Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কেন্দ্রের যোগে বিয়োগ রাজ্যের

তবে এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে তাতে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি রানি রাসমণি রোডে আরএসএসের যোগাভ্যাসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন। সেখানে থাকতে পারেন কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৭ ০৩:২৭
Share: Save:

কেন্দ্রের যোগ-এ বিয়োগ নীতির পথেই হাঁটতে চাইছে রাজ্য।

আগামী ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ঘটা করে পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি নিজে হাজির হবেন লখনউয়ে। কিন্তু দিল্লির প্রস্তাবিত যোগ দিবস পালনের কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হচ্ছে না রাজ্য। রাজ্যের কোনও মন্ত্রীও কোনও অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন না।

তবে এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে তাতে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি রানি রাসমণি রোডে আরএসএসের যোগাভ্যাসের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন। সেখানে থাকতে পারেন কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা যাবেন দেশের অন্য প্রান্তেও।

বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকারি অফিস সর্বত্র যোগাভ্যাসের নিদান দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও লখনউয়ে সে দিন প্রকাশ্যে ‘যোগা’ করবেন। সেই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে স্কুল পড়ুয়াদের একটি দল পাঠাতে বলেছিল এনসিইআরটি। একইভাবে ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের চিঠি লিখে যোগ দিবস পালনের জন্য অনুরোধ করেছে। কেন্দ্রের আয়ুষ বিভাগ এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রকও রাজ্যকে একই অনুরোধ করেছে।

আরও পড়ুন: সর্বদলে কিছু স্বস্তি, কিছু কাঁটা

তবে রাজ্য কেন্দ্রীয় ভাবে এ নিয়ে কোনও অনুষ্ঠান করছে না। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘যোগাভ্যাস ভাল। যে যেমন পারবে করবে। এ নিয়ে হইচইয়ের তো কিছু নেই।’’ রাজ্যের স্বাস্থ্য(আয়ুষ) প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি।’’ যোগ দিবসের দিন মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে। তবে কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে কেউ যোগাভ্যাস করলে তা নিয়ে সরকারের বলার কিছু নেই বলে জানাচ্ছেন নবান্নের এক কর্তা।

আন্তর্জাতিক যোগ দিবসে বিভিন্ন স্থানে যোগাভ্যাস করাতে সেন্ট্রাল কাউন্সিল ফর রিসার্চ ইন যোগা অ্যান্ড নেচারোপ্যাথির তরফে দেশের প্রত্যেক জেলায় যোগ শিক্ষক তৈরির কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। প্রশিক্ষণ দিতে অর্থ বরাদ্দও করেছে কেন্দ্র। অন্য রাজ্যে সরকারি প্রতিষ্ঠান বা বিশ্ববিদ্যালয় সেই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। এ রাজ্যে বাবা রামদেবের ভারত স্বাভিমান ন্যাস, রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কয়েকটি সংস্থা সেই প্রশিক্ষণ দিয়েছে। কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেনি। বিরোধের আভাস ছিল তখনই।

কেন্দ্র একটি যোগাভ্যাসের প্রটোকল বুকলেটও প্রকাশ করেছে। তাও বিলি হয়নি রাজ্যে। এক কর্তা জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজে শরীর চর্চা নিয়ে সচেতন। নিয়ম করে তিনি হাঁটেন, শরীর চর্চা করেন। নবান্নেও মাল্টি জিম বসাচ্ছেন তিনি। মন্ত্রী-আমলাদের ফিটনেস নিয়েও সর্বক্ষণ সচেতন করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এও মনে করেন, মানুষ কীভাবে নিজের শরীর সুস্থ রাখবেন, তা তাঁদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কে কী খাবে, কী পরবে তা যেমন অন্য কেউ ঠিক করতে পারেন না, তেমনই সারা দেশে এক দিনে একইভাবে শরীর চর্চা করতে হবে তার কোনও মানে নেই। কেন্দ্রীয় সরকার জোর করে এ সব চাপিয়ে দিতে চাইছে। যা মানবে না সরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE