হাউহাউ করে কাঁদছিলেন মা।
এই কান্নাটা সাত ঘণ্টা আগের কান্নার থেকে আলাদা। দুপুরে ইডেন হাসপাতালের তিনতলার বারান্দার একটি হুইল চেয়ারে বসে যখন বাগমারির সরস্বতী নস্কর হাপুস নয়নে কাঁদছিলেন, তখন সেই কান্নাটা ছিল বিচ্ছেদের। সন্তান হারানোর।
রাত ১০টা নাগাদ ১৭ নম্বর বেডে বসে যখন তিনি কাঁদছিলেন, তখন পুলিশ তাঁর কোলে তুলে দিয়েছে এক শিশুকে। ‘‘আমার ছেলে’’ বলে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছিলেন প্রথম বার মা হওয়া সরস্বতী নস্কর। বুকে জড়িয়ে ধরতে কেঁদে উঠল শিশুটিও। এক নার্স বললেন, ‘‘আহা রে কতক্ষণ খায়নি দুধের শিশু!’’
শুক্রবারই সন্তানের জন্ম দিয়েছেন সরস্বতী। পাঁচ দিনের মধ্যে যে সেই ছেলেকে হারাতে হবে, ভাবেননি তিনি। বিকেলে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, ‘‘এ ভাবে সাহায্য করতে এসে কেউ যে ছেলে কেড়ে নেবে তা ভাবতে পারিনি। সবুজ শাড়ি পরা মহিলা এমন ভাবে এসে বললেন, আমার কোনও সন্দেহ হয়নি। বিশ্বাস করেই ঠকলাম।’’ নিজের কপালকেই দোষ দিচ্ছিলেন ওই গৃহবধু।
আরও পড়ুন: দিনে উধাও সদ্যোজাত, মিলল রাতে
ইডেন হাসপাতালের বারান্দায় তখন অন্য রোগীর আত্মীয়দের ভিড়। সবারই অভিযোগ, আয়া হিসেবে ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়ান বহু মহিলা। কার মনে কী রয়েছে কেউ জানে না। সরস্বতীর দাবি, ওই মহিলাকে তিনি আগে বার দুয়েক দেখেছেন। ‘‘আমার সঙ্গে বন্ধুর মতো কথা বলতেন ওই মহিলা। তাই ওঁর প্রতি বিশ্বাস একটা জন্মে গিয়েছিল।’’
তবে ধন্দ একটা রয়েই গিয়েছে। যে মহিলার কাছ থেকে শিশুটিকে শেষ পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে, তিনি থাকেন সরস্বতী নস্করের বাড়ির কাছেই। তা হলে সিসিটিভি ফুটেজে যখন তাঁকে দেখা গেল, তখনই কেন তাঁকে চিনতে পারলেন না কেউ? রাতে হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে সরস্বতীর শ্বশুর রবি নস্কর বলেন, ‘‘তখন আসলে মাথার ঠিক ছিল না, তাই সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিনতে পারিনি। পাড়ার একটা মেয়ে যে এমন করবে তা বুঝব কী করে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy