Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সঞ্চয় প্রকল্প বাঁচাতে বিকল্পের খোঁজে নবান্ন

বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির চড়া সুদের প্রলোভনের ফাঁদ থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে বছর চারেক আগে একটি ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প (সেফ সেভিংস স্কিম) চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৪
Share: Save:

বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির চড়া সুদের প্রলোভনের ফাঁদ থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে বছর চারেক আগে একটি ক্ষুদ্র সঞ্চয় প্রকল্প (সেফ সেভিংস স্কিম) চালু করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরকারের ঘোষণা মতো অন্যান্য ব্যাঙ্কের তুলনায় বেশি সুদ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও রাজ্যের এই প্রকল্প আমানতকারীদের মনে দাগ কাটতে পারেনি। পরিস্থিতি বুঝে এখন বিকল্প পথের সন্ধান শুরু করেছে নবান্ন। তবে প্রশাসন সূত্রের খবর, প্রায় কোনও ব্যাঙ্কই তাদের ব্যবসা ছেড়ে রাজ্যের প্রকল্পে সামিল হতে চাইছে না।

সেফ সেভিংস স্কিমে এক বছর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত মেয়াদি আমানতে সুদের হার ৯% থেকে ৯.২৫%। যা অন্য যে কোনও সরকারি সঞ্চয় প্রকল্পের তুলনায় বেশি। একমাত্র ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার (ইউবিআই) মাধ্যমেই প্রকল্পটিতে টাকা জমা করা যায়। পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন অর্থ নিগম সূত্রে খবর, গত চার বছরে প্রকল্পে জমা পড়েছে পাঁচ কোটি টাকার মতো। ফলে প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ নিয়ে অর্থ দফতরেই প্রশ্ন উঠেছে।

কিন্তু কেন সরকারি সিলমোহর আর সুদ বেশি হওয়া সত্ত্বেও এই প্রকল্পটি মার খাচ্ছে, তা চুলচেরা বিশ্লেষণ করে দেখেছেন প্রশাসনের কর্তারা। প্রকল্পের ব্যর্থতা নিয়ে অর্থ দফতরের কাছে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছে নিগম। তাতে বলা হয়েছে, রাজ্যের সর্বত্র ইউবিআই-এর শাখা নেই। তাই বহু মানুষ এই প্রকল্পের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। স্টেট ব্যাঙ্ক, ইলাহাবাদ ব্যাঙ্ক, ইউকোর মতো ব্যাঙ্কগুলি রাজ্যের এই প্রকল্পে সামিল হতে রাজি হয়নি। পাশাপাশি, প্রকল্পটি নিয়ে তেমন প্রচারও নেই। রয়েছে পেশাদারিত্বের অভাব। ফলে আকর্ষণীয় সুদ দিলেও এই প্রকল্পে টাকা জমানোর ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

কেন অন্যান্য ব্যাঙ্ক রাজি হচ্ছে না, তার কারণ ব্যাখ্যা করে নিগমের এক কর্তা জানান, প্রতিযোগিতার বাজারে প্রতিটি ব্যাঙ্কই নিজেদের প্রকল্প বেচতে চাইবে। ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের পাশাপাশি আরও দু’টি ব্যাঙ্ক এই প্রকল্পে সামিল হতে প্রাথমিক ভাবে রাজি হলেও তাতে লাভ হয়নি। কারণ, ব্যাঙ্কিং শিল্পে মেয়াদি আমানতের উপরে সুদ ক্রমশই কমছে। এই অবস্থায় রাজ্যের প্রকল্পে সুদের হার বেশি হলেও তা বেচতে নারাজ ব্যাঙ্কগুলি।

এই প্রেক্ষিতে সরকার ঠিক করেছে, শুধু মাত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপর নির্ভর না করে বিকল্প উপায় বের করতে হবে। পথের সন্ধান দিতে একটি রূপরেখো তৈরি করা হচ্ছে। হতে পারে, নিজেরাই এজেন্ট নিয়োগ করে গ্রামে গ্রামে পৌঁছে যাবে নিগম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Small saving scheme State Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE