Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রশ্ন ফাঁসের পিছনে রাজনীতি কি না প্রশ্ন

ময়নাগুড়ির কয়েক জন শিক্ষক জানান, এক সময়ে বাম সংগঠনে সক্রিয় সদস্য ছিলেন হরিদয়াল। রাজ্যে ক্ষমতা বদলের সঙ্গে সঙ্গে দল বদলান। তার পরেই জেলার শিক্ষাজগতে দ্রুত উত্থান। কারও কারও দাবি, এর পিছনে কাজ করেছে উচ্চ মাধ্যমিকে সুভাষনগর হাইস্কুলের নিয়মিত মেধাতালিকায় ঠাঁই পাওয়া।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়। —নিজস্ব চিত্র।

অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৮ ০৩:১৩
Share: Save:

সত্যি প্রশ্নফাঁস? নাকি হরিদয়াল রায়কে কাঠগড়ায় তোলার পিছনে রয়েছে জেলা তৃণমূলের দলীয় রাজনীতির প্যাঁচ?

যাঁরা হরিদয়ালকে দীর্ঘদিন ধরে দেখছেন, তাঁরা জানেন, কতটা দাপুটে ছিলেন ময়নাগুড়ি সুভাষনগর হাইস্কুলের এই প্রধান শিক্ষক। তাঁদেরই কেউ কেউ শোনাচ্ছেন বছর দুয়েক আগের একটি ঘটনা। জেলার বাছাই করা ছাত্রদের নিয়ে কলকাতায় যাওয়ার কথা ছিল হরিদয়াল ও অন্য কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকদের। হরিদয়াল এনজেপি স্টেশনে পৌঁছন জেলার তৎকালীন ডিআই-এর (ডিস্ট্রিক্ট ইন্সপেক্টর) গাড়িতে চেপে।

এই কথা পরে জেলার শিক্ষামহলে মুখে মুখে ঘুরেছিল। যেমন ঘুরেছিল হরিদয়ালের সঙ্গে জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মনের ঘনিষ্ঠতার কথা। অনেকেরই দাবি, এই ঘনিষ্ঠতার ফলেই স্কুলের পরিকাঠামো উন্নয়নে সাহায্য আদায় করেছিলেন তিনি।

ময়নাগুড়ির কয়েক জন শিক্ষক জানান, এক সময়ে বাম সংগঠনে সক্রিয় সদস্য ছিলেন হরিদয়াল। রাজ্যে ক্ষমতা বদলের সঙ্গে সঙ্গে দল বদলান। তার পরেই জেলার শিক্ষাজগতে দ্রুত উত্থান। কারও কারও দাবি, এর পিছনে কাজ করেছে উচ্চ মাধ্যমিকে সুভাষনগর হাইস্কুলের নিয়মিত মেধাতালিকায় ঠাঁই পাওয়া। এই সময়েই বিজয় বর্মনের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা। ২০১৪ সালে পান শিক্ষারত্ন। জেলা স্তরে শোনা যাচ্ছে, হরিদয়ালের লক্ষ্য ছিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পদ। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ময়নাগুড়ি আসনের প্রার্থী বাছার সময়ে যাতে তাঁর নাম ভাবা হয়, সেই চেষ্টাও চলছিল জোর কদমে।

তা হলে কি হরিদয়ালের উচ্চাকাঙ্ক্ষাই দলে তাঁর শত্রু তৈরি করেছিল? তিনি বলেছেন, ‘‘দলের এক জন নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হওয়ার জন্য আমাকে রাজনীতির শিকার হতে হবে, ভাবতেও পারছি না!’’ বিজয়ের বক্তব্য, ‘‘কোনও মন্তব্য করা ঠিক না। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে। তাতেই সব প্রমাণ হবে।’’ বিতর্ক শুরুর পরেই তৃণমূল হরিদয়ালের থেকে দূরত্ব তৈরি করে। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘উনি আমাদের সংগঠনের নেতা নন। সদস্যও নন।’’ তৃণমূল শিক্ষা সেলের জেলা সভাপতি সবিন্দ্রনাথ রায় এ দিনও বলেন, ‘‘হরিদয়ালবাবু কখনও শিক্ষা সেলের ব্লক সভাপতি ছিলেন না৷’’ তা হলে তৃণমূলের শিক্ষা সেলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সামনের সারিতে কেন থাকতেন হরিদয়াল? এর মধ্যেই, তাঁর বাড়িতে হামলা হতে পারে— আশঙ্কা প্রশাসনে। পাহারা বসেছে তাঁর ময়নাগুড়ির বাড়ির সামনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE