। অ্যাপোলোর ১৬ জন চিকিৎসক-সহ ৪০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ফুলবাগান থানা এবং লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা। পুলিশের একটি অংশের দাবি, সঞ্জয়ের চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত তিন চিকিৎসক এবং প্রশাসনিক স্তরের কয়েক জনের বিরুদ্ধে জোর করে টাকা আদায় এবং ভুল চিকিৎসার প্রমাণ মিলেছে তদন্তে। এমনকী হুমকি দেওয়া থেকে শুরু করে ভুল বিলের প্রমাণও এসেছে তদন্তকারীদের কাছে। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, কিছু লোককে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ করা বাকি।
সঞ্জয়ের স্ত্রী রুবি এখনই হাল ছাড়ছেন না। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘আশাবাদী না হয়ে তো উপায় নেই। এই মুহূর্তে আমি নিজে চাকরি নিয়ে অনেকটা ব্যস্ত হয়ে পড়েছি।’’ কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে জানালেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy