হিন্দুজা এবং গৌতম আদানিরা পশ্চিমবঙ্গে লগ্নি করতে চাইলেও তাঁদের দেওয়া বেশ কিছু শর্ত নিয়ে আপত্তি আছে রাজ্য সরকারের।
গৌতম আদানি ঝাড়খণ্ড সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে বিদ্যুৎ প্রকল্প চালু করছেন। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গেও একই ভাবে বিদ্যুৎ প্রকল্প করার ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। আদানির পরিকল্পনাটি হল, ঝাড়খণ্ডের প্রকল্প থেকে বিদ্যুৎ বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের পরিকাঠামোকে ব্যবহার করা। সে ব্যাপারে রাজ্য সরকার আদানিকে জমি দেবে এবং অন্যান্য পরিকাঠামোগত সাহায্য জোগাবে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ঢাকায় গিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করে ভারত থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ পাঠানোর ক্ষেত্রে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন। বিদ্যুৎ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনাও চালাচ্ছে দিল্লি। কিন্তু নিজের গ্রিড থেকে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিলে, তা থেকে পশ্চিমবঙ্গের আয় হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গ কেন ঝাড়খণ্ডে তৈরি আদানির বিদ্যুৎ বাংলাদেশে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিজেদের গ্রিড ব্যবহারের ছাড়পত্র দিয়ে রাজ্যের ক্ষতি করবে, থাকছে সেই প্রশ্নও।
আদানি এ রাজ্যে মূলত সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পে লগ্নি করতে আগ্রহ জানিয়েছেন। এই অবস্থায় ঝাড়খণ্ডের বিদ্যুৎ পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরাসরি না-ও বলে দিচ্ছে না তড়িঘড়ি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
তবে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পের জমি নিয়ে রাজ্য সরকারের বক্তব্য স্পষ্ট। তা হল, আদানি যদি স্বাধীন ভাবে এখানে সৌরশক্তির প্রকল্প চালু করতে চান, তিনি তা করতেই পারেন। কিন্তু তার জন্য তাঁকেই সরাসরি কৃষকদের থেকে জমি কিনতে হবে। রাজ্য সরকার তাঁকে সরাসরি জমি দেবে না।
যথেষ্ট জটিলতা রয়েছে হিন্দুজা গোষ্ঠীর সংস্থা অশোক লেল্যান্ডকে কারখানার জন্য জমি দেওয়া ও তাদের বাস কেনার বিষয়টি নিয়েও। ১,৫০০টি বাস কেনার পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের। অশোক লেল্যান্ড রাজ্যকে বলছে, তারা পশ্চিমবঙ্গেই বাস কারখানার জন্য জমি চায়। সেখান থেকে বাস তৈরি করে তারা তা রাজ্য সরকারকে বিক্রি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার জমি দিলে তার বদলে বাস দেওয়ার বোঝাপড়া হতে পারে।
কিন্তু রাজ্য সরকারের স্পষ্ট বক্তব্য, টেন্ডার ছাড়া রাজ্য কখনওই অশোক লেল্যান্ডের থেকে বাস কেনার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। কাজেই তারা যদি বাস বা গাড়ি তৈরি করার কথা ভাবে, তা হলে শুধু রাজ্য সরকারকে বিক্রি করার জন্য নয়, সার্বিক উন্নয়নের কথা ভেবেই করুক।
তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা হিন্দুজা ও আদানিদের সঙ্গে ব্যবসা করতে আগ্রহী হলেও তাদের শর্তগুলির প্রতিটি বিষয় এখন খতিয়ে দেখছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy