মুকুল রায় যদি দল ছাড়তে চান, তা হলে এখনই ছাড়ুন, পুজো শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার দরকার নেই। মন্তব্য পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। —ফাইল চিত্র।
মুকুল রায়কে ছ’বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করে দিল তৃণমূল। সোমবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এ কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বেশ কিছু দিন ধরে মুকুল রায় দলের মধ্যে থেকেই দলকে দুর্বল করার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন পার্থ বাবু। ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারীর সংস্থার চাপের মুখে নতি স্বীকার করে মুকুল রায় দলের ক্ষতি করার চেষ্টা করছিলেন’’, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই মন্তব্যও এ দিন করেছেন তৃণমূল মহাসচিব। মুকুলের কার্যকলাপের উপর বেশ কিছু দিন নজর রাখার পর তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি মুকুল রায় সম্পর্কে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল এবং তাঁর শাস্তির সুপারিশ করেছিল বলে পার্থ বাবু এ দিন জানিয়েছেন। সেই সুপারিশ মতোই মুকুল রায়কে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল বলে জানিয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: তৃণমূল ছাড়ছেন, জানিয়ে দিলেন মুকুল
রবিবার মুকুল রায় মধ্য কলকাতার একটি পুজো উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। তৃণমূল থেকে সাসপেন্ড হওয়া আর এক সাংসদ কুণাল ঘোষের পাড়ার পুজো সেটি। দুই রাজ্যসভা সদস্য একসঙ্গেই পুজো উদ্বোধন করেন। তার পর এক মঞ্চে বেশ কিছুক্ষণ সময়ও কাটান। সেই মঞ্চ থেকে তৃণমূল নেতৃত্বকে রবিবার সন্ধ্যায় কটাক্ষ করেছিলেন মুকুল। পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ‘বাচ্চা ছেলে’ বলে খোঁচাও দিয়েছিলেন। তার পরই তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়, আজ, সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে মুকুল রায় সম্পর্কে দলের অবস্থান স্পষ্ট করা হবে। কিন্তু তৃণমূলের সেই সাংবাদিক বৈঠক হওয়ার আগেই সোমবার সকালে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন মুকুল রায়। তিনি জানান, তিনি তৃণমূলের কর্ম সমিতি থেকে তিনি পদত্যাগ করছেন। পুজোর পরে সাংসদ পদ থেকে এবং তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকেও তিনি ইস্তফা দেবেন। কেন দল ছাড়ছেন, পুজোর পরেই তা বিশদে জানাবেন বলেও মুকুল রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বিলালের মনের কথায় মোদীর বিড়ম্বনা
দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মুকুল রায়ের দিকে তীব্র শ্লেষ ছুড়ে দিয়ে পার্থ বাবু বলেন, ‘‘দল ছেড়ে চলে যেতে চান বলছেন, অথচ পুজোর বাহানা দিয়ে যাচ্ছেন না, এমনটা কেন? যেতে চাইলে এখনই যান। তিনি চলে গেলে কী হবে? এখানে সব পুজো বন্ধ হয়ে যাবে নাকি?’’ এর পরেই পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমি আগেই জানিয়েছিলাম, দল মুকুল রায়ের উপর নজর রাখছে। এ বার তিনি নিজেই বললেন যে তিনি দল ছাড়বেন। সকলেই জানেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে যথেষ্ট সুযোগ দিয়েছিলেন। সুব্রত বক্সি এবং আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি নিজে গিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে এনেছিলাম। নিষ্ক্রিয় থেকে সক্রিয় করার চেষ্টা করেছিলাম।’’ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ, মুকুল রায় দলের জন্য সক্রিয় হননি। তিনি দলে থেকে দলকে দুর্বল করতে সক্রিয় হয়েছিলেন। তাই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy