Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পাহাড় নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে প্রশ্ন

করেনি কিছু, তাই দায় নিতে নারাজ সিআরপি

সিআরপি সূত্র ও রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে এই প্রশ্নের উত্তরে কর্তাদের মুখে মুখে যা উঠে আসছে, তা হল, এর নেপথ্যে রয়েছে শুক্রবার ভোরে গুরুঙ্গ-ধরো অভিযান।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও অত্রি মিত্র
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

আগেও একাধিক বার সরানোর কথা হয়েছে। কিন্তু কোনও কারণ না দেখিয়ে ছুটির দিনে তড়িঘড়ি কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়ার (ডি-অ্যাটাচ) সিদ্ধান্ত কেন নিল দিল্লি?

সিআরপি সূত্র ও রাজ্য প্রশাসনের অন্দরে এই প্রশ্নের উত্তরে কর্তাদের মুখে মুখে যা উঠে আসছে, তা হল, এর নেপথ্যে রয়েছে শুক্রবার ভোরে গুরুঙ্গ-ধরো অভিযান। ওই দিন রাজ্য পুলিশ এবং সিআরপি যৌথ অভিযান চালিয়েছে বলে বারবার বলেছেন রাজ্য পুলিশ কর্তারা। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তারা দিল্লিকে জানিয়েছেন, মাত্র ২ সেকশন (সাকুল্যে ১২-১৪ জন জওয়ান) সিআরপিএফ-কে অভিযানে নেওয়া হলেও তাঁরা কেউই ‘অ্যাসল্ট’ গ্রুপে ছিলেন না। তাই মূল অপারেশনের কিছুই তাঁরা জানেন না। তাঁদের একটি সেকশনকে মূল ঘটনাস্থলের এক কিলোমিটার দূরে দাঁড় করানো হয়। অন্যটিকে রাখা হয়, শেষ যেখানে গাড়ি যেতে পারে, সেখানে। সিআরপি-র একটি গুলিও অভিযানে খরচ হয়নি।

অথচ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাছে খবর, ঘটনাস্থলে অনেক রক্তপাত হয়েছে। ফলে, পরে কোনও কিছু হলে অভিযানের বিন্দুবিসর্গ না জেনেও তার দায় অনেকটাই বর্তাবে তাঁদের ঘাড়ে। পরবর্তী সময়ে এ ধরনের ‘গুরুঙ্গ-ধরো’ অপারেশনে আরও রক্তপাতের আশঙ্কা আছে। মাওবাদী দমনে যে ঝুঁকি তাঁরা নিতে পারেন, তা এ ক্ষেত্রে সম্ভব নয় বলেই দিল্লিকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তারা। রাজ্য প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে তো আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছিল। এতে অনেক দিন ধরেই ওই সব বাহিনীর কর্তারা ক্ষুব্ধ।’’

যদিও এ নিয়ে রাজ্য পুলিশ কিছু বলতে নারাজ। রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা বলেন, ‘‘এমন কিছু জানা নেই।’’ নবান্নের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন ও আপত্তিকর।’’ রাজ্যকে অবশ্য কেন্দ্র জানিয়েছে, এই মুহূর্তে অন্যত্র কেন্দ্রীয় বাহিনী বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। পাহাড়ে রাজ্য বাহিনী চেয়েছিল, মূলত বন্‌ধের পরিস্থিতি সামাল দিতে। বেশ কিছু দিন হল বন্‌ধ উঠে গিয়েছে। এই অবস্থায় অত কেন্দ্রীয় বাহিনী পাহাড়ে বসিয়ে রাখা অপ্রয়োজনীয়।

পাহাড় থেকে ১০ কোম্পানি বাহিনী তোলার সিদ্ধান্ত হলেও পরে তা কমিয়ে ৭ কোম্পানি করা হয়। যে বাহিনী রয়ে গেল, তার মধ্যে তিনটি রাজ্যের ‘অপছন্দের’ এসএসবি-র। নবান্নের কর্তারা জানাচ্ছেন, ওই বাহিনী সে ভাবে কার্যকরই হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE