Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দেশে অভিন্ন বিজ্ঞান পাঠে রাজি সংসদ

দেশের বিভিন্ন বোর্ডের বিজ্ঞান পাঠ্যক্রমে অসামঞ্জস্য কাটিয়ে উঠতে চায় কেন্দ্র। তাই তারা চায়, সব বোর্ডেই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী বিজ্ঞান পড়ানো হোক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:২৫
Share: Save:

দেশের বিভিন্ন বোর্ডের বিজ্ঞান পাঠ্যক্রমে অসামঞ্জস্য কাটিয়ে উঠতে চায় কেন্দ্র। তাই তারা চায়, সব বোর্ডেই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত অভিন্ন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী বিজ্ঞান পড়ানো হোক। পড়ানো হোক ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল অ্যান্ড রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং বা এনসিইআরটি-র পাঠ্যক্রমই। একই সঙ্গে কেন্দ্র চায়, এনসিইআরটি প্রকাশিত বই-ই পড়ুক সারা দেশের নবম-দ্বাদশের সব বিজ্ঞান পড়ুয়া।

এই ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। রাজ্য সরকার অবশ্য বিষয়টি খতিয়ে না-দেখে মত জানাচ্ছে না।

সোমবার দিল্লিতে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ডাকা বৈঠকে ৩০টি শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধিরা অভিন্ন বিজ্ঞান পাঠ্যক্রম চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কেন্দ্রের যুক্তি, অভিন্ন পাঠ্যক্রমে একই সংস্থার বই পড়লে সব বোর্ডের পড়ুয়ারাই সর্বভারতীয় পরীক্ষায় সমান সুযোগ পাবে। পাঠ্যক্রমে ভিন্নতার দরুন কেউ কারও থেকে পিছিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছে, এমনটা আর ঘটবে না।

মেডিক্যালে ভর্তির জন্য বিভিন্ন রাজ্যের আলাদা প্রবেশিকা এ বছর থেকে বন্ধ। নেওয়া হবে সর্বভারতীয় অভিন্ন প্রবেশিকা। ইঞ্জিনিয়ারিংয়েও শুধু সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে। রাজ্য সরকার অবশ্য এর বিরোধিতা করেছে। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এ রাজ্যের বোর্ডে যে-পাঠ্যক্রম চালু আছে, তাতে এখানকার পড়ুয়াদের পক্ষে সর্বভারতীয় পরীক্ষায় এঁটে ওঠা কঠিন হবে। দিল্লিতে সোমবারের বৈঠকে নবম-দ্বাদশে একই বিজ্ঞান পাঠ্যক্রম চালু করার যে-সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্র আগে এই ব্যাপারে আমাদের কাছে নির্দেশিকা পাঠাক। সব কিছু খতিয়ে দেখে বক্তব্য জানানো হবে।’’

২০১৩ সালে পাঠ্যক্রম পরিমার্জন করেছিল উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সর্বভারতীয় বোর্ডগুলির পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সমতা রেখে বদলানো হয়েছিল বিজ্ঞানের পাঠ্যক্রম। সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস বলেন, ‘‘সর্বভারতীয় পরীক্ষায় আমাদের ছেলেমেয়েরা যাতে এঁটে উঠতে পারে, সেই জন্য কিছু দিন আগে আমরা এনসিইআরটি-র পাঠ্যক্রমের আদলে সহায়ক বইও প্রকাশ করেছিলাম। এ বার এক রকম পাঠ্যক্রম হলে তো ভালই হবে।’’ তিনি জানান, ট্রেন দেরি করায় তাঁদের প্রতিনিধি ঠিক সময়ে দিল্লির ওই বৈঠকে পৌঁছতে পারেননি। তাই বিষয়টি আরও বিস্তারিত ভাবে জেনে নিতে চাইছেন তাঁরা।

সোমবারের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রশ্ন কঠিন বা পাঠ্যক্রম-বহির্ভূত হলে পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত নম্বর দেওয়ার যে-রেওয়াজ আছে, এ বার তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর ‘গ্রেস মার্কস’ দিয়ে পাশ করানো হলে গ্রেস নম্বর উল্লেখ করতে হবে আসল নম্বরের পাশে। দু’টি বিষয়েরই বিরোধিতা করে সংসদ-প্রধান জানান, এগুলো করা হয় ছাত্র-স্বার্থেই। তাই তাঁরা এগুলো বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষপাতী নন।

মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর মঙ্গলবার জানান, অতিরিক্ত নম্বর না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত খুবই ভাল। তবে এটি প্রস্তাব। বিভিন্ন বোর্ড এই ব্যবস্থা চালু করবে কি না, তা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিই।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অতিরিক্ত নম্বর বা গ্রেস মার্কস দেয় না বলে জানান সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। এনসিইআরটি-র পাঠ্যক্রম মেনে পর্ষদ আগেই পাঠ্যক্রম বদলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

NCERT Books
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE