Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

গুরুঙ্গ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের ধমক কল্যাণকে

গুরুঙ্গ মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। প্রশ্ন উঠেছে, এতে সুবিধা হল কার, গুরুঙ্গের না রাজ্য সরকারের? দুই শিবিরেরই দাবি, তাদের সুবিধা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৫:১৬
Share: Save:

কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর চটে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বিমল গুরুঙ্গ মামলার শুনানি জানুয়ারি পর্যন্ত পিছিয়ে দিল। বিচারপতিদের ক্ষোভের কারণ, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের হয়ে গলা চড়িয়ে সওয়াল করেছিলেন। বিচারপতি এ কে সিক্রি কল্যাণকে কার্যত সতর্ক করে বলেছেন, ‘‘আমরা আগেও বলেছি, এ বিষয়ে আমাদের অ্যালার্জি রয়েছে।’’ এর পর কল্যাণ দুঃখপ্রকাশ করে, নিজেকে মামলা থেকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বললেও বিচারপতিদের মন গলেনি।

ফলে, গুরুঙ্গ মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত। প্রশ্ন উঠেছে, এতে সুবিধা হল কার, গুরুঙ্গের না রাজ্য সরকারের? দুই শিবিরেরই দাবি, তাদের সুবিধা হয়েছে। গুরুঙ্গ শিবিরের দাবি, সুপ্রিম কোর্ট আগেই রাজ্যকে গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে দমনমূলক পদক্ষেপ করতে নিষেধ করেছে। আগামী এক মাস সেই নির্দেশই বহাল থাকবে। উল্টো দিকে, রাজ্যের দাবি, সুপ্রিম কোর্টে গুরুঙ্গের আইনজীবীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, আপাতত গুরুঙ্গ কোনও রকম বিক্ষোভ, প্রতিবাদ বা মিছিলে অংশ নেবেন না। প্রকাশ্যে বক্তৃতাও দেবেন না। ফলে আগামী এক মাস কার্যত তাঁকে গৃহবন্দি হয়েই থাকতে হবে।

শুনানির জন্য কলকাতা থেকে দুই পুলিশ অফিসার অজয় রাণাডে, সিদ্ধিনাথ গুপ্ত সুপ্রিম কোর্টে এসেছিলেন। গুরুঙ্গের মামলা আজই ফয়সালা হয়ে যাবে, এমনটাই আশা ছিল। তাঁদেরও খালি হাতে ফিরতে হয়।

এ দিন গুরুঙ্গ এবং বরুণ ভুজেলের স্ত্রী সবিতার পক্ষের আইনজীবী পি এস পাটওয়ালিয়া যুক্তি দেন, গুরুঙ্গ মামলা ও বরুণ ভুজেল মৃত্যুর ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে মামলা একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত। দু’টিতেই অভিযোগের তির পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কড়া দমননীতির বিরুদ্ধে। এর মধ্যেই রাজ্যের হয়ে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, বরুণ ভুজেলের মৃত্যু পুলিশের হেফাজতে বা জেলে হয়নি। পাটওয়ালিয়া বলেন, ‘‘আমার আইনজীবী বন্ধু চিৎকারটা বন্ধ করলে আমি কিছু বলতে পারি।’’ কল্যাণ তাঁর পাল্টা প্রতিবাদ করে বলেন, তিনি মোটেই চিৎকার করছেন না। ভুল ধরিয়ে দিচ্ছেন।

এতেই চটে গিয়ে বিচারপতি এ কে সিক্রি বলেন, আগেও বলা হয়েছে, এই সব বরদাস্ত করা হবে না। শুনানি জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে হবে। তখন কল্যাণ শুনানি চালানোর অনুরোধ করেন। বিচারপতি সিক্রি জানান, তাঁরা আর কোনও কথাই শুনবেন না। তাঁকে শান্ত করতে পরের মামলার শুনানি পর্যন্ত অপেক্ষা করেন কল্যাণ। তার পর ফের অনুরোধ করেন, ‘‘আমি নিজেকে মামলা থেকে সরিয়ে নিচ্ছি। শুনানি হোক।’’ কিন্তু বিচারপতি সিক্রি বলেন, ‘‘আপনার বিষয় শেষ হয়ে গিয়েছে। আপনি কি এ ভাবে মাঝখানে কথা বলতে পারেন!’’ লাভ হবে না বুঝে কথা বাড়াননি কল্যাণ।

এজলাসে গলা চড়ানো নিয়ে সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রও সরব হয়েছেন। রাম জন্মভূমি, দিল্লি বনাম কেন্দ্র সরকার মামলায় আইনজীবীদের গলা চড়ানোকে আসলে দক্ষতার অভাব বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। যার জেরে অপমানিত হয়ে আজ কোর্টে আর সওয়াল না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রবীণ আইনজীবী রাজীব ধবন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE