ফাইল চিত্র।
নারদ-তদন্তে একের পর এক নেতা-মন্ত্রীকে তলবেও তিনি ‘ভয়’ পাচ্ছেন না বলে বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই-ইডির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার নানা ভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করলে তিনি তা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেবেন বলে পাল্টা জবাব দিয়েছেন মমতা।
নেত্রীর বাড়িতে শুক্রবার দলের কোর কমিটির বৈঠকে থাকতে পারেননি কলকাতার মেয়র ও একাধিক দফতরের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের ডাকে এ দিনই তাঁকে সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হয়েছিল। দুপুরে বৈঠক যখন চলছে, শোভনকে তখন জেরা করছেন সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সেই তলব প্রসঙ্গ টেনেই মমতা বৈঠকে বলেন, শোভনকে সিবিআই বসিয়ে রেখেছে। এর আগে রোজভ্যালি-কাণ্ডে সিবিআই হেফাজতে থাকা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বা নারদ কাণ্ডে সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সুলতান আহমেদ, সৌগত রায় বা শুভেন্দু অধিকারীকে নোটিস পাঠানোরও উল্লেখ করেছেন মমতা। একের পর এক নেতাকে ডেকে তৃণমূলকে হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এর মোকাবিলা তিনি ‘টুসকি’তে করবেন বলে দলীয় নেতাদের জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: মেয়রের সঙ্গেই রক্ষীদের জেরা সিবিআইয়ের
নারদ-তদন্তে সিবিআই বারবার হেনস্থা করেও কিছু করতে পারবে না বলে নেত্রীর বিশ্বাস। যদিও নারদ মামলায় অভিযুক্ত নেতা-মন্ত্রীদের আইনজীবীরা অনেকেই মনে করেন, স্টিং অপারেশন কাণ্ড নিয়ে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় চিন্তার তেমন কিছু নেই। কিন্তু এই মামলার সূত্রে এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি) যে ভাবে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি মামলা শুরু করতে চলেছে তা নেতা-মন্ত্রীদের চাপে ফেলতে পারে বলে আইনজীবীদের একাংশের মত। যদিও নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত নেতা, সাংসদদেরও ভরসা দিয়েছেন নেত্রী। রাজনৈতিক ভাবে মোকাবিলা করতে না পেরে কেন্দ্র বারবার তৃণমূলের নেতাদের দুর্নীতি-মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেছেন নেত্রী। নারদ-কাণ্ডে অভিযুক্ত সুলতানের স্মরণে বৈঠকেই দু’মিনিট নীরবতা পালিত হয়। এই ভাবে ‘ভয়’ দেখানোর পরেও নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে বিজেপির উপর চাপ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। সে জন্যই জেলায় জেলায় বিজেপির বাড়বাড়ন্ত ঠেকাতে বুথস্তর থেকেই বাড়তি নজর দিতে বলেছেন তিনি। এবং কেন্দ্রে বিজেপি ক্ষমতায় না থাকলে তাঁদের নেতা-কর্মীদেরও একই ভাবে হেনস্থা হতে হবে বলে মমতা মন্তব্য করেছেন। তাঁর বক্তব্য, বিজেপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। এ কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী আসলে বোঝাতে চেয়েছেন, প্রয়োজনে ইটের বদলে পাটকেল নীতি নিতে পিছপা হবেন না তিনি।
সিবিআই-ইডি যখন তৃণমূল নেতাদের ‘হেনস্থা’ করতে তৎপর, তখন এ রাজ্যের সিআইডিও বিজেপি নেতাদের পাল্টা তলব শুরু করেছে। জলপাইগুড়ি শিশুচুরি কাণ্ডে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, বসিরহাটে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় প্রতরণার মামলায় ইতিমধ্যেই শমীক ভট্টাচার্যকে ডেকে পাঠিয়েছিল সিআইডি। সেই ধারাও যে চলবে তার ইঙ্গিতও এ দিন দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy