Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হলেন শিক্ষক মারে অভিযুক্ত গৌরব!

ভাষা দিবস উপলক্ষে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি আয়োজিত বিতর্কসভায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন গৌরব।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কসভায় গৌরব (চিহ্নিত)।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতর্কসভায় গৌরব (চিহ্নিত)।

মধুমিতা দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৪
Share: Save:

শিক্ষক ভাস্কর দাসকে চড় দেখিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘‘এমন মার মারব না!’’ শুধু হুমকি নয়, বেশ কয়েকটা চড় কষিয়েও ছিলেন বলে অভিযোগ। শিক্ষক নিগ্রহে অভিযুক্ত সেই গৌরব দত্ত মুস্তাফি এখন বাংলাদেশে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি!

ভাষা দিবস উপলক্ষে বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি আয়োজিত বিতর্কসভায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন গৌরব। শিক্ষামন্ত্রী যেখানে চাইছেন, তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, এমনকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তাঁকে শো-কজ করেছে, সেখানে এই ‘পুরস্কার’? বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, ঘটনার বিন্দুবিসর্গ তাঁরা জানেন না।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ভাস্করবাবুকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা গৌরব চড়থাপ্পড় মেরেছেন বলে অভিযোগ। এখন বাংলাদেশে এই বিতর্কসভার খবর প্রকাশিত হওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, শো-কজ করার পরেও কর্তৃপক্ষ কী করে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান। আর যদি তাঁরা সরাসরি না-ও পাঠান, তাহলে কর্তৃপক্ষের অজান্তে তিনি বিদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেন কী করে? ওই ঘটনার পরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, গৌরবের সাজা এমনই দৃষ্টান্তমূলক হওয়া উচিত, যাতে অন্যেরা বিপথে চালিত না হয়। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় পাঠালে, বিশ্ববিদ্যালয় সে বিষয়ে বলবে।’’

বিতর্কিত: ভাস্কর দাসকে গৌরবের শাসানির ছবি।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর, ১৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট গৌরবকে শো-কজের সিদ্ধান্ত নিলেও সেই নোটিস তাঁকে এখনও পাঠানো হয়নি। কারণ, শো-কজ নোটিসের বয়ান সিন্ডিকেটের আগামী বৈঠকে পাশ করিয়ে তার পর গৌরবের কাছে পাঠানো হবে। উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, শো-কজের সিদ্ধান্তের পরে গৌরবের বিষয়ে কিছু জানেন না তিনি। বলেন, ‘‘ওই ছাত্র কোথায় গিয়েছে, তা নিয়ে কিছু জানি না।’’ রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘ওই ছাত্র কোথায় গিয়েছে, কেন গিয়েছে জানি না। খোঁজ নিচ্ছি।’’

আরও পড়ুন: নিরাপত্তায় বড়সড় গলদ! ভাষণরত মমতার পা ধরতে গেলেন যুবতী

গৌরবকে ফোন এবং মেসেজ করেও যোগাযোগ করা যায়নি। ফোন বেজে গিয়েছে। ওই বিতর্কসভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করেছেন আইন বিভাগের ছাত্র তথা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রান্তিক চক্রবর্তী, কেমিক্যাল টেকনোলজি বিভাগের ছাত্র তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি নেতা দীপ পোদ্দারও। প্রান্তিক এ দিন বলেন, ‘‘ছাত্র সংসদের সভাপতি রুমানা আখতার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে এই বিতর্কসভায় যাওয়ার জন্য আমায় বেশ কিছুদিন আগে বলেন। রাজি হয়ে যাই।’’ তবে রুমানা রাত পর্যন্ত ফোন ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর পাওয়া যায়নি।

—নিজস্ব চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE