আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তিনি আবার কামারহাটি থেকে লড়তে চান বলে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন কয়েক দিন আগেই। শুক্রবার সারদা মামলায় সেই মদন মিত্রের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিল আদালত।
তাঁর জামিনের বিরোধিতা করে এ দিন আদালতে সিবিআইয়ের আইনজীবী কে রাঘবচারিলু অভিযোগ করেন, ছাড়া পেয়ে গেলে এই তৃণমূল নেতা শুধু সাক্ষীদেরই নয়, বিচার ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করতে পারেন। সেই প্রভাব খাটানোর বিপুল ক্ষমতা যে তাঁর আছে, তার প্রামাণ্য কিছু নথিও এ দিন তারা আদালতে পেশ করেছে বলে জানায় সিবিআই। আর সেই ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বেই প্রাক্তন ক্রীড়া ও পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের জামিন রুখে দিল তদন্তকারী সংস্থা।
গত ৩১ অক্টোবরে আলিপুরের অবকাশকালীন ভারপ্রাপ্ত জেলা বিচারকের এজলাসে মদনবাবু জামিন পেয়েছিলেন। সেই সময় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। বস্তুত, সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় গ্রেফতারের পর থেকে ওই জামিনের আগে পর্যন্ত অধিকাংশ সময়টাই তিনি কাটিয়েছেন হাসপাতালে। কিন্তু জামিন পাওয়ার এক দিনের মধ্যেই হাসপাতাল থেকে তিনি বাড়ি চলে যান। তার পরেই সিবিআই হাইকোর্টে জামিন বাতিলের আবেদন করে।
গত ১৯ নভেম্বর কলকাতা হাইকোর্টে মদনবাবুর সেই জামিন নাকচ করে দিয়ে বিচারপতি নিশীথা মাত্রে ও বিচারপতি তাপস মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ লিখিত নির্দেশে নিম্ন আদালতের বিচারকের পক্ষপাতের দিকে আঙুল তুলেছিল। এ দিন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা সেই নির্দেশের প্রতিলিপি বিচারকের কাছে জমা দেন। অসুস্থতার কথা বলে দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরে জামিন পেতেই বাড়ি চলে যাওয়ার কথাও এ দিন আদালতে উল্লেখ করেছে সিবিআই।
শুক্রবার আলিপুরের জেলা মু্খ্য বিচারক সঞ্জীব কাঞ্জিলাল সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ‘‘মদন মিত্রের জামিন হয়ে গেলে সিবিআইয়ের মাথায় কি স্বর্গ ভেঙে পড়বে? মদনবাবু ৪৪০ দিন জেল হেফাজতে রয়েছেন। আর তদন্তের কী প্রয়োজন?’’
জবাবে রাঘবচারিলু বলেন, ‘‘মদনবাবু জামিন পেলে নরক ভেঙে পড়বে স্বর্গের মাথায়। এখনও তিনি জনপ্রতিনিধি। সাক্ষীদের প্রভাবিত করবেন। এমনকী বিচার ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করতে পারেন।’’
জেল-হাজতে থাকাকালীন মদনবাবুকে বেশ কয়েক বার জেরা করেছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা। এ দিন মদনবাবুর আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় ও পার্থসারথি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জেরায় নতুন কোনও তথ্য উঠে আসেনি।’’ জেল হেফাজতে থাকাকালীন মদনবাবুকে জেরা করে পাওয়া তথ্য এ দিন সিবিআইয়ের তরফে বিচারকের কাছে পেশ করা হয়। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই মদনবাবু কী ভাবে বিচার ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করতে পারেন, তা বিচারককে জানানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে পর বিচারক জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy