Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত ভোট, বিলি হবে ৩২ হাজার স্কুলব্যাগ

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র মানছেন, “মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে স্কুলব্যাগ দেওয়া হবে।” স্কুলব্যাগ পাবে এই সব কেন্দ্রের পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারাই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৮ ০১:১৮
Share: Save:

সামনে কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়ে দিয়েছেন, ‘দু’- তিন মাসের মধ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন রয়েছে।’ তার আগেই দুই জেলার প্রায় ৩২ হাজার পড়ুয়াকে স্কুলব্যাগ দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ওই পড়ুয়াদের সকলেই মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের (এমএসকে)। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, জেলায় ওই সংখ্যক স্কুলব্যাগ চলেও এসেছে। এ বার তা বিলি হবে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র মানছেন, “মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে স্কুলব্যাগ দেওয়া হবে।” স্কুলব্যাগ পাবে এই সব কেন্দ্রের পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারাই।

সবুজসাথীর সাইকেল বিলি হয়। এর আগে স্কুলে জুতো বিলি হয়েছে। এ বার বিলি হবে স্কুলব্যাগ। এই পরিকল্পনা নিয়ে অবশ্য রাজ্য সরকারকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে ফায়দা তোলাই শাসক দলের লক্ষ্য। এই পরিকল্পনা সেই কারণেই। তাদের বক্তব্য, স্কুলব্যাগ দেওয়ার পরিকল্পনা ভোটের চমক ছাড়া আর কিছু নয়। বিজেপির জেলা সম্পাদক অরূপ দাসের কথায়, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে স্কুলব্যাগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সস্তার রাজনীতি করা হচ্ছে। এতে কিন্তু শিক্ষার সার্বিক উন্নতি হবে না।” সিপিআইয়ের জেলা সহ- সম্পাদক বিপ্লব ভট্টের কথায়, “পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে চটকদারির রাজনীতি করা হচ্ছে।” বিরোধীদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার তো নিজেরাই আর্থিক সঙ্কটের কথা বলে বারবার। সেটা ঠিক হলে এত টাকা ব্যয় করে স্কুলব্যাগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত যথার্থ হতে পারে না। তাদের আরও দাবি, অনেক মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে পর্যাপ্ত ক্লাসরুম নেই, শৌচালয় নেই, স্কুলের পাঁচিলও নেই। বহু স্কুলেই আর্থিক সমস্যা ভয়াবহ। সেই অভাব না- ঘুচিয়ে ব্যাগের পিছনে টাকা খরচ করা অর্থহীন।

শাসক দল অবশ্য এই সমালোচনা গায়ে মাখছে না। জেলা তৃণমূলের নেতা তথা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্রের কথায়, “সাইকেল আর জুতো দেওয়া হয়। এ বার স্কুলব্যাগও দেওয়া হবে। এতে পড়ুয়ারাই উপকৃত হবে।” তাঁর কটাক্ষ, “বিরোধীরা তো সবেতেই রাজনীতি দেখতে পায়! দেখুক! আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। করবও।” প্রশাসন সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রগুলোয় পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ৩২,৫৭৩। এদের সকলকেই স্কুলব্যাগ দেওয়া হবে। এরমধ্যে পঞ্চম শ্রেণির ৯,১৬৩ জন। ষষ্ঠ শ্রেণির ৫,৪৪৯ জন, সপ্তম শ্রেণির ৮,৯৮৩ জন এবং অষ্টম শ্রেণির ৮,৯৭৮ জন। মেদিনীপুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে গিয়েছেন, মানুষের পরিষেবা বা উপভোক্তারা যে সব টাকা পাবেন, তা মার্চের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে।

প্রশাসন সূত্রে খবর, দ্রুতই স্কুলব্যাগ বিলি হবে। জেলা থেকে শুরুতে স্কুলব্যাগ পৌঁছবে মহকুমায়। মহকুমা থেকে ব্লকগুলোয় পৌঁছনো হবে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “চলতি সপ্তাহের মধ্যেই সব মহকুমায় স্কুলব্যাগ পৌঁছে যাওয়ার কথা। আশা করি, পরের এক- দেড় সপ্তাহের মধ্যে সব ব্লকে স্কুলব্যাগ পৌঁছে যাবে। শীঘ্রই ছাত্রছাত্রীরাও তা পেয়ে যাবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE