Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাছ চাষে লগ্নি টানতে মউ

মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত ৪৪টি কোম্পানির সঙ্গে ইতিমধ্যেই মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রস্তাবিত লগ্নির পরিমাণ ১২৮৫ কোটি টাকা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সোমনাথ চক্রবর্তী
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০১
Share: Save:

শিল্পে বিনিয়োগের আশায় দেশ-বিদেশে সফর করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রসনাতৃপ্তিতেও লগ্নি টানতে ঝাঁপাচ্ছে তাঁর সরকার। মাছে-ভাতে বাঙালি। সেই মাছের যাতে কোনও ঘাটতি না-হয়, তার জন্য বেসরকারি লগ্নি টানতে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে ‘মউ’ বা সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করছে তৃণমূল সরকার।

মাছ চাষের সঙ্গে যুক্ত ৪৪টি কোম্পানির সঙ্গে ইতিমধ্যেই মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রস্তাবিত লগ্নির পরিমাণ ১২৮৫ কোটি টাকা। ২০টি সংস্থা উৎপাদন শুরু করে দিয়েছে। তাদের লগ্নির পরিমাণ প্রায় ৩৪০ কোটি টাকা। অন্য কোম্পানিগুলির বিনিয়োগের কাজও এগোচ্ছে বলে দাবি মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের।

মৎস্য দফতর সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী চান, মাছে স্বনির্ভর হোক বাংলা। অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের উপরে নির্ভর না-করে বাংলার গ্রামে গ্রামে মাছ চাষ বাড়ুক। সেই দিকে লক্ষ রেখে গত তিন বছরে মাছ চাষের উৎপাদন বাড়াতে ৪৪টি মউ সই করেছে মৎস্য দফতর। তার মধ্যে ২০১৫ সালে ১২টি, ২০১৬ সালে ১৪টি এবং ২০১৭ সালে ১৮টি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে মৎস্য দফতর।

কী ধরনের চুক্তি হচ্ছে?

মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও সংস্থা মাছের খাদ্য তৈরি করছে, কেউ চিংড়ি চাষ করছে, কেউ বা করছে ভেটকি চাষ। বড় বড় রুই, কাতলা, মৃগেল মাছ উৎপাদনের জন্য ছ’টি জেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেখানেই বড় মাছের চাষ হবে। এর জন্য এক হাজার মৎস্যজীবীকে মাছ চাষের আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সরকার থেকে দেওয়া হচ্ছে মাছের খাবার, মাছের চারা।

সরকারের সঙ্গে চুক্তি করে বেসরকারি সংস্থা কী সুবিধা পাচ্ছে?

মৎস্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সরকার বিদ্যুৎ-সংযোগের ক্ষেত্রে ওই সব সংস্থাকে সুবিধা দিচ্ছে, বিদ্যুতের বিলে ছাড় দিচ্ছে। এ ছাড়াও আছে স্টাম্প ডিউটিতে ছাড়, জমির চরিত্র পরিবর্তনে কর ছাড়। লগ্নির খরচ বাবদও ছাড় দেওয়া হচ্ছে। জমি নিয়ে সমস্যায় পড়লে সরকার সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে সব রকম সাহায্য করছে।

এত সব চুক্তির পরেও অন্য রাজ্য থেকে রুই-কাতলা-মৃগেলের মতো বড় মাছ আমদানি বন্ধ হচ্ছে না কেন? অন্যান্য রাজ্যে ঢালাও বড় মাছ উৎপাদনই বা হচ্ছে কী ভাবে?

চন্দ্রনাথবাবুর বক্তব্য, এই রাজ্যের মানুষ বেশি বড় মাছ খান না। এখানে ছোট মাছের চাহিদা বেশি। কোনও উৎসবে বা অনুষ্ঠানে বড় মাছের চাহিদা বাড়ে। অন্ধ্রে বড় মাছ চাষের সুযোগ-সুবিধা বেশি। তাই সেখানে দেদার বড় মাছ চাষ করা হচ্ছে।

মৎস্য দফতরের এক কর্তা জানান, পশ্চিমবঙ্গের মাছ বাংলাদেশ, বিহার ও ছত্তীসগঢ়ে যায়। একই ভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তীসগঢ় থেকে মাছ আসে বাংলায়। বড় রুই আসে অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে আর কাতলা আসে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ় থেকে। চাহিদা মেটাতে রাজ্যে সব ধরনের বড় মাছ চাষেরই ব্যবস্থা হচ্ছে।

‘‘কোচবিহার, নদিয়া, মালদহ, বর্ধমান, হুগলি ও দক্ষিণ দিনাজপুরে সাড়ে তিন হাজার জলা আছে। সেখানে বড় রুই-কাতলা-মৃগেল চাষ করা হবে। পূর্ব মেদিনীপুরে বড় মাছ চাষ শুরু হয়েছে,’’ বলেন মৎস্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE