Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

টাকা পেতে জমির তথ্য দিতে হবে সব স্কুলকে

স্কুলভবন যদি নিজস্ব জমিতে গড়ে না-ওঠে, তা-ও জানাতে হবে। স্কুলবাড়ির কোনও অংশে যদি কোনও মেরামতি অথবা পুনর্গঠনের প্রয়োজন হয়, বিভিন্ন কোণ থেকে তোলা সেই অংশের দু’তিনটি ছবি পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৪:৪১
Share: Save:

স্কুল তো চলছে, কিন্তু সংশ্লিষ্ট জমিটা কি স্কুলের নিজস্ব? মিউটেশন বা নামজারির শংসাপত্র আছে?

এখন থেকে রাজ্যের সরকার পোষিত এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলগুলির পুনর্গঠন এবং মেরামতির জন্য অর্থসাহায্য চাইলে এই সমস্ত প্রশ্নের জবাব-সহ স্কুলের সবিস্তার তথ্য সরকারকে জানাতে হবে।

স্কুলশিক্ষা দফতরের সাম্প্রতিক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, অর্থসাহায্য পেতে হলে সম্পত্তির হিসেব, যে-জমির উপরে স্কুলবাড়ি গড়ে তোলা হয়েছে, তার পরিমাণ-সহ দলিল, মৌজার তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্য সব তথ্য স্কুলশিক্ষা দফতরকে জানাতে হবে। শহরাঞ্চল হলে দিতে হবে মিউটেশন সার্টিফিকেট, পুরকরের প্রমাণপত্রও। স্কুলভবন যদি নিজস্ব জমিতে গড়ে না-ওঠে, তা-ও জানাতে হবে। স্কুলবাড়ির কোনও অংশে যদি কোনও মেরামতি অথবা পুনর্গঠনের প্রয়োজন হয়, বিভিন্ন কোণ থেকে তোলা সেই অংশের দু’তিনটি ছবি পাঠানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

দফতরের এক কর্তা জানান, আগে এই সব তথ্যের প্রয়োজন হতো না। স্কুল-কর্তৃপক্ষ ‘ক্যাপিটাল গ্র্যান্ট’-এর আবেদন করলে প্রধান শিক্ষকের মতামতের ভিত্তিতে টাকা মঞ্জুর করা হতো। কিন্তু এ বার কঠোর হচ্ছে স্কুলশিক্ষা দফতর। ওই শিক্ষাকর্তার ব্যাখ্যা, অনেক সময়েই দেখা গিয়েছে, স্কুলগুলির নিজস্ব জমি নেই। ভাড়া বাড়িতে স্কুল চলছে। ফলে সরকারি অর্থসাহায্যে যে-মেরামত বা পুনর্গঠন হয়, তা আদতে স্কুলের নিজস্ব সম্পত্তিতে হয় না। এটা
আর চলতে দিতে চাইছে না সরকার। সরকারি টাকার যাতে যথাযথ ব্যবহার হয়, সে-দিকে কড়া নজর দেওয়া হচ্ছে।

গত অর্থবর্ষে স্কুলশিক্ষা দফতরের বেশ বড় অঙ্কের টাকা খরচ হয়নি বলে দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে। এক আধিকারিক জানান, অর্থের পুরোটা যাতে যথাযথ ভাবে খরচ হয়, সেই বিষয়টিকে এ বার বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। নিজের জমি নেই, এমন স্কুলকে তাই অর্থ দেওয়া হবে না বলে ঠিক হয়েছে। অর্থ দেওয়ার আগে গোটা বিষয়টিই ভাল ভাবে যাচাই করা হবে।

এই উদ্যোগের সমালোচনায় নেমেছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘সরকার স্কুলশিক্ষা খাতে টাকা খরচ করতে পারছে না। অথচ স্কুলগুলি টাকা চাইলে নানা রকম নিয়ম দেখাচ্ছে।’’ এবিটিএ-র সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের মতে, এগুলো আসলে অকারণ জটিলতা সৃষ্টির চেষ্টা। ‘‘পঠনপাঠনের বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। তার বাইরের বিষয়গুলিই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে,’’ বলেন কৃষ্ণপ্রসন্নবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School মিউটেশন Mutation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE