Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

পড়ায় মন দিন, ফেল-ব্যাধিতে নিদান পার্থের

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পার্ট-১ পরীক্ষায় কলা বিভাগে রেকর্ড ফেলের খবর শুনে এই ছিল তাঁর তিক্ত প্রতিক্রিয়া। ফল-বিতর্ক নিয়ে বৃহস্পতিবার আচার্যের সুরেই সুর মেলালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানালেন পড়ুয়াদের নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৪
Share: Save:

ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস না-করলে ফেল করবেন বলে মন্তব্য করেছিলেন আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পার্ট-১ পরীক্ষায় কলা বিভাগে রেকর্ড ফেলের খবর শুনে এই ছিল তাঁর তিক্ত প্রতিক্রিয়া। ফল-বিতর্ক নিয়ে বৃহস্পতিবার আচার্যের সুরেই সুর মেলালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জানালেন পড়ুয়াদের নিয়মিত পড়াশোনা করতে হবে।

এ দিন বিধানসভায় নিজের ঘরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থ যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে, আমরা সেটা নিশ্চয়ই দেখব। কিন্তু পঠনপাঠনের উপরে পড়ুয়াদের জোর দিতেই হবে।’’ যাঁরা ফেল করেছেন, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় বসার সুযোগ তাঁরা পাবেন কি না, সেই প্রশ্ন জোরদার হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, এই সম্ভাবনা তিনি উড়িয়ে দিচ্ছেন না। আগেও এমন পরিস্থতিতে সাপ্লিমেন্টারির ব্যবস্থা ছিল বলে জানান তিনি। বস্তুত, ফেল-জট কাটাতে উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে যে-দু’টি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, তার একটি হল সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা নেওয়া।

পরিবর্তিত নিয়মে এ বারেই প্রথম পরীক্ষা হয় স্নাতক স্তরে। পার্ট-১ বিএ-তে অর্ধেক পরীক্ষার্থীও পাশ করতে পারেননি। ২০১৬-র পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৭৫ শতাংশ। এ বার সেটা কমে হয়েছে ৪২.৫০ শতাংশ। বিজ্ঞানে সেই হার ৮৫ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৭১ শতাংশ। শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন পড়ুয়ারা সব বিষয়েই পাশ করবেন না?

ফলাফল প্রকাশের পরেই শুরু হয়ে যায় ছাত্র-বিক্ষোভ। পড়ুয়া এবং বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের বক্তব্য, নতুন নিয়ম তাঁরা জানতেনই না। এমন শোচনীয় ফল হল কেন, তা জানতে শিক্ষামন্ত্রী ডেকে পাঠান উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য আধিকারিকদের। শিক্ষা সূত্রের খবর, অকৃতকার্য পড়ুয়াদের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়া যায় কি না, সেই নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে কর্তৃপক্ষের কথা হয়েছিল। তার পরে উচ্চশিক্ষা দফতর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের কাছে দু’টি প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। প্রথম প্রস্তাবে বলা হয়, যাঁরা ফেল করেছেন, সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষায় তাঁদের বসার সুযোগ দেওয়া হোক। দ্বিতীয়ত, নতুন পরীক্ষাবিধি চলতি বছরে চালু না-করে বলবৎ হোক আগামী বছরে।

শিক্ষামন্ত্রী এ দিন জানান, পড়ুয়ারা অনেকে ভাল ফল করতে পারেননি। কিন্তু শুধু নিয়ম পরিবর্তনই তার কারণ নয়। নিয়মিত পঠনপাঠনের বিষয়টিও এর সঙ্গে জড়িত। তিনি মনে করিয়ে দেন, এই ধরনের নতুন নিয়ম চালু হতেই পারে। চয়েস বেস্‌ড ক্রেডিট সিস্টেম (সিবিসিএস) চালু হচ্ছে। প্রতি বছরই অভিযোগ দেখা সম্ভব নয়। তাঁর নিদান, পড়ুয়ারা পড়াশোনা নিয়মিত করুন।

রেকর্ড ফেল নিয়ে ক্যাম্পাসে টানা বিক্ষোভের জন্য শিক্ষামন্ত্রী এ দিনও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ফেল-জট কাটাতে ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা। মন্ত্রীর আশা, বিশ্ববিদ্যালয় নিশ্চয়ই এমন সিদ্ধান্ত নেবে, যা ছাত্রছাত্রীদের এগিয়ে যাওয়ার অনুকূল হবে, পরবর্তী পড়াশোনার সুযোগ অবারিত করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE