বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।
তদন্তের সুযোগ পেলে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চুরি যাওয়া নোবেল পদক খুঁজে বের করার অঙ্গীকার করেছিলেন তিনি। সেই তাঁকেই হাতের নাগালে পেয়ে, সুযোগ হাতছাড়া করতে চায়নি বিশ্বভারতীর পড়ুয়া। নোবেল পদক কবে উদ্ধার হবে, সোমবার বোলপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জানতে চায় শিক্ষাসত্রের একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া অচ্যুৎ সাহা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সিবিআই আমাদের চিঠি দিয়ে বলেছিল, ওরা করতে (নোবেল উদ্ধার) পারবে না। তার পরে আর কোনও উত্তর দিচ্ছে না। আমরা চাই, সিবিআই কেসটা আমাদের দিক। আমরা অসাধ্য সাধন করব।”
২০০৪ সালের ২৫ মার্চ সকালে জানা যায়, রবীন্দ্রভবনের সংগ্রহশালা থেকে নোবেল পদক-সহ মোট ৫০টি মূল্যবান জিনিস চুরি গিয়েছে। প্রথম দফায় ২০০৭ সালের অগস্টে তদন্ত গুটিয়ে নেয় সিবিআই। পরে নতুন সূত্র মিলেছে জানিয়ে ২০০৮-এর সেপ্টেম্বরে আদালতে পুনর্তদন্তের আবেদন জানায় তারা। কিন্তু, তদন্তে আশানুরূপ অগ্রগতি হয়নি, এই যুক্তিতে ২০০৯-এ ফের সিবিআই তদন্ত বন্ধ রাখার আবেদন করে। ২০১০-এ আদালত সেই অনুমতি দেয়। নোবেল চুরির তদন্তে আর কোনও রকম নাড়াচাড়া হয়নি।
গত বছর অগস্টে বিশ্বভারতীর এক অনুষ্ঠানে এসে ‘সুযোগ পেলে, নোবেল পদক খুঁজে বের করার কথা’ ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও নবান্ন সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের কেস ডায়েরি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে দফায় দফায় রাজ্য চিঠি দিলেও সিবিআই খোলসা করে কিছু জানাচ্ছে না। সবিস্তার নথিপত্র হাতে না-আসায় তদন্তে সরকারি ভাবে এগোতেই পারেনি বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। সেই সূত্রেই এ দিন মমতা বলেন, ‘‘সিবিআই কোনও সহযোগিতা করছে না। নিয়ম হল, যখন কোনও একটি মামলার দায়িত্ব কোনও এজেন্সি নেয়, তখন আর একটা এজেন্সি তদন্ত করতে পারে না। আমার বারবার সিবিআইকে চিঠি করে রিমাইন্ডার দিয়েছি। তবু ওরা আমাদের কেসটা দেয়নি। নিজেদের মতো করে তদন্ত করছি। তবে, আইনত সিবিআইয়ের কাছ থেকে তদন্তের দায়িত্ব আমরা নিজেদের হাতে চাইছি।’’
সিবিআইয়ের এক কর্তা জানিয়েছেন, তাঁদের অনুমান ছিল— ভিন্ দেশে পাচার হয়ে গিয়েছে নোবেল পদক। পদকটি হয় গলিয়ে বা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তবে এগুলো অনুমানই। তেরো বছরে সিবিআই কার্যত কিছুই করতে পারেনি। মমতা সেই প্রসঙ্গই তুলে এ দিন ফের আশ্বাস দেন, রাজ্য সরকার তদন্ত চালালে সাফল্য আসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy