Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

এ বার সরব শ্বশুর, পাল্টা শোভনেরও

এ দিনও রত্না তাঁর স্বামী শোভনের বিভিন্ন বক্তব্য খণ্ডন করতে গিয়ে দাবি করেন, বৈশাখী তাঁদের পারিবারিক বন্ধু নন।

কলকাতা পুরসভার বাজেট অধিবেশনে শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

কলকাতা পুরসভার বাজেট অধিবেশনে শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৮ ০৩:২৮
Share: Save:

সারাদিন ‘বলব না, বলব না’ করেও বুধবার শেষ বেলায় ফের মুখ খুললেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। পুরভবনে মেয়রের চেয়ারে বসে আরও একবার তাঁর ‘বান্ধবী ও শুভানুধ্যায়ী’ বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আস্থা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এড়ানোর চেষ্টা করলেন তাঁর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় ও শ্বশুর দুলাল দাসের আনা যাবতীয় অভিযোগ।

এ দিনও রত্না তাঁর স্বামী শোভনের বিভিন্ন বক্তব্য খণ্ডন করতে গিয়ে দাবি করেন, বৈশাখী তাঁদের পারিবারিক বন্ধু নন। এমনকী ইডি’র সমনের পরেও আইনি বিষয়ে বৈশাখীদেবীকে কোনও সাহায্য করতেও তিনি বলেননি। বরং শোভনবাবুর চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট দাদার সঙ্গে বসে তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করেছিলেন। তাঁর আরও দাবি, মেয়রের সঙ্গে বৈশাখীর যোগাযোগ ২০১৬ সালের শেষে। তাই দীর্ঘদিনের পারিবারিক বন্ধু হয়ে ওঠার কোনও প্রশ্নই নেই। লন্ডন থেকে তাঁকে না আসার পরামর্শ দেওয়ার পিছনেও বৈশাখীর ষড়যন্ত্র ছিল বলে রত্নার অভিযোগ।

জামাইয়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলে রত্নার বাবা মহেশতলার পুর চেয়ারম্যান দুলাল দাসের প্রশ্ন, ‘‘বৈশাখী যদি ওদের পারিবারিক বন্ধু হন, তা হলে রত্নার বিরুদ্ধে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করার সময় শোভনকে তিনি সংসার না ভাঙতে পরামর্শ দিয়েছিলেন কি? কেনই বা মেয়রের গোলপার্কের ফ্ল্যাট থেকে রাত তিনটের সময় বৈশাখীকে বের হতে দেখা যেত?’’ মেয়র বহুবার বলেছেন, রত্না তাঁর সব টাকা আত্মসাৎ ও নয়ছয় করেছেন। সেই প্রসঙ্গে দুলালবাবুর দাবি, তাঁর মেয়ে রত্নার নিজস্ব ঘোষিত যে আয় আছে, তাতে অন্য কারও আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন নেই। শাশুড়ি তৃণমূল বিধায়ক কস্তুরী দাসকে শোভন গোলপার্কের ফ্ল্যাটে ঢুকতে না দেওয়ার পর তিনি মানসিক আঘাতে অসুস্থ হন এবং পরে মারা যান বলেও দুলালবাবুর অভিযোগ।

আরও পড়ুন: ‘অত্যন্ত লোভী রত্নাদি’, মুখ খুলেই বিস্ফোরক বৈশাখী

সব কিছু নিয়ে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের ডেকে কথা বলেন মেয়র। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কীসের ষড়যন্ত্র? চিকিৎসার প্রয়োজনে রত্না লন্ডনে গিয়েছিলেন। বৈশাখীর কিছুমাত্র ভূমিকা নেই। আমার বিবাহ বিচ্ছেদের বিষয় নিয়েও বৈশাখী কখনও একটি কথা বলেনি। আমরা ইডি বা সিবিআই মামলার বিভিন্ন প্রয়োজনে অনেক জায়গায় গিয়েছি। বৈশাখী এবং রত্না দুজনেই সঙ্গে থাকত। বাচ্চারাও থাকত। ছবি তুলে তো রাখিনি, যে প্রমাণ দেব।’’ একই কথা বৈশাখীরও। শোভনের অভিযোগ, ‘‘ফাঁকা চেকে সই করে রত্নাকে দিতাম। কোনও দিন জানতেও চাইনি কেন টাকা তোলা হচ্ছে। আমি বিশ্বাসঘাতকতার শিকার।’’ কস্তুরী দাস প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘‘তাঁকে ফ্ল্যাটে ঢুকতে না দেওয়ার কথা সত্য নয়। অসুস্থতা দুর্ভাগ্যজনক। তবে তিনি যখন এসেছিলেন তার বেশ কিছুদিন পরে অসুস্থ হন।’’

আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতে শোভনকে দায়িত্বে রাখা নিয়ে চর্চা

বৈশাখীর সঙ্গে তাঁর ‘ঘনিষ্ঠতা’ নিয়ে দুলালবাবুর তোলা বিভিন্ন প্রশ্নে শোভনবাবুর জবাব, ‘‘এ সব আলোচনা করতেও রুচিতে বাধে।’’ মেয়র দাবি করেন, ‘‘সত্য একদিন উদ্ঘাটিত হবেই। আমি এখন একটু শান্তিতে কাটাতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE