Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সস্তার হোটেল, হোম-স্টে পাবে সরকারি সুবিধা

সরকার খতিয়ে দেখেছে, এত দিন সরকারি সহায়তা ও ছাড়ের সুবিধে যারা পেয়েছে, সেই সব বড় ও বিলাসবহুল হোটেল-রিসর্ট এক রকম মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। অথচ ওই সব শ্রেণিকে পর্যটনের স্বাদ দেওয়াও সরকারের লক্ষ্য। তাই, উৎসাহ নীতি ঢেলে সাজা হচ্ছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুরবেক বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৫
Share: Save:

এত দিন সুফল পেয়েছে কেবল বড় বড় হোটেল, রিসর্ট। তা-ও আবার সে সব মূলত শহর ও শহরাঞ্চলের। কিন্তু জঙ্গলমহলের ঝিলিমিলি বা ডুয়ার্সের শালকুমারের মতো প্রত্যন্ত এলাকায় কেউ কম খরচের হোটেল, ইকো রিসর্ট, এমনকী হোম-স্টে করলেও যাতে সেগুলি কয়েকটি ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় ও সহায়তা পায়, সেই লক্ষ্যে পর্যটনে নতুন উৎসাহ নীতি বা ইনসেনটিভ পলিসি আনতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যে পর্যটন শিল্পের প্রসার করতে চেয়েই এই পদক্ষেপ বলে পর্যটন দফতর সূত্রের খবর।

পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘এখনও তেমন পরিচিত নয়, সে রকম এলাকায় বাজেট হোটেল, নেচার রিসর্ট, এমনকী হোম-স্টে যাতে উৎসাহ নীতি অনুযায়ী সরকারের বিশেষ ছাড় ও সুযোগ-সুবিধে পায়, মুখ্যমন্ত্রী সেটা চাইছেন। পর্যটনের ক্ষেত্রে নতুন উৎসাহ নীতি দু-তিন মাসের মধ্যে চূড়ান্ত হবে।’’

মন্ত্রী জানান, সরকার খতিয়ে দেখেছে, এত দিন সরকারি সহায়তা ও ছাড়ের সুবিধে যারা পেয়েছে, সেই সব বড় ও বিলাসবহুল হোটেল-রিসর্ট এক রকম মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে। অথচ ওই সব শ্রেণিকে পর্যটনের স্বাদ দেওয়াও সরকারের লক্ষ্য। তাই, উৎসাহ নীতি ঢেলে সাজা হচ্ছে।

‘ক্যাপিটাল ইনসেনটিভ সাবসিডি’ হিসেবে হোটেল বা রিসর্ট নির্মাণের খরচের একাংশ এবং সেই সঙ্গে আসবাব-বাসনপত্র-ছুরি-কাঁটা-চামচ কেনার খরচ ও আধুনিক রান্নাঘর তৈরি ও তার বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনার টাকার খরচের কিছুটা সরকার এককালীন সাহায্য বাবদ দেয়। তা ছাড়া, ব্যাঙ্ক থেকে নেওয়া ঋণে সুদের একটা পরিমাণ ও বিদ্যুতের বিল একটা সময় পর্যন্ত সরকারের তরফে মেটানো উৎসাহ নীতির অঙ্গ।

কিন্তু পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, মূলত কলকাতা, শিলিগুড়ি ও দুর্গাপুরে তৈরি হোটেলের মালিকেরা এ যাবত এই সুবিধা নিয়ে এসেছেন। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ছোটখাটো হোটেল, রিসর্ট যাঁরা তৈরি করেছেন বা করতে চান, তাঁরা এই বিষয়টি জানতেন না। আসলে তাঁরাও যে সরকারি ছাড় ও সুবিধে পেতে পারেন, সেটা সরকারের তরফে তেমন প্রচার করা হয়নি। কিছু পদ্ধতিগত জটিলতা ছিল দরখাস্ত করার ক্ষেত্রেও।’’ যে কারণে জঙ্গলমহল শান্ত হওয়ার পর ছ’বছর কেটে গেলেও ওই অঞ্চলে পুরুলিয়ায় দু-একটি ছাড়া অন্য কোথাও কোনও বেসরকারি রিসর্ট বা বাজেট হোটেল তৈরি হয়নি, এমনটা পর্যটন দফতরের কর্তাদের একাংশ মনে করেন।

পর্যটন দফতরের ওই কর্তার কথায়, ‘‘এত দিন হোম-স্টে নীতি সরকারের উৎসাহ নীতির মধ্যে ছিল না। প্রথমে আলাদা ভাবে তৈরি ওই হোম-স্টে নীতি প্রস্তাবাকারে অর্থ দফতরকে পাঠানোর পর তারা কয়েকটি ব্যাপারে আপত্তি জানায়। এ বার অবশ্য সামগ্রিক ভাবে উৎসাহ নীতির আওতায় আনা হচ্ছে হোম-স্টেকেও।’’ শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি কিংবা ফুলডাঙায় কিছু হোম-স্টে লজ-রিসর্ট কিংবা হোটেলের চেয়ে পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় অনেক এগিয়ে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সেগুলি সরকারি সাহায্য বা ছাড় কিছুই পায়নি। নতুন উৎসাহ নীতিতে সেগুলি যেমন সুবিধা পাবে, তেমনই নতুন নতুন হোম-স্টে হবে বলে পর্যটন দফতরের আশা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE