Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ল্যাব্রাডরকে টেক্কা দিয়ে সেরা নেড়ি

পুলিশে কুকুর মানেই জার্মান শেফার্ড, ল্যাব্রাডরের মতো বিলিতিরা। কিন্তু সেই ধারায় বদল এনে এ বার দেশি-কেও সারমেয় বাহিনীতে সামিল করতে চলেছে রাজ্য সরকার। ব্যারাকপুরের স্বামী বিবেকানন্দ পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিলিতি কুকুরদের সঙ্গে তাই ঠাঁই হয়েছে আশা নামে এক নেড়িরও।

বেনজির: প্রশিক্ষক ও বাহিনীর অন্য দুই কুকুরের সঙ্গে আশা (ডান দিকে)। ব্যারাকপুরে পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র

বেনজির: প্রশিক্ষক ও বাহিনীর অন্য দুই কুকুরের সঙ্গে আশা (ডান দিকে)। ব্যারাকপুরে পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৬
Share: Save:

তথাকথিত বংশকৌলীন্যে সহপাঠীদের ধারেকাছে আসে না সে। কিন্তু প্রশিক্ষণে সবার সেরা ‘আশা’!

পুলিশে কুকুর মানেই জার্মান শেফার্ড, ল্যাব্রাডরের মতো বিলিতিরা। কিন্তু সেই ধারায় বদল এনে এ বার দেশি-কেও সারমেয় বাহিনীতে সামিল করতে চলেছে রাজ্য সরকার। ব্যারাকপুরের স্বামী বিবেকানন্দ পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিলিতি কুকুরদের সঙ্গে তাই ঠাঁই হয়েছে আশা নামে এক নেড়িরও।

ছ’মাসের প্রশিক্ষণ শেষে পুলিশই বলছে, দু’পায়ে দাঁড়িয়ে স্যালুট ঠুকতে কিংবা গন্ধ শুঁকে সন্দেহজনক বিস্ফোরক খুঁজতে ওস্তাদ হয়ে উঠেছে এক বছরের এই দেশি কুকুরটি। তার এমনই মেজাজ দেখে বাঘা চেহারার সহপাঠীরাও তটস্থ থাকে।

কাশ্মীরে একাধিক সেনাবাহিনীর ছাউনিতে পাহারায় রাখা হয় দেশি কুকুরদের। সেনাকর্তাদের একাংশের মতে, পাহাড়ি এলাকায়, বিরূপ আবহাওয়ায় দেশিরা যে-ভাবে রাত জেগে পাহারাদারি করতে পারে, বিলিতিরা তা পারবে না। প্রশিক্ষণেও নেড়িরা চৌকস। ব্যারাকপুরের
নেড়ির ‘কীর্তি’ দেখে রাজ্য পুলিশের কর্তারাও ভাবছেন, বিলিতিদের সঙ্গে সঙ্গে দেশিদেরও এ বার বাহিনীতে জায়গা দেওয়া উচিত।

পুলিশের সারমেয় বাহিনীতে কী ভাবে ঠাঁই হল আশার?

পুলিশি সূত্রের খবর, আশার জন্ম লাটবাগানের চৌহদ্দিতেই। শৈশবেই তার দুরন্তপনা দেখে মনে ধরে কিছু পুলিশকর্মীর। এমন কুকুরকে কাজে লাগানো যায় কি না, সেটা যাচাই করার প্রস্তাব পৌঁছে যায় পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধিকর্তা কারিয়াপ্পা জয়রামনের কাছে। কুকুরছানাটির ‘প্রতিভা’ ধরা পড়ে তাঁর অভিজ্ঞ চোখে। রাস্তা থেকে তুলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কুকুরদের আবাসে। নাম দেওয়া হয় আশা। প্রতিষেধকের কোর্স শেষ করে ছ’মাস পরে বাহিনীর প্রশিক্ষণে যোগ দেয় সে।

আরও পড়ুন: চিড়িয়াখানার আঁতুড় ছেড়ে বনপথে দুই প্যান্ডা

পুলিশ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র সূত্রের দাবি, বিলিতিদের সঙ্গে সমানে-সমানে টক্কর দিচ্ছে আশা। নিতম্বে ভর দিয়ে যে-স্যালুট ঠুকতে ল্যাব্রাডর, জার্মান শেফার্ডদের কালঘাম ছুটে যায়, লিকলিকে চেহারায় আশা সেই কসরত দেখায় অনায়াসে। পুলিশে এক-একটি কুকুরকে এক-এক ধরনের কাজে লাগানো হয়। আশাকে বিস্ফোরক চেনার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সে শুধু ওই কাজই করবে। খুব তাড়াতাড়ি পোস্টিং হবে তার।

এ রাজ্যে নেড়িদের সংসারে নতুন আশার নাম এখন ‘আশা’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE