Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সবুজ মুকুট

উদ্ভাবনটা একান্তই নিজের তাগিদে। বাজারে লার্জ কম্বাইনড হারভেস্টরের দাম প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা। মিনি কম্বাইনড হারভেস্টরের দামও চার লক্ষের উপর।

মাটি চষে, ধানও কাটে এই নতুন যন্ত্র।

মাটি চষে, ধানও কাটে এই নতুন যন্ত্র।

সিরাজুল ইসলাম শাহ
ভাইওর, দক্ষিণ দিনাজপুর শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০১৫ ০২:০৯
Share: Save:

উদ্ভাবনটা একান্তই নিজের তাগিদে।

বাজারে লার্জ কম্বাইনড হারভেস্টরের দাম প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা। মিনি কম্বাইনড হারভেস্টরের দামও চার লক্ষের উপর। সামর্থে না কুলনোয় কম্বাইনড হারভেস্টরের ছবি আর বুকলেট জোগাড় করে বািড়তেই আস্ত একখানা কম্বাইন হারভেস্টর কাম পাওয়ার টিলার বানিয়ে ফেলেছেন বর্ষীয়ান কৃষক সিরাজুল ইসলাম শাহ।

এর সুবিধাটা হল, একের মধ্যে দুই। পাওয়ার টিলারে জমি কর্ষণ হবে। আবার ফ্রন্ট কাটিং ব্লেড-সহ আনুষঙ্গিক ব্যবস্থায় ধান কাটা যাবে।

বাজারে পাওয়ার টিলার কিনতে খরচ পড়ে দেড় লক্ষ টাকার মতো। তার সঙ্গে বিভিন্ন যন্ত্রাংশ লাগাতে খরচ পড়ছে আরও ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে নতুন এই যন্ত্র বানাতে খরচ পড়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৭০ হাজার।

যন্ত্রটি দিয়ে দ্রুত ধান কাটছেন সিরাজুল। তাঁর প্রায় সাত একর জমি। বোরো ও আমন ধান চাষের পাশাপাশি সর্ষে চাষ করেন তিনি। সমস্তটাই এক হাতে। দুই ছেলে থাকলেও তাঁরা অন্য পেশায় ষুক্ত। এদিকে, খেতমজুরের বড় অভাব। বিশেষ করে ধান কাটার মরসুমে খেতমজুর পাওয়া যায় না সহজে। আবার এই টালবাহানায় ধান কাটতে দেরি হওয়ার রেশ গিয়ে পড়ত সর্ষে চাষে। সেই অসুবিধা দূর করতেই কম্বাইন হারভেস্টর কাম পাওয়ার টিলার যন্ত্রটির উদ্ভাবন। এই যন্ত্রের সাহায্যে প্রতি দিন প্রায় দেড় একর জমির ধান কেটে ফেলতে পারেন সিরাজুল।

এহেন কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কৃষকরত্ন পুরস্কার পেয়েছেন সিরাজুল। আইসিআর-এর সম্মেলনে সম্বর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

তবে, এখনও পর্যন্ত ব্যবসায়িক ভাবে এই মডেল বাজারে বিক্রির পরিকল্পনা নেই সিরাজুলের। তাঁর কথায়,
‘‘টাকা কই যে অতিরিক্ত বানিয়ে বিক্রি করার কথা ভাবব। নিজেরটাই বানিয়েছি অনেক কষ্টে। চাষের জন্য আমার খুব কাজে লাগছে। এই যথেষ্ট।’’

দক্ষিণ দিনাজপুর কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র অবশ্য মডেলটিকে নিয়ে উৎসাহী। কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সুকান্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘তেলেঙ্গানা সরকার যন্ত্রটা নিয়ে উৎসাহ দেখিয়েছে। আমরা ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রেশনের জন্য কলকাতায় পাঠিয়েছি। যন্ত্র তৈরির জন্য নাবার্ডও আর্থিক ভাবে সাহায্য করার অাশ্বাস দিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE