Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জাল ডাক্তার নিয়ে উড়ো ফোনের ঢল

ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে সকলেই এলাকার ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে অভিযোগ জানাতে চাইছেন। তদন্তকারীরা সেই সব ফোনের সূত্র ধরে বেশ কয়েকটি জায়গায় হানা দিয়েছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ভুয়ো চিকিৎসক সংক্রান্ত অভিযোগ মোটেই ঠিক নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৭ ০৪:০৮
Share: Save:

টেবিলে বসে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে কথা বলছিলেন কয়েক জন গোয়েন্দা অফিসার। কিন্তু একের পর এক ফোনের জ্বালায় কথা কি বলা যায়! মুহুর্মুহু বেজে উঠছে ফোন। আর সেই সব ফোনকল ধরতে গিয়ে আলোচনার ছন্দ যাচ্ছে কেটে।

ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে সকলেই এলাকার ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে অভিযোগ জানাতে চাইছেন। তদন্তকারীরা সেই সব ফোনের সূত্র ধরে বেশ কয়েকটি জায়গায় হানা দিয়েছিলেন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, ভুয়ো চিকিৎসক সংক্রান্ত অভিযোগ মোটেই ঠিক নয়।

সিআইডি সূত্রের খবর, শুধু ফোন নয়। ভবানী ভবনের কর্তাদের কাছেও একের পর এক ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে অভিযোগপত্র আসছে। প্রতিদিন গড়ে তিন থেকে চারটি অভিযোগপত্র আসছে গোয়েন্দাদের কাছে। তদন্তকারীদের দাবি, প্রথম দিকে ওই সব ফোন ও আবেদনপত্রের ভিত্তিতে খোঁজখবর করে দেখা যায়, কোনওটিই সত্য নয়। তাই এখন কোন আবেদন এলে তা সংশ্লিষ্ট জেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে

পুলিশের কাছে। এক সিআইডি-কর্তা বলেন, ‘‘ভুয়ো চিকিৎসক সংক্রান্ত যে-সব অভিযোগ আমাদের কাছে আসছে, তার অধিকাংশই ভুয়ো। অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেও অভিযোগ করা হচ্ছে।’’

গত মাসের প্রথম দিকে ভুয়ো ডাক্তারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। পরপর গ্রেফতার করা হয় তিন ভুয়ো সরকারি চিকিৎসককে। তার পরেই জালে পড়েন ভুয়ো চিকিৎসক তৈরির কারখানার মালিক এবং অল্টারনেটিভ মেডিসিন কাউন্সিলের সম্পাদক রমেশ বৈদ্য। ধৃতদের জেরা করে গ্রেফতার করা হয় কলকাতার দু’টি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত দুই ডাক্তার নরেন পাণ্ডে ও অজয় তিওয়ারিকে।

ভাবানী ভবন সূত্রের খবর, ভুয়ো চিকিৎসক কাণ্ডের তদন্ত শুরু হয় সিআইডি-র ডিএসপি পিনাকীরঞ্জন দাসের নেতৃত্বে। একের পর এক

ভুয়ো চিকিৎসকের সন্ধান মেলার পরেই তাঁর নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল তৈরি করেন সিআইডি-কর্তারা। এর মধ্যে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের তরফে জানানো হয়, রাজ্যে প্রায় ৫০০ ভুয়ো চিকিৎসক রয়েছেন।

কলকাতায় অল্টারনেটিভ মেডিসিন কাউন্সিল নামে একটি প্রতিষ্ঠানের তিনটি শাখার খোঁজ পান গোয়েন্দারা। সেখানে হানা দিয়ে তাঁরা জানতে পেরেছেন, তিন দশক ধরে ওই সংস্থা থেকে কয়েক হাজার ভুয়ো ডাক্তারের শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। সেই সব শংসাপত্রধারীরা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ডাক্তার সেজে রোগী দেখছেন। সিআইডি-র তদন্ত এবং ধরপাকড় শুরু হতেই ভবানী ভবনে সিআইডি দফতরে ফোনকলের স্রোত আসতে থাকে। তদন্তকারীদের দাবি, সংবাদমাধ্যমে জাল ডাক্তারের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে দিনে ১০-১২টি ফোন আসছে ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে। সেই সঙ্গে নামে-বেনামে ভুয়ো চিকিৎসক নিয়ে চিঠিও আসছে তদন্তকারীদের কাছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE