Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

নতুন পাঠ্যক্রমের মূল্যায়নে প্রশিক্ষণ

নতুন মানে তা-ও বছর পাঁচেকের পুরনো। ২০১৩ সাল থেকে স্কুল স্তরে নতুন পাঠ্যক্রমে পঠনপাঠন চলছে। সেটা পড়ুয়াদের উপরে কেমন প্রভাব ফেলেছে, দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে তার বিশ্লেষণের উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুপ্রিয় তরফদার
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৫২
Share: Save:

পাশ-ফেল কবে ফিরবে, সেটা পরের কথা। আপাতত রাজ্যের স্কুল স্তরে নতুন পাঠ্যক্রম মেনে পঠনপাঠন কেমন চলছে, তার বিশ্লেষণী মূল্যায়ন শুরু করছে সিলেবাস কমিটি।

নতুন মানে তা-ও বছর পাঁচেকের পুরনো। ২০১৩ সাল থেকে স্কুল স্তরে নতুন পাঠ্যক্রমে পঠনপাঠন চলছে। সেটা পড়ুয়াদের উপরে কেমন প্রভাব ফেলেছে, দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে তার বিশ্লেষণের উদ্যোগ শুরু হয়েছে। বিকাশ ভবনের খবর, বিশ্লেষণী মূল্যায়ন করবেন শিক্ষকেরাই। সেই জন্য চলতি মাসের শেষ সপ্তাহেই সব জেলায় তাঁদের বিশেষ প্রশিক্ষণ শুরু করে দিচ্ছে সিলেবাস কমিটি।

স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, পড়ুয়ারা যাতে বিষয়ের গভীরে গিয়ে উত্তর দিতে পারে, সেই উদ্দেশ্যেই প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম বদলানো হয়েছে। পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তার ফল পাওয়া সম্ভব নয় বুঝেই প্রায় পাঁচ বছর সময় নেওয়া হল। এ বার ২০১৩ থেকে ’১৭ পর্যন্ত পরিবর্তিত পাঠ্যক্রমের প্রভাব বিশ্লেষণের কাজ শুরু হচ্ছে। প্রতিটি জেলায় কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকদের বেছে নেওয়া হয়েছে। মূল্যায়ন কী ভাবে করতে হবে, সেই বিষয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণে শিক্ষকদের জোর দেওয়া হবে সর্বত্র যেন ‘পিকক মডেল’ অনুসরণ করা হয়।

কী এই ময়ূর-মডেল?

‘পিকক’ মডেল আসলে পাঁচটি সূচক বা মাপকাঠি। মূল্যায়ন হবে তার ভিত্তিতেই। সেগুলি হল: ১) পড়ুয়াদের অংশগ্রহণ, ২) প্রশ্ন করা ও অনুসন্ধানে আগ্রহ, ৩) ব্যাখ্যা ও প্রয়োগের সামর্থ্য, ৪) সহানুভূতি ও সহযোগিতা এবং ৫) নান্দনিকতা ও সৃষ্টিশীলতার প্রকাশ। স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তারা জানান, পাশ-ফেল না-থাকলেও বিভিন্ন শ্রেণিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়ই। সেই সব উত্তরপত্র ছাড়াও মৌখিক প্রশ্নের ভিত্তিতে মূল্যায়নের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে শিক্ষকদের। মূল্যায়নে বেশি থাকবে ছোট প্রশ্ন। এখন পড়ুয়াদের উত্তরপত্র দেখে এবং তাদের মুখোমুখি প্রশ্ন করে বুঝতে হবে, কোন বিষয়ে কে কতটা পারদর্শী হয়েছে, আদৌ দক্ষ হয়ে উঠতে পেরেছে কি না।

পড়ুয়াদের পারফরম্যান্স বা অগ্রগতি কেমন, পাঁচটি সূচকে তা যাচাই করার জন্যই শিক্ষক-প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত হচ্ছে বলে জানান স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা। নিজে থেকে কোনও বিষয়ে অংশগ্রহণ করার ইচ্ছে পড়ুয়াদের মধ্যে তৈরি হয়েছে বা হচ্ছে কি না, বিশেষ করে সেটাই খতিয়ে দেখা হবে। ছাত্রছাত্রীদের উত্তরপত্রে আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির প্রমাণ না-মিললে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার দিকে বাড়তি নজর দিতে বলা হবে শিক্ষকদের।

সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানাচ্ছেন, ‘কন্টিনিউয়াস কমপ্রিহেনসিভ ইভ্যালুয়েশন’ (সিসিই) বা নিরবচ্ছিন্ন সুসংহত মূল্যায়ন ঠিকমতো হচ্ছে কি না, দেখার মূল বিষয় সেটাই। শিক্ষাকে আরও আধুনিক করে তোলার জন্যই এই উদ্যোগ। ‘‘পড়ুয়াদের মধ্যে নতুন পাঠ্যক্রমের প্রভাব পড়ছে কি না, সেই বিষয়ে নজর দেওয়ার জন্যই এই প্রশিক্ষণ,’’ বলছেন অভীকবাবু। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের মতে, নয়া পাঠ্যক্রমের যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে কি না, সেটা দেখার কেউ নেই। তাই প্রশিক্ষণ দ্রুত শেষ করা জরুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE