বীরপাড়ায় অরূপ বিশ্বাস। ছবি: নারায়ণ দে
খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডুয়ার্সের চা বলয়ে সভা করেছিলেন ২০১৬ সালে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামণ একাধিকবার চা বলয়ে ঘুরে ৭টি বন্ধ চা বাগান অধিগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ৩ বছর পরে সে কথা মনে করিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ‘মিথ্যে প্রতিশ্রুতি’র অভিযোগ এনে চা বাগানে পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নেমে পড়ল তৃণমূল। শনিবার বীরপাড়ায় জুবিলি ময়দানে ওই সভায় ছিলেন দলের আলিপুরদুয়ারের পর্যবেক্ষক তথা পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং জেলার সব স্তরের শতাধিক নেতা-নেত্রী।
তাঁরা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে ডুয়ার্সে ৪টি বন্ধ বাগান খোলা হয়েছে, দু’মাসের মধ্যেই আরও দু’টো বন্ধ বাগান খোলার ব্যবস্থা করবে রাজ্য।
ঘটনা হল, প্রধানমন্ত্রী যে এলাকায় সভা করেছিলেন, সেই বীরপাড়া-মাদারিহাট কেন্দ্রে সে যাত্রায় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা সমর্থিত বিজেপি প্রার্থী মনোজ টিগ্গা জয়ী হন। কিন্তু, কেন্দ্র এ যাবৎ একটিও বন্ধ চা বাগান অধিগ্রহণ না করায় বিজেপি বিধায়ক ঘরে-বাইরে নিয়মিত নানা সমালোচনায় পড়ছেন। তা সত্ত্বেও বিজেপির একাদিক কেন্দ্রীয় নেতা গত তিন বছরে বারেবারেই ডুয়ার্সের চা বলয়ে নানা সময়ে গিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে বাক্স থাকে কি না, সেই বাক্সে কী থাকে—সেই রহস্য নিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে প্রশ্ন ছুড়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই চা বলয়ে প্রভাব আরও শক্ত করতে বিজেপি নেতারা যে ছক কষে আসরে নেমেছেন, তা রুখতে ভোট ঘোষণার আগেই ময়দানে ঘাম ঝরাতে হাজির তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা।
ডুয়ার্সের ৪টি বিধানসভা মাদারিহাট, কালচিনি, নাগরাকাটা, মালবাজার, ধূপগুড়ির অর্থনীতি মূলত চা-বাগান কেন্দ্রীক। রাজ্যে ৬ বছর ক্ষমতাসীন হলেও এখনও তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠন বাগানগুলিতে সর্বত্র কর্তৃত্ব নিতে পারেনি। বেশ কিছু বাগানে মোর্চা ও বিজেপির প্রভাব রয়েছে। তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও রয়েছে বলে দলী সূত্রেই জানা গিয়েছে।
তাই এদিন শুরু থেকেই বিজেপিকে আক্রমণ করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, আদিবাসী কল্যাণ মন্ত্রী জেমস কুজুর, বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী, জেলা সভাপতি মোহন শর্মা সহ সকলেই। অরূপ বলেন, ‘‘বিজেপির এখানকার বিধায়ককে প্রশ্ন, আপনার নেতা নরেন্দ্র মোদী একটাও বাগান অধিগ্রহণ করলেন না। আর এলেন না। চুপিসারে হাসিমারা দিয়ে মেঘালয়ে যাতায়াত করছেন। চা বলয়ের সাদাসিধে শ্রমিকদের কেন ঠকাচ্ছেন, সেটা জবাব দিন।’’ মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা যে কিছুটা হলেও বিব্রত তা তাঁর জবাবেই স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘আমার এলাকার কথাই শুধু কেন! যে সব এলাকায় তৃণমূল-বিধায়ক সাংসদরা রয়েছেন সেখানে বাগান কেন বন্ধ?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy