Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পাল্টা মিছিলে শক্তি জাহির

শুক্রবার কলকাতা, বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে প্রায় ৫০০টি জায়গায় অবরোধ-বিক্ষোভ করে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়িয়েছিল বিজেপি। তবে খাস কলকাতার রাস্তাতেও বিজেপির বিক্ষোভে খুব বেশি কর্মী-সমর্থকের ভিড় ছিল না।

বিক্ষোভ: প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়িয়ে মিছিল তৃণমূলের। শনিবার গড়িয়াহাটে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

বিক্ষোভ: প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়িয়ে মিছিল তৃণমূলের। শনিবার গড়িয়াহাটে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫২
Share: Save:

পাহাড়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নিগৃহীত হওয়ার প্রতিবাদে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ দেখিয়েছিল গেরুয়া শিবির। শনিবার রাজ্য জুড়ে পাল্টা বিক্ষোভ-মিছিলে বিজেপিকে কার্যত উড়িয়ে দিল তৃণমূল।

শুক্রবার কলকাতা, বিভিন্ন জেলা মিলিয়ে প্রায় ৫০০টি জায়গায় অবরোধ-বিক্ষোভ করে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুল পুড়িয়েছিল বিজেপি। তবে খাস কলকাতার রাস্তাতেও বিজেপির বিক্ষোভে খুব বেশি কর্মী-সমর্থকের ভিড় ছিল না। বিজেপির ওই ‘আস্ফালন’এর জবাব দিতে এ দিন দুপুরে বেলা ১টা থেকে দু’টো পর্যন্ত পথে নেমে জনজীবন কার্যত স্তব্ধ করে দিল শাসক দল। কেন্দ্রীয় ভাবে কোনও মিছিল না করে কলকাতার হাজরা, গড়িয়াহাট, বেহালা, খিদিরপুর, যাদবপুর, শ্যামবাজার, ধর্মতলা, গিরিশ পার্কের মতো বিভিন্ন জায়গায় মিছিলে হাঁটেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কুশপুতুলও পোড়ানো হয়।

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন বেহালায় ১৪ নম্বর বাসস্ট্যান্ডের কাছে মিছিলে পা মেলান। বিক্ষোভ কর্মসূচির পরে তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ে প্রত্যাখ্যাত বিমল গুরুঙ্গকে যে ভাবে বিজেপি আবার মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে, তা মানুষ ভাল ভাবে নেয়নি। ফলে বিজেপির বিরুদ্ধে আমাদের বিক্ষোভে মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সামিল হয়েছে।’’ শাসক দলের ‘শক্তি’ দেখে অবশ্য দিলীপবাবু বলেছেন, ‘‘ওরা (তৃণমূল) যা করেছে, সবটাই গায়ের জোরে।’’

বিজেপির বিরুদ্ধে এই কর্মসূচিকে তৃণমূল বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যবহার করেছে। তাই দিলীপ ঘোষ-কেন্দ্রিক না রেখে তাদের আক্রমণের লক্ষ্য ছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। এমনকী, তৃণমূলের যে সব নেতা-মন্ত্রী নারদ-কাণ্ড সহ বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত, তাঁদেরও প্রায় সকলকেই এ দিন বিভিন্ন মিছিলের প্রথম সারিতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা য়ায়। তবে কলকাতা বা জেলার কোথাও বিক্ষোভ মিছিলে দেখা যায়নি দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী, যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ছিলেন না দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ও।

বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু এ দিন বিকেলে ছিলেন রায়গঞ্জে দলের কর্মীসভায়। তখন রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড় থেকে তৃণমূলের মিছিল শুরু হয়। সেই মিছিলে ‘দিলীপ গো ব্যাক, দিলীপের কালো হাত ভেঙে দাও’ বলে স্লোগান ওঠায় উত্তেজনা ছড়ায়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই পুলিশ দু’পক্ষকে নিরস্ত করে। এ দিকে, তাদের রাজ্য সভাপতির উপর হামলায় বিজেপির পশ্চিম বর্ধমানের জেলা সভাপতি তৃণমূল কর্মীদের আঙুল ভেঙে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। এই হুমকির জবাবে এ দিন আসানসোলে জিটি রোড লাগোয়া বিজেপি কার্যালয়ে আচমকাই কয়েক জন তৃণমূলকর্মী হরলিক্স ও ডাব নিয়ে হাজির হন।

তখন অবশ্য সেখানে বিজেপির কেউ ছিলেন না। হরলিক্স, ডাব ফিরিয়ে আনেন তৃণমূল কর্মীরা। আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, ‘‘বিজেপি এতটা সুস্থ-সবল নয় যে আমাদের আঙুল ভাঙবে। তাই ওদের সবল করে তুলতে হরলিক্স, ডাব পাঠালাম।’’ এ দিকে এদিনই জলপাইগুড়িতে তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বিজেপিকে হুমকি দেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করলে কানের গোড়ায় দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bjp TMC protest rally Dilip Ghosh Darjeeling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE