মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গ্রামের উন্নয়নকেই পাখির চোখ করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই লক্ষ্যে আগামী অর্থবর্ষের কাজ চলতি বছরেই শুরু করে দিতে চাইছেন তিনি। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ২৯ জানুয়ারি থেকে একযোগে রাজ্যের পাঁচ লক্ষেরও বেশি গৃহহীন মানুষের হাতে বাড়ি তৈরির অনুমতিপত্র তুলে দেবে রাজ্য সরকার। এর পাশাপাশি ২ ফেব্রুয়ারি নদিয়া থেকে শুরু হবে সারা রাজ্যে সাত হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরির কাজ।
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, এই দুই প্রকল্পের মধ্যে গ্রামের অতিদরিদ্র এবং গৃহহীন পাঁচ লক্ষেরও বেশি বাসিন্দার জন্য বাড়ি তৈরি হবে কেন্দ্রের আর্থিক সাহায্যে। তবে গ্রামে সাত হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির পুরো দায়িত্বই রাজ্য সরকার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে।
এমনিতে কেন্দ্রের সাহায্যে কিংবা নাবার্ডের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে গ্রামীণ রাস্তা তৈরির প্রকল্প রয়েছে কেন্দ্রের। ওই অর্থে প্রতি বছরই রাস্তা তৈরি হচ্ছে। এ বার তার বাইরে সাত হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তা তৈরি করতে চাইছে রাজ্য। নবান্নের এক কর্তার কথায়, ‘‘মে-জুন মাসে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে গ্রামে গ্রামে উন্নয়নের কাজকেই পাখির চোখ করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। সেই জন্যই এত রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আগামী অর্থবর্ষে কেন্দ্রের বরাদ্দ টাকায় গৃহহীনদের জন্য বাড়ি তৈরির প্রকল্পের কাজও এখনই শুরু করতে চায় সরকার।’’
রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন দফতরের এক কর্তা জানান, কেন্দ্রের অর্থসাহায্যে গ্রামীণ রাস্তা তো তৈরি হচ্ছেই। এই সাত হাজার কিলোমিটার রাস্তা তার বাইরে। ওই কর্তা বলেন, ‘‘কোথায় কত রাস্তা দরকার, মাসখানেক আগে সব জেলার কাছে তার তালিকা চাওয়া হয়েছিল। ওই তালিকার ভিত্তিতে ৭৬৭৭ কিলোমিটার রাস্তার তালিকা তৈরি হয়। তার মধ্যে সাত হাজার কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমোদন মিলেছে। ওই রাস্তা তৈরির জন্য সরকারের খরচ হবে প্রায় ১১৮৫ কোটি টাকা।’’ ওই সাত হাজার কিলোমিটারের পুরোটাই পাকা রাস্তা কিংবা সিমেন্ট বা কংক্রিটের হবে বলে জানান ওই কর্তা।
এক নবান্ন-কর্তা জানান, পরপর তিনটি অর্থবর্ষে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় প্রথম স্থানে ছিল রাজ্য। সেই জন্যই আগামী অর্থবর্ষে রাজ্যের বাড়ির কোটা তিন লক্ষ ২১ হাজার থেকে বেড়ে পাঁচ লক্ষ ৮৬ হাজার হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি বাড়ি তৈরির জন্য খরচ হবে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তার ৬০% দেবে কেন্দ্র, বাকি ৪০% দেবে রাজ্য সরকার। ওই কর্তা জানান, পাঁচ লক্ষ ৮৬ হাজার গৃহহীন মানুষের জন্য বাড়ি তৈরিতে খরচ হবে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে প্রায় ৪২ হাজার কোটি টাকা দেবে কেন্দ্র, বাকিটা দেবে রাজ্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy