সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। ছবি: সংগৃহীত।
উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মাথা চাড়া দিয়েছিল যে বিতর্ক, তা-ই এ বার এল বাংলায়! সিপিএমের হাত ধরে!
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সরকারকে বিঁধতে গিয়ে বৃহস্পতিবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র ব্যবহার করলেন ‘হারামজাদা’ শব্দটি। ইউসিআরসি-র আয়োজনে এ দিন রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে উদ্বাস্তু সমাবেশে সূর্যবাবুর অভিযোগ, ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই মোদীর দলের অবস্থান উদ্বাস্তু সমস্যা সমাধানের পক্ষে নয়। সেই সূত্রেই তাঁর মন্তব্য, ‘‘প্রধানমন্ত্রী এর মধ্যে অনেক বড় বড় কথা বলেছিলেন। রামজাদা-হারামজাদা, কত কথা শুনেছিলাম। আমরা বলছি, যদি হারামজাদা কেউ হয়ে থাকে, তা হলে আপনি! আপনারা! যাঁরা দিল্লিতে সরকার চালাচ্ছেন।’’
প্রথমে বিরোধী দলনেতা বা তার পরে দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কুকথা কিম্বা কারও বিরুদ্ধে বিতর্কিত আক্রমণের অভিযোগ ওঠেনি সূর্যবাবুর বিরুদ্ধে। সে অর্থে তাঁর মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক এই প্রথম। সভার পরে তাঁকে প্রশ্ন করা হয় ‘হারামজাদা’ কথাটি বলা নিয়ে। সূর্যবাবু বলেন, ‘‘হ্যাঁ, আমি বলেছি। কিন্তু ওটা আমার কথা নয়। আমি ওঁদের উদ্ধৃত করে ওঁদেরকেই বলেছি।’’
সিপিএম রাজ্য সম্পাদকের মন্তব্যকে প্রায় লুফেই নিয়েছে বিজেপি! দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সাফ কথা, ‘‘আমরা যে রামজাদা, সেটা সারা দুনিয়া জানে। তা হলে হারামজাদা কারা? যারা আমাদের বিরোধিতা করছে, তারা! আসলে সূর্যবাবু একটি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির দলের রাজ্য সম্পাদক। তাই দলকে প্রাসঙ্গিক করতে এ সব বলছেন।’’
আরও পড়ুন: মানিককে অফিসেই ঢুকতে দিল না বিজেপি
গত লোকসভা ভোটের প্রচারে রাজ্যে এসে মোদী বলেছিলেন, যাঁরা ও’পার বাংলা থেকে এসেছেন, তাঁদের ব্যাগ গুছিয়ে রাখতে হবে। আবার সারদার মতো কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্তদের জেলে পাঠানোর আশ্বাসও দিয়েছিলেন। সেই দুই মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনেই মোদী সরকারকে তুলোধোনা করেছেন সূর্যবাবু। প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘দিল্লির হাত মাথায় না থাকলে যাঁরা এখন নবান্নে আছেন, তাঁদের তো জেলে থাকার কথা!’’ নানা কেন্দ্রীয় সংস্থাকে দিয়ে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের শুধু তলব করা হচ্ছে কিন্তু ধরপাকড় কিছুই হচ্ছে না, এই গোটা পর্বকে ‘টিভি সিরিয়াল’ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি। পাশাপাশিই তাঁর যুক্তি, তৃণমূলের জন্যই উল্টো দিকে বিজেপি-র বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে। রাজ্যে তৃণমূলকে আগে উৎখাত করতে না পারলে বিজেপি-কে রোখা যাবে না। তাই ঘাসফুলের ছাতা সরিয়ে পদ্মফুলের মোকাবিলা করার লক্ষ্যে শ্রমিক, কৃষক, কর্মচারী, উদ্বাস্তু, আদিবাসী— সব ধরনের আন্দোলনকে এক জায়গায় এনে বৃহত্তর লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন সূর্যবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy