Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

হিসেব নিতে শীঘ্র অডিট দল পাহাড়ে

জিটিএ সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহেই বিশেষ অডিট দল দার্জিলিং পৌঁছে যাবে। শুধু নথিপত্র নয়, বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজকর্ম সরেজমিনে খতিয়েও দেখবেন রাজ্যের অর্থ দফতরের বাছাই করা অফিসারেরা।

লালকুঠিতে জিটিএ দফতরে বিনয় তামাঙ্গ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

লালকুঠিতে জিটিএ দফতরে বিনয় তামাঙ্গ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

কিশোর সাহা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০৪
Share: Save:

গত তিন আর্থিক বছরে জিটিএ-র জন্য বরাদ্দ হয়েছিল ১৬০০ কোটি টাকা। এই বরাদ্দ কোথায়, কী ভাবে খরচ হয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল রাজ্যের বিশেষ অডিট দল। কিন্তু অডিটের শুরুতেই গোলমাল, সংঘর্ষ এবং দফতরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় কাজ ব্যাহত হয়। এ বারে বিনয় তামাঙ্গের নেতৃত্বে জিটিএ কাজ শুরু করার পরে ফের সেই অডিট দলও কাজে নামতে চলেছে।

জিটিএ সূত্রের খবর, সব ঠিক থাকলে চলতি সপ্তাহেই বিশেষ অডিট দল দার্জিলিং পৌঁছে যাবে। শুধু নথিপত্র নয়, বেশ কয়েকটি বড় প্রকল্পের কাজকর্ম সরেজমিনে খতিয়েও দেখবেন রাজ্যের অর্থ দফতরের বাছাই করা অফিসারেরা। জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ বলেছেন, ‘‘বিশেষ অডিট দলকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে। আমরাও চাই কোথাও কেউ কারচুপি করে থাকলে তা সামনে আসুক।’’

অর্থ দফতরের ওই শীর্ষ কর্তা জানান, ২০১৪-১৫ থেকে ২০১৬-১৭ সাল পর্যন্ত তিন আর্থিক বছরে রাজ্যের থেকে প্রায় হাজার কোটি ও কেন্দ্রের থেকে ছ’শো কোটি টাকা পেয়েছিল জিটিএ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খরচের প্রমাণপত্র জমা দেয়নি জিটিএ। অনেক ক্ষেত্রেই দুর্নীতি ধরা পড়ার আশঙ্কা করছেন পাহাড়বাসীরাও।

কিন্তু গত জুন মাসে রাজ্য সরকার যখন বিশেষ অডিটের নির্দেশ দেয়, তার পর থেকে কাজ একচুলও এগোনো সম্ভব হয়নি। তদন্ত শুরু হওয়ার আগের দিনই কোথাও নথি বা ফাইল পোড়ানো হয়, কোথাও পুড়িয়ে দেওয়া হয় আস্ত অফিস ঘরই। কোথাও আবার অডিটের দিন পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়। ফলে তদন্তকারীরা অফিসে পৌঁছতেই পারেননি।

সোমবার থেকে জিটিএ-র কেয়ারটেকার বোর্ড পুরোদমে কাজ শুরু করতেই তাই তদন্তের প্রসঙ্গ ওঠে। সূত্রের খবর, অডিটের দল শীঘ্রই পাহাড়ে আসতে পারে জেনে জিএনএলএফ, জাপ এবং গোর্খা লিগের মতো বিরোধী দলগুলি দাবি করেছে, ওই তিন আর্থিক বছরে জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগের কাজকর্মও যেন অডিটের আওতা থেকে বাদ না যায়। ওই সময়ে দফতরটি ছিল অনীত থাপার হাতে। তিন বছরে অন্তত ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল দফতরের জন্য। এই টাকা কী ভাবে খরচ হয়েছে, তা নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছে বিরোধীরা। একই ভাবে রোহিণীতে রাস্তা সারাতে ৩০ কোটির বরাত, গুরুঙ্গের খাসতালুক জামুনি, রেলি, বেলটাড়ে তিনটি ওয়াটার পার্কের প্রকল্প বাবদ প্রায় ৩০ কোটি টাকা-সহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কথাও সুনির্দিষ্ট ভাবে উল্লেখ করছেন বিরোধীরা।

ঘটনাচক্রে, এ দিনই বেশ কিছু বকেয়া বিলে সই করেছেন বিনয়। সব মিলিয়ে সেটা মোটা অঙ্কের। যাঁরা বিল পেলেন, তাঁদের মধ্যে বিমল গুরুঙ্গপন্থী বেশ কয়েক জন ঠিকাদারও আছেন। মোর্চা সূত্রে বলা হচ্ছে, এই ভাবে গুরুঙ্গপন্থী ঠিকাদারদেরও কাছে টানার বার্তা দিলেন বিনয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE