মহম্মদ ইউনুস, শেখ আবদুল্লা ও মুজাফ্ফর আহমেদ
পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে ধরা পড়েছিল লস্করের আত্মঘাতী বাহিনীর তিন সদস্য। তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছেন বনগাঁ আদালতের বিচারক। সাজা ঘোষণা হবে শনিবার।
বৃহস্পতিবার তিনজনকে বনগাঁ আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (ফাস্ট ট্র্যাক ওয়ান) বিনয়কুমার পাঠকের এজলাসে তোলা হয়। মহকুমা আদালতের মুখ্য ভারপ্রাপ্ত আইনজীবী তথা মামলার সরকারি কৌঁসুলি সমীর দাস বলেন, ‘‘তিন জঙ্গিকে দেশদ্রোহ, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন বিচারক।’’
২০০৭ সালের ৪ এপ্রিল পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে মহম্মদ ইউনুস, শেখ আবদুল্লা, মুজাফ্ফর আহমেদ রাঠোর, এবং শেখ নঈম ওরফে সামিরকে আটক করে বিএসএফ। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। মামলার তদন্তভার নেয় সিআইডি। ২০০৭ সালের জুন মাসে চার্জশিট জমা পড়ে। ২০১২ সালের জুলাই মাসে শুনানি শুরু হয়।
ওই জঙ্গিরা ভারতীয় সেনাবাহিনীর উপরে আক্রমণ চালাতে এ দেশে ঢুকেছিল বলে দাবি করে পুলিশ ও বিএসএফ। মহম্মদ ইউনুস ও শেখ আবদুল্লাহ পাক নাগরিক। মুজাফ্ফরের বাড়ি কাশ্মীরের অনন্তনাগে। সিআইডি জানায়, ইউনুস ও আবদুল্লা পাক মাটিতে কম্যান্ডো ট্রেনিং নিয়েছিল। ঢাকা থেকে চোরাপথে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে এ দেশে ঢোকার চেষ্টা করে সকলে। গোপন সূত্রে বিএসএফের কাছে সেই খবর পৌঁছয়। বিশেষ দল তৈরি করে চারজনকে পাকড়াও করা হয়। ধৃতদের কাছ থেকে কলেজের পরিচয়পত্র, এ দেশের সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স, সিমকার্ড, ভারতের মানচিত্র, প্রচুর ডলার, ভারতীয় টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
বনগাঁ আদালতে মামলা চলাকালীন সামিরকে মুম্বই নিয়ে যাওয়ার পথে ছত্তীসগঢ়ের কাছে সে ট্রেন থেকে পালায় বলে জানায় সিআইডি। যদিও ওই যুবকের পরিবার দাবি করে, তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। সিআইডি কর্তারা অবশ্য জানান, এখনও খোঁজ চলছে সামিরের। মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের বাসিন্দা সামির মুম্বইয়ে লোকাল ট্রেনে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে জড়িত ছিল বলে দাবি সিআইডি-র। গোয়েন্দাদের দাবি, বিস্ফোরণের আগে জঙ্গিদের মুম্বই নিয়ে যাওয়া, আরডিএক্স পাচার— সব কিছুর পিছনেই সামিরের হাত ছিল। এক সময়ে কলকাতাতেও ঘাঁটি গেড়েছিল সে।
এ দিন তিন অপরাধীকে বেলা ১২টা নাগাদ দমদম সেন্ট্রাল জেল থেকে কমান্ডো পাহারায় বনগাঁ আদালতে নিয়ে আসা হয়। সমীরবাবু বিচারকের কাছে ওই তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘‘দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পরিকল্পনা করেই ঢুকেছিল ওরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy