Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

ক্লাসে ছাত্ররা, শিক্ষক দোকানে

‘নিখোঁজ’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের খুঁজতে গিয়ে এক অদ্ভুত তথ্য পেয়েছেন শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রণব ভট্টাচার্য। জানতে পেরেছেন, কেউ গিয়েছেন মিষ্টির দোকান সামলাতে, তো কেউ বসেছেন গিয়ে মুদির দোকানে। কেউ যদি নিজের হার্ডওয়্যার সামগ্রীর ব্যবসা দেখতে যান, তো কেউ প্রোমোটারি করতে গিয়েছেন। কারও ওষুধের দোকান, কারও বইয়ের। কোনও শিক্ষিকা আবার শাড়ির ব্যবসা করেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৭ ১২:১০
Share: Save:

ক্লাসে ছাত্ররা বসে আছে। কিন্তু শিক্ষক নেই। কোথায় গিয়েছেন তাঁরা?

‘নিখোঁজ’ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের খুঁজতে গিয়ে এক অদ্ভুত তথ্য পেয়েছেন শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান প্রণব ভট্টাচার্য। জানতে পেরেছেন, কেউ গিয়েছেন মিষ্টির দোকান সামলাতে, তো কেউ বসেছেন গিয়ে মুদির দোকানে। কেউ যদি নিজের হার্ডওয়্যার সামগ্রীর ব্যবসা দেখতে যান, তো কেউ প্রোমোটারি করতে গিয়েছেন। কারও ওষুধের দোকান, কারও বইয়ের। কোনও শিক্ষিকা আবার শাড়ির ব্যবসা করেন।
কেউ আবার এ সব কিছুতে নেই। গিয়েছেন মাছ ধরতে। এ সব সামলাতে গিয়ে তাঁদের আর সব দিন স্কুলে যাওয়া হয় না! ফলে ক্লাসে এসে বসে থাকে খুদে পড়ুয়ারা।

এ বার ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের তালিকা তৈরি করার কাজে নেমেছে শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। সংসদের চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘কিছু শিক্ষক সময় মতো স্কুলে আসেন না বা ক্লাসের সময় অনেক ক্ষেত্রে থাকছেন না। অনেকে ছুটির আগেই চলে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ পেয়েছি। খোঁজ করতে গিয়ে জানতে পারি, তাঁরা শিক্ষকতার পাশাপাশি অন্য পেশার সঙ্গেও যুক্ত। এটা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। ওই শিক্ষকদের চিহ্নিত করতে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।’’

সে জন্য এর মধ্যেই বিভিন্ন স্কুলে আচমকা পরিদর্শন শুরু হয়েছে। হঠাৎ স্কুলে ঢুকে দেখা হচ্ছে, কারা তখন ক্লাস নিচ্ছেন। কারাই বা অনুপস্থিত। মোবাইল ফোনে ভিডিও কলেও ডাকা হচ্ছে অনেক শিক্ষককে। সংসদের বক্তব্য, স্কুলের সময়ে স্কুলে না থাকলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই ‘ফাঁকিবাজি’র প্রবণতা সব থেকে বেশি শাসকদলের শিক্ষকদেরই, বলছেন তৃণমূলের কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তিনি।
তাঁর দাবি, এই সব শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নিতে হবে।
পশ্চিবমঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দার্জিলিং জেলার সভাপতি বিভাস চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘শিক্ষা এবং শিক্ষকদের স্বার্থে যে কোনও পদক্ষেপকে আমরা সব সমই সাধুবাদ জানাব।’’

অন্য দিকে, বাম মনোভাবাপন্ন নিখিল বঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির দার্জিলিং জেলা সম্পাদক নবচন্দ্র দেবের বক্তব্য, ‘‘এঁদের ধরতে যাতে নিয়মিত পরিদর্শন শুরু হয়, সে জন্য আমরাই প্রণববাবুকে বলেছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri শিলিগুড়ি Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE