ক্লাবে-খেলায়-মেলায় অনুদানের তালিকায় এ বার রাখি উৎসবও। কয়েক কোটি টাকা খরচ করে রাখি উৎসব পালন করার কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য সরকার। এই ঘোষণা করা হল ঠিক সেই সময়েই, জেলায় জেলায় লক্ষ লক্ষ বন্যার্ত মানুষ যখন দিশাহারা।
ঠিক হয়েছে, কলকাতা থেকে শুরু করে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা প্রশাসন, ব্লক এবং পুরসভাগুলিতে সংস্কৃতি উৎসব খাতে ওই অনুষ্ঠানের টাকা জোগাবে রাজ্যের যুবকল্যাণ দফতর। ওই দফতর সূত্রের খবর, সংস্কৃতি দিবসের জন্য রাজ্যের ৩৪১টি ব্লক, ১২৭টি পুরসভা এবং সব ক’টি জেলা প্রশাসন ও নোটিফায়েড বা বিজ্ঞাপিত এলাকা-সহ কলকাতার সব ওয়ার্ডে ওই টাকা দেওয়া হবে। ব্লক, পুরসভা-পিছু দেওয়া হবে ২০ হাজার টাকা।
বৃহস্পতিবার কলকাতা পুরসভায় কাউন্সিলরদের এক কর্মশালায় এই কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে পুর-প্রশাসন। পুরসভার চেয়ারম্যান মালা রায় সেখানে উপস্থিত কাউন্সিলরদের জানান, সংস্কৃতি দিবস পালনের জন্য ওয়ার্ড-পিছু ২০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ সংস্কৃতি দিবস পালনের জন্য শুধু কলকাতা পুরসভার ১৪৪টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের প্রায় ২৯ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। তবে নগদ টাকায় রাখি কিনতে হবে না। তা সরবরাহ করবে যুব কল্যাণ দফতরই। সব মিলিয়ে খরচের পরিমাণ প্রায় চার কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন সরকারি অফিসারেরা। যুব কল্যাণ দফতরের এক আধিকারিক জানান, সারা রাজ্যের জন্য একসঙ্গে রাখি কেনা হবে। কয়েক লক্ষ রাখি লাগবে বলে মনে করছে সরকার। টেন্ডার বা দরপত্র ডেকেই রাখি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুব কল্যাণ দফতর।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ এক চলচ্চিত্র প্রযোজকের রাখি তৈরির ব্যবসা রয়েছে। দরপত্রের মাধ্যমে ওই সংস্থা সেই বরাত পাবে কি না, সেই প্রশ্নকে ঘিরে ইতিমধ্যেই গুঞ্জন বেশ জোরদার। ২৮ অগস্ট রাখিবন্ধন দিবস। নবান্নের খবর, মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই ওই দিন দলের কর্মী-সমর্থকদের রাখি পড়রয়ে মিষ্টিমুখ করান। এত দিন দলগত ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ ছিল। এ বার তা রাজ্য জুড়ে সরকারি ভাবে পালন করতে আগ্রহী মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই এ বার সংস্কৃতি দিবস পালন করা হচ্ছে বলে যুব কল্যাণ দফতর সূত্রের খবর। ওই দফতরের এক আধিকারিক জানান, কলকাতার ক্ষেত্রে টাকা দেওয়া হবে পুর কমিশনারের কাছে। আর রাজ্যের বাকি অংশের জন্য জেলাশাসকদের কাছে ওই টাকা পাঠানো হবে।
কী করতে হবে ওই টাকায়? ওই আধিকারিক জানান, টাকা দেওয়া হচ্ছে মূলত মঞ্চ, মাইক ও মিষ্টি কেনার জন্যই। রাখি সরবরাহ করা হবে যুব কল্যাণ দফতর থেকেই। ওই খবর শুনে এ দিন পুরসভার বহু তৃণমূল কাউন্সিলরকেই যথেষ্ট উৎসাহিত দেখিয়েছে। এমনকী কলকাতা পুরসভার বিরোধী বাম, বিজেপি, কংগ্রেসের কাউন্সিলরেরাও বিরূপ মন্তব্য করেননি। এক পুর আমলা জানান, ওয়ার্ড-পিছু ২০ হাজার টাকা প্রতিটি বরোয় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানের পরে সেই টাকার খরচের হিসেব দিতে হবে বরো কর্তৃপক্ষকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy