Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আচমকা বজ্রমেঘ থেকে বসন্তে বৃষ্টি

আবহাওয়া দফতর বলছে, ছুটির রাতে বা এ দিন সকালে যে-ঝড় বইল, যে-সামান্য বৃষ্টি হল, তার কোনওটাই বসন্ত-প্রকৃতির সঙ্গে যায় না। বরং এগুলো গ্রীষ্মের বার্তাবহ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৬
Share: Save:

বসন্তোৎসব এখনও দিন তিনেক দূরে। কিন্তু খোদ বসন্তকে যেন আদৌ আমল না-দেওয়ারই মতলব এঁটেছে গ্রীষ্ম! সর্বোচ্চ আর সর্বনিম্ন, দু’টি তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে তো রয়েছেই। সেই সঙ্গে রবি-সোমবারের অকাল ঝড়বৃষ্টিতেও গ্রীষ্মেরই কারসাজি দেখছে হাওয়ামোরগ!

রবিবার রাতে কলকাতায় ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার একাংশে বৃষ্টিও হয়েছে। সোমবার সকালে সল্টলেক-সহ কিছু এলাকায় স্থানীয় ভাবে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। যদিও বেলা চড়তেই ঝকঝকে রোদ উঠেছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে। আবহাওয়া দফতর বলছে, ছুটির রাতে বা এ দিন সকালে যে-ঝড় বইল, যে-সামান্য বৃষ্টি হল, তার কোনওটাই বসন্ত-প্রকৃতির সঙ্গে যায় না। বরং এগুলো গ্রীষ্মের বার্তাবহ।

আবহবিজ্ঞানীরা জানান, রবিবার রাতে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে আচমকা তৈরি হওয়া বজ্রগর্ভ মেঘ থেকেই। ফাল্গুনে সচরাচর এমন ঘটনা ঘটে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বায়ুমণ্ডলের দুই স্তরে তাপমাত্রার ফারাকে এমন ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। কয়েক বছর আগে এমন বজ্রগর্ভ মেঘ থেকেই ২৭ ফেব্রুয়ারি মালদহে শিলাবৃষ্টি হয়েছিল বলে হাওয়া অফিস সূত্রের খবর।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, একটি ঘূর্ণাবর্ত ছিল ছত্তীসগঢ়ের উপরে। উপর দিকে সেটির সরে যাওয়ার কথা ছিল। তার ফলে ঝাড়খণ্ড এবং লাগোয়া দক্ষিণবঙ্গে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণাবর্তটি থিতু হয়ে যাওয়ায় উপকূলীয় বাংলায় ঝড় হয়েছে।

তবে প্রবীণ আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ ঘূর্ণাবর্তের পাশাপাশি এর জন্য বায়ুমণ্ডলের দুই স্তরের তাপমাত্রার ফারাককে দায়ী করছেন। তাঁদের ব্যাখ্যা, মধ্য ভারত থেকে পূর্ব ভারত পর্যন্ত বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তর দিয়ে ‘জেট স্ট্রিম’ বা প্রবল ঠান্ডা বায়ু বইছে জোরালো ভাবে। রবিবার বাংলা-ওডিশা উপকূল থেকে গরম জোলো হাওয়া ঢুকছিল দক্ষিণবঙ্গের। তাপমাত্রাও ছিল উপরের দিকে।

রেডার-চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানান, গরম ও ঠান্ডা বায়ুর মিশ্রণে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে বেশ কিছু বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। তা থেকেই বিভিন্ন এলাকায় জোরালো হাওয়া বয়েছে, বৃষ্টিও হয়েছে।

এমনটা কি আবার ঘটতে পারে?

‘‘ফেব্রুয়ারিতে অন্তত এমন ঘটনার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না,’’ বলেন গণেশবাবু। হাওয়া অফিসের খবর, ঘূর্ণাবর্তটি মিলিয়ে গিয়েছে। বঙ্গোপসাগরে যে-উচ্চচাপ বলয় জোলো হাওয়াকে ঠেলে দক্ষিণবঙ্গে ঢোকাচ্ছিল, দফারফা হয়ে গিয়েছে সেটিরও। তবে মার্চ যত এগিয়ে আসবে, ততই তাপমাত্রা বা়ড়তে থাকবে। ১ মার্চ, বৃহস্পতিবার, দোলের দিন কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি থাকবে। যাঁরা বোলপুর-শান্তিনিকেতনে যাচ্ছেন তাঁদেরও কমবেশি একই রকম গরম সইতে হবে বলে মনে করছেন আবহবিদেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Weather Update Rain Spring Depression
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE